কালার ব্লাইন্ড মানেই কি সবকিছু সাদাকালো দেখা
---
কালার ব্লাইন্ড শব্দটার সাথে কেউ কেউ হয়তো পরিচিত। তবে যারা কালার ব্লাইন্ড নয় তাদের অনেকেরই ধারণা কালার ব্লাইন্ড ব্যক্তিরা বুঝি সবকিছু সাদাকালো দেখে। কিন্তু এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল।
যারা স্বাভাবিক আলোক অবস্থার অধীনে বিশেষ কিছু রঙের পার্থক্য বুঝতে পারে না তাদেরকে কালার ব্লাইন্ড বলা হয়। কালার ব্লাইন্ডদের জন্য লাল, সবুজ, অথবা নীল রং দেখা কষ্টকর অথবা এসব রঙের সংমিশ্রন আছে এমন রং তারা দেখতে পায় না। তবে তাদের কাছে পৃথিবী সাদাকালো নয়।
একদম পুরোপুরি কালার ব্লাইন্ডনেস একটি বিরল ঘটনা। কালার ব্লাইন্ড রোগের চিকিৎসা নেই। তবে কালার ব্লাইন্ড ব্যক্তি যদি রং নিয়ে কাজ করতে চান সেক্ষেত্রে রং চেনার কিছু পদ্ধতি শিখিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। কালার ব্লাইন্ড ব্যক্তির হতাশ হওয়ার কিছু নেই। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সহ অনেক বিখ্যাত ব্যক্তিই কালার ব্লাইন্ড ছিলেন।
এই সমস্যার ব্যখ্যা অনেক জটিল এবং বিশদ। মানুষের চোখের ভিতরে রেটিনায় দুই ধরনের আলোকসংবেদী কোষ (ঢ়যড়ঃড়ৎবপবঢ়ঃড়ৎ) আছে। এরা হল – রডকোষ (ৎড়ফ) এবং কোন্কোষ (পড়হব)। কোন্কোষ থাকার জন্য আমরা বিভিন্ন রং চিনতে পারি এবং তাদের মধ্যে পার্থক্য করতে পারি। অর্থাৎ আমাদের রঙিন বস্তু দর্শনে কোন্কোষগুলো দায়ী। রডকোষগুলো শুধু দর্শনের অনুভূতি জাগায়, কিন্তু কোন ধরনের রং দেখতে/চিনতে সাহায্য করে না।
কোন তিন ধরণের। আর এই তিন ধরণের কোন লাল (জ), সবুজ (এ) ও নীল (ই) -এই তিনটি রং সনাক্ত করতে পারে। চোখের রেটিনায় এই তিন প্রকারের কোন্-এর যেকোন একটি, দুটি বা সবগুলির অনুপস্থিতি অথবা ত্রুটিই হলো বর্ণান্ধতার মূল কারণ। কোনো ব্যক্তির সবগুলো কোন্ই যদি ত্রুটিযুক্ত হয়, তাহলে তিনি সব রংকেই ধুসর দেখবেন। বর্ণান্ধতা এমনই মারাত্মক হয় যে, কোনো ব্যক্তি লাল রঙের রক্ত দেখলেও তা যে রক্ত, তা সনাক্ত করতে পারে না।
অনেকেই মনে করেন সবুজ একটি মৌলিক রং কিন্তু সবুজ রং মৌলিক রং নয়। মৌলিত দিনটি রং হলো লাল, নীল ও হলুদ।
বর্ণান্ধতা যদি কৈশরেই নির্ণয় করা যায়, তাহলে অনেক ক্ষেত্রে তা সুস্থ করা সম্ভব হয়। বর্ণান্ধতা জন্মগত কিংবা অর্জিত হতে পারে। জন্মগত বর্ণান্ধতার কারণে লাল ও সবুজ রঙয়েই বেশি সমস্যা হয়, আর অর্জিত বর্ণান্ধতার কারণে নীল ও হলুদ রঙ সনাক্ত করতে সমস্যা হয়। যেসব কারণে মানুষ বর্ণান্ধ হতে পারে সেগুলো হল:-
বংশগত / জন্মগত: (জেনেটিক) মা-বাবা বর্ণান্ধ হলে সন্তানেরাও বর্ণান্ধ হতে পারে। তবে এক্ষেত্রে লক্ষণীয় বিষয়গুলো হল:-
নারীর চেয়ে পুরুষে বর্ণান্ধতা বেশি পরিলক্ষিত হয়
বর্ণান্ধ মায়ের ছেলেসন্তান বর্ণান্ধ হতে পারে।
এছাড়া মা-বাবার উভয়েই বর্ণান্ধ হলে, তাদের মেয়েসন্তানের বর্ণান্ধ হওয়ার আশঙ্কা থাকে।