বৃহস্পতিবার, ৩০শে নভেম্বর, ২০১৭ ইং ১৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

আগুন লেগেছে বনে, ফাগুন এসেছে মনে

AmaderBrahmanbaria.COM
ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৪

---

fagunবইছে উত্তরী হাওয়া। আগুনরঙা ফুল শাখে শাখে। শুকনো পাতার মর মর ধ্বনি ধু-ধু প্রান্তরে। কচি পাতার আড়ালে মুখ লুকিয়ে ডাকছে কোকিল। উদাস দুপুরে বিরহকাতর প্রিয় মানুষের অপেক্ষায়…।

আবার ধরায় ফাগুনের আগুন ঝরা বসন্ত। চারিদিকে নতুনের আগমনী বার্তা। পাতাঝরা গাছগুলোয় উঁকি দিচ্ছে সবুজ কচি পাতা। তারও আছে মিষ্টি গন্ধ। রক্ত আগুনঝরা শিমুল, পলাশে মেটে শালিকের আনাগোনা। ভ্রমর-ভ্রমরা ছুটছে ল্যান্টানা, ভেন্না, কলমি, আমরুল কিংম্বা লেবু ফুলের পিছে। শীতের আড়ষ্টতা ভেঙে সবাই মত্ত নতুন জীবনের খোঁজে। সে জীবন আনন্দের, সে জীবন বিরহের, সে জীবন তারুণ্যদীপ্ত।

বসন্তের প্রথম থেকেই গাছে-শাখে শোনা যায় কোকিলের কাতর কণ্ঠ। সুরেলা সে গানে সঙ্গীকে পাওয়ার আকুল আবেদন। উদাস দুপুরে বৃক্ষরাজি মাঝে শুকনো পাতার মর মর শব্দঘেরা প্রকৃতি ঝড় তোলে আবেগী নর-নারীর মনে। মনে জাগে প্রেম, বাসা বাঁধে পাওয়া না পাওয়ার অসীম দ্বন্দ্ব।

চঞ্চলা মন হয় আনমনা। আর ফুলবনে গিয়ে হয়তো কবির মতো বলে উঠতে ইচ্ছে করে ‘ফুলের বনে যার পাশে যাই তারেই লাগে ভালো…’।  আমের মুকুলের মৌ মৌ গন্ধ, পাতায় পাতায় নব আলোর নাচন ঘরে আটকে রাখতে পারে না তরুণ-তরুণীদের। বাসন্তী রং ধারণ করে বেরিয়ে পড়ে প্রিয় মানুষের সান্নিধ্যে সব বাধা পেরিয়ে।

নগরে বসন্ত ধরা দেয় ভিন্নরূপে। বসন্ত যেন আসে উৎসবের রংকে নতুন করে রাঙাতে। বাসন্তী পোশাকে রেঙে ওঠে এদিন বইমেলা। রমনা, চারুকলা, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, বাংলা একাডেমি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা সাজে নবসাজে। পোশাক প্রকৃতির আলো ফুটে ওঠে তরুণ-তরুণীদের চোখে-মুখে। চারিদিকে চলে সুন্দরের জয়গান।

 

ফাগুনেরই রক্তরঙা পলাশ-শিমুল-কৃষ্ণচূড়ায় পাকিস্তানি বাহিনী ফেলেছিল স্বার্থান্বেষী থাবা। কেড়ে নিতে চেয়েছিল মুখের ভাষা। কিন্তু নিজেদের রক্ত ঝরিয়ে অধিকার আদায় করে বাঙালি সেদিন ফুটিয়েছিল প্রিয় রক্তফুল, প্রিয় ভাষা। শোককে শান্তির বার্তা শুনিয়ে ফাগুনের আহ্বানে প্রতি ফাগুনে রাজপথে পড়ে শান্ত পদচিহ্ন।

এ জাতীয় আরও খবর

এ জাতীয় আরও খবর