সোমবার, ১৮ই জুন, ২০১৮ ইং ৪ঠা আষাঢ়, ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

আকায়েদ মুক্তিযোদ্ধার ছেলে

news-image

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে বাস টার্মিনালে ‘হামলা চেষ্টাকারী’ আকায়েদ উল্লাহর বাবা সানা উল্লাহ একজন মুক্তিযোদ্ধা।

সোমবার ম্যানহাটনে ওই হামলার পর বিশ্বজুড়ে বাংলাদেশি আকায়েদের নাম আলোচনায় উঠে আসার পর অনুসন্ধান চালিয়ে তার ও পরিবারের বিষয়ে তথ্য পাওয়া যায়।

২৭ বছর বয়সী আকায়েদ নিজের সঙ্গে রাখা বিস্ফোরকের বিস্ফোরণে আহত হয়ে এখন যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশি হেফাজতে চিকিৎসাধীন। নিউ ইয়র্ক পুলিশের ভাষ্য, বাংলাদেশি এই যুবক আত্মঘাতী হামলার চেষ্টা চালিয়েছিলেন।

নিউ ইয়র্ক পুলিশ নাম প্রকাশের পরপরই বাংলাদেশের পুলিশ প্রধান এ কে এম শহীদুল হক জানিয়েছিলেন, আকায়েদ চট্টগ্রামের বাসিন্দা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আকাইদের বাবা সানা উল্লাহর বাড়ি চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নে। তবে চার দশক আগে ঢাকার হাজারিবাগে ঠাঁই নেওয়ার পর বাড়িতে তার কোনো ঘর নেই।

চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) রেজাউল মাসুদ বলেন, সানা উল্লাহ একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন।

চট্টগ্রাম জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শাহাবুদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “সন্দ্বীপের মুছাপুরের একজন সানা উল্লাহর নাম মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় আছে। কিন্তু ওই এলাকার লোকজন দীর্ঘদিন তাকে দেখেনি এবং বিস্তারিত জানেন না।”

নিউ ইয়র্কে হামলায় আকায়েদের নাম আসার পর মঙ্গলবার তার পৈতৃক ভিটায় পুলিশ ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের পাশাপাশি সাংবাদিকরাও খোঁজ নিতে যান।

আকায়েদের চাচাত ভাই এমদাদ উল্লাহ বলেন, মুছাপুর ইউনিয়নের বোতান তালুকদার বাড়িই তাদের বাড়ি। একই উপজেলার গাছুয়ায় আকায়েদের মামার বাড়ি।

তিনি জানান, মুক্তিযুদ্ধের পরপর সানা উল্লাহ সন্দ্বীপ ছেড়ে ঢাকার হাজারীবাগে চলে যান। সেখানে একটি মুদির দোকান চালাতেন তিনি।

এমদাদ জানান, আকায়েদ তিন ভাই, দুই বোনের মধ্যে দ্বিতীয়। ছোট বেলায় তার বড় ভাই আহসান উল্লাহকে তার মামারা যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যায়। প্রায় এক দশক আগে আহসান ভাই আকায়েদসহ অন্য সহোদর ও মা-বাবাকে নিয়ে যায়।

সানা উল্লাহ যুক্তরাষ্ট্রেই কয়েক বছর আগে মারা যান।

আরও : বাংলাদেশের উপকূলে আসতে থাকা জ্বলন্ত জাহাজ আটকে দিলো ভারত

মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল খায়ের নাদিম বলেন, “তাদের (সানা উল্লাহ) পরিবারের কেউই এখানে থাকে না।” সন্দ্বীপে আকায়েদদের সম্পত্তি থাকলেও কোনো ঘর নেই বলে চাচাত ভাই এমদাদ জানান।

তিনি বলেন, “দুই বছর আগে আকায়েদ একবার দেশে এসেছিল। গাছুয়ায় মামা বাড়ি গিয়েছিল, সেখান থেকে মুছাপুর এসে পৈত্রিক ভিটেও দেখে যায়। তবে তখন তাকে দেখে উগ্রপন্থার সঙ্গে যুক্ত থাকার কোনো লক্ষণ বোঝা যায়নি।”

তখন দেশে আসার পর ঢাকায় বিয়ে করেন আকায়েদ। তার স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস ছয় মাস বয়সী সন্তানকে নিয়ে

হাজারীবাগের কাছেই মনেশ্বর রোডে একটি বাসায় বাবা-মার সঙ্গে থাকেন।

ওই বাসা থেকে জান্নাত ও তার বাবা-মাকে মঙ্গলবার পুলিশ ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করেছিল।

সর্বশেষ দুই মাস আগে আকায়েদ বাংলাদেশে এলেও চট্টগ্রাম আসেননি বলে তার সন্দ্বীপের স্বজনরা জানান।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রেজাউল মাসুদ বলেন, ২০০৯ সালে আমেরিকা প্রবাসী হবার পর দুই দফায় আকায়েদ বাংলাদেশে এসেছিল।

দেশে থাকা অবস্থায় কোনো ধরনের উগ্রপন্থা বা রাজনীতিতে আকায়েদের জড়িত থাকার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি বলে জানান তিনি।

পুলিশ কর্মকর্তা রেজাউল মাসুদ বলেন, “সে নিয়মিত নামাজ পড়ত এবং ওমরাহ হজও করেছে।”

আকায়েদ আইএস দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে বাস টার্মিনালে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিলেন বলে যুক্তরাষ্ট্রের পুলিশ কর্মকর্তাদের দাবি।

নিউ ইয়র্ক পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার পর আকায়েদ প্রথমে ট্যাক্সি চালাতেন; পরে একটি আবাসন নির্মাতা কোম্পানির বৈদ্যুতিক মিস্ত্রির চাকরি নেন।

ব্রুকলিনের অ্যাপার্টমেন্টে বসে ইন্টারনেট ঘেঁটে তিনি বোমা বানানো শেখেন এবং ইলেক্ট্রিশিয়ানের কাজের সূত্রে কর্মস্থলে বসেই বোমা তৈরি করেন বলে তদন্তকারীদের ধারণা।

আকায়েদের উগ্রপন্থিদের সঙ্গে যুক্ত থাকার বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে বলে জানান বাংলাদেশের পুলিশ কর্মকর্তা রেজাউল। বিডি-নিউজ

Print Friendly, PDF & Email

এ জাতীয় আরও খবর

পিকআপ উল্টে নীলফামারীতে নিহত ১২

নীলফামারীতে সড়ক দুর্ঘটনা কেড়ে নিল ৮ তরুণের প্রাণ

পালিয়ে যাওয়া ‘মাদক সম্রাজ্ঞীর’ গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার

ভাতিজা করল ‘ইভটিজিং’, গণধোলাইয়ে নিহত চাচা!

এবার নারী ‘মাদক বিক্রেতার’ গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার

বিদ্যুৎ অফিসে গিয়েও হাতপাখার বাতাস খেলেন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী