ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কেন্দ্র দখল,জাল ভোটে নির্বাচন শেষ
---
আমিরজাদা চৌধুরী : ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও কসবার ১৯ ইউনিয়নে বোমা মেরে কেন্দ্র দখল ও জাল ভোট দেয়ার মধ্যে দিয়ে আজ নির্বাচন শেষ হয়েছে । কয়েকটি ইউনিয়নে সংঘর্ষও হয়েছে। এতে আহত হয় শতাধিক লোক। বাড়িঘরে হামলা,ভাঙ্গচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগে ৪ টি ইউনিয়নের বিএনপি প্রার্থী ও একটি ইউনিয়নের আওয়ামীলীগ বিদ্রোহী প্রার্থী নির্বাচন বর্জন করেন। কসবার কোন ইউনিয়নে চেয়ারম্যানের ব্যালেট হাতে দেয়া হয়নি ভোটারদের। কোন কোন ইউনিয়নে রাতেই ব্যালেটে সীল মেরে বাকস ভরে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সদরেও নৌকা প্রতীকে সীল মারা ব্যালেট দেয়া হয় ভোটারদের হাতে। সাদেকপুর ইউনিয়নের বিরামপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সকাল সোয়া ৯ টার দিকে পরপর ৭ টি বোমার বিস্ফোরন ঘটানো হয়। এতে আতঙ্কিত হয়ে ভোটাররা কেন্দ্র ছেড়ে পালান। রামরাইল ইউনিয়নের মোহাম্মদপুর ক্যাডেট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে বোমা হামলা চালিয়ে কেন্দ্র দখল করা হয়। এসময় সংঘর্ষ হলে ১৫ জন আহত হয়। ইউনিয়নের বিজেশ্বর এ মোনেম উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে দুই সদস্য প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে আহত হয় ১০ জন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে বিজিবি গুলি ছুড়লে রাসেল নামে এক সদস্য প্রার্থী আহত হন। এসময় আওয়ামীলীগ প্রার্থী শাহাদাত খান তার সমর্থকদের নিয়ে এসে কেন্দ্রটি দখল করে নেন। এই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মশিউর রহমান সেলিম দুপুরে নির্বাচন বর্জন করেন। তিনি অভিযোগ করেন সকাল ১০ টার মধ্যে ইউনিয়নের ৯ টি কেন্দ্রের মধ্যে ৭ টি কেন্দ্র দখল হয়ে যায়। জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট মাহবুবুল আলম খোকন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে কেন্দ্রগুলো দখল করেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। তালশহর পূর্ব ইউনিয়নের মোহনপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রটি দখল করতে দু-দফা বোমা হামলা চালানো হয়।
সুহিলপুর ইউনিয়নের জিল্লুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয় ও সীতানগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র দখল করা নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সকাল ১০টায় সীতানগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রটি দখল করে আওয়ামীলীগ প্রার্থীর সমর্থকরা জাল ভোট দিতে শুরু করলে প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থীর লোকজন বাধা দেয়। এনিয়ে দু-পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষ চলাকালে বেশ কয়েকটি বাড়ীতে হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। সংঘর্ষে আহত হয় ১০ জন। জিল্লুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে আওয়ামীলীগ সমর্থিত ইউপি সদস্য প্রার্থী বাবুল মিয়ার এক আত্বীয় সরকারী কর্মচারী শামীম মিয়া জাল ভোট দিতে গেলে প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থীর লোকজন বাধা দেয়। এনিয়ে দু-পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে আহত হয় ৩০ জন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে পুলিশ অর্ধশত রাউন্ড রাবার বুলেট ছুড়ে। এই ঘটনায় প্রায় দু-ঘন্টা এই কেন্দ্রের ভোটগ্রহন বন্ধ থাকে। সদর উপজেলার বিলকেন্দুয়াই গ্রামে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়। কেন্দ্রটি দখলে দিনভর চেষ্টা চালায় আওয়ামীলীগের সমর্থকরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন মাছিহাতা ইউনিয়নের চাপুইর কেন্দ্রে দু-মেম্বার প্রার্থী কুদ্দুস ও শরীফ মিয়ার সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। মজলিশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্র জাল ভোট প্রদান করাকে কেন্দ্র করে ৫নং ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) প্রার্থী সুরু মিয়ার সমর্থকদের সঙ্গে আরেক সদস্য প্রার্থী মনির মিয়ার সমর্থকদের সংঘর্ষ বাধে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হন। পরে পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।