g জয়ন্তীকার লাইনচ্যুতি দূর্ঘটনা : নাকি নাশকতা | AmaderBrahmanbaria.Com – আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া

সোমবার, ১৪ই আগস্ট, ২০১৭ ইং ৩০শে শ্রাবণ, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

জয়ন্তীকার লাইনচ্যুতি দূর্ঘটনা : নাকি নাশকতা

AmaderBrahmanbaria.COM
জানুয়ারি ৩০, ২০১৫

---

Brahmanbaria train Accident Pic (12)আমিরজাদা চৌধুরী : দূর্বল রেল ট্র্যাকের দোষে নয় আন্ত:নগর জয়ন্তীকার লাইনচুৎতিতে নাশকতার গন্ধ পেয়েছে রেলওয়ের তদন্ত কমিটি। ৪ সদস্য বিশিষ্ট এই কমিটি প্রাথমিকভাবে  দূর্ঘটনার জন্যে নাশকতাকেই দায়ী করছে। রেল ট্র্যাকের দূরাবস্থা নজর এড়িয়ে গেছে এই কমিটির। তবে স্থানীয় লোকজন বলছেন রেলপথের দূরাবস্থা চোখে পড়ার মতো। স্লিপার ঠিক নেই। স্লিপারের সঙ্গে আটকে থাকার ক্লীপ নেই। পাথর নেই। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দূর্ঘটনার এই স্থানটি ছাড়াও অনেকাংশেই রেলপথের দূরাবস্থা চোখে পড়ার মতো। গত ২৫ শে জানুয়ারী ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পাঘাচংয়ে সিলেট থেকে ঢাকাগামী জয়ন্তীকা এক্সপ্রেসের ৬ টি কোচ লাইনচুৎত হয়। এতে প্রায় সাড়ে ৯ ঘন্টা ঢাকার সঙ্গে সিলেট,চট্টগ্রাম ও নোয়াখালীর রেল যোগাযোগ বন্ধ থাকে। ক্ষতিগ্রস্থ হয় রেল ট্র্যাকের। বুধবার পাঘাচংয়ে গিয়ে দেখা গেছে রেল ট্র্যাকের মেরামত কাজ চলছে। দূর্ঘটনায় সিগন্যাল অকেজো হয়ে পড়ায় ঐদিন থেকেই বন্ধ রয়েছে পাঘাচং রেলষ্টেশন। এই ষ্টেশন মাষ্টার নূরন্নবী এই তথ্য  জানান। কাজ তদারকিতে থাকা বিভাগীয় প্রকৌশলী ও তদন্ত কমিটির একজন সদস্য মো. আরমান হোসেন বলেন, আমরা মূল কাজ শেষ করেছি। বাকা লাইন সোজা করা হয়েছে। তবে এই স্থানটিতে ট্রেন এখন ‘ডেড স্টপ’ ব্যবস্থায় অর্থাৎ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে অতিক্রম করছে। তিনি আরো জানান, দুর্ঘটনার কারন পুরোপুরি এখনো নিশ্চিত হতে পারিনি আমরা। প্রাথমিকভাবে নাশকতা বলে মনে হচ্ছে। ফিশ-বল্টু খুলে রাখার প্রমান তারা পেয়েছেন। ঘটনার পরপরই তদন্ত কমিটির সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। কাজ তদারকিতে সেখানে তার সঙ্গে ছিলেন আখাউড়া রেলজংশনের পথ ও পূর্ত বিভাগের সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী কাজী মোস্তাফিজুর রহমান। জয়ন্তীকা লাইনচুৎতির পরই ঘটনাস্থলে ছুটে যাওয়া মানুষ প্রত্যক্ষ করেন পচা স্লীপার। যেগুলো ধুমড়ে-মুচড়ে গেছে।  স্লীপারের সঙ্গে ক্লীপ নেই। ট্র্যাক ছিটকে গেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রেলট্র্যাক নির্মান কাজে নিয়োজিত এক শ্রমিক বলেন স্লীপারের কাঠগুলো পচে গেছে। এগুলো সাপোর্ট রাখতে পারছেনা। তাছাড়া স্লীপারের সঙ্গে আটকানোর ক্লীপও নেই। পাঘাচং গ্রামের মো: আশিকুর রহমান ভূইয়া বলেন- লাইনের দূরাবস্থা  শুধু পাঘাচং নয় এখান থেকে হেটে যদি ভাতশালা পর্যন্ত  যান স্থানে স্থানে চোখে পড়বে একই চিত্র। পাঘাচং গ্রামের আরো অনেক মানুষ আঙ্গুল দিয়ে তদন্ত কমিটিকে লাইনের দূরাবস্থা দেখিয়ে দেন। এ গ্রামের সফিক মিয়া বলেন রেললাইন বসানোর পর আজ পর্যন্ত আর ঠিক করা হয়নি। তিনি বলেন নাশকতা হবে কিভাবে। ঐদিন দূর্ঘটনাটি ঘটেছে দুপুরে। এরআগে আরো ১০/১২ টি ট্রেন এই পথ দিয়ে চলাচল করেছে। B.Baria Train Pic-4সেগুলোর কিছু হলোনা,জয়ন্তীকা পড়ে গেল। আসলে রেলের লোকজন নিজেদের দায়িত্বহীনতা আড়াল করতে এখন নাশকতা খুজে পেয়েছে। তবে রেলওয়ের বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আরমান হোসেন বলেছেন রেললাইনের ত্রুটি থাকতে পারে। কিন্তু নিরাপত্তার বিষয়টি আমরা নিশ্চিত হয়েই ট্রেন চালাই। এই এলাকার লাইনের অবস্থা দেখার জন্যে দু-জন কীম্যান আছে। তাদের কাজই হচ্ছে লাইনের অবস্থা দেখা। তারা কেন বিষয়টি আইডেন্টিফাই করতে পারলোনা  আমরা সেটি দেখছি। ৪ সদস্য বিশিষ্ট এই তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা নাজমুল ইসলামকে। এই কমিটিকে ৩ দিনের সময় দেয়া হয়েছিলো প্রথমে। এখন আরো ৩ দিন সময় বাড়ানো হবে বলে তদন্ত কমিটি সুত্র জানিয়েছে। ২০১৪ সালে পূর্বাঞ্চল রেলপথে গড়ে প্রতিমাসেই একটি করে দূর্ঘটনা ঘটেছে। সব মিলিয়ে ঐ বছর দূর্ঘটনা ঘটেছে ১৮টিরও বেশী। যার বেশীরভাগ লাইনচুৎত হয়ে। আখাউড়ার গঙ্গাসাগরে একই স্থানে তিনবার ট্রেন লাইনচুৎত হয়েছে ঐবছর।

 

 

এ জাতীয় আরও খবর