সোমবার, ৪ঠা ডিসেম্বর, ২০১৭ ইং ২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

প্রাথমিকের শিক্ষিকারা এবার স্বামীর সঙ্গেই থাকতে পারবেন

AmaderBrahmanbaria.COM
নভেম্বর ২৯, ২০১৭

---

নিজস্ব প্রতিবেদক : সরকারি প্রাথমিক স্কুল শিক্ষক বদলি নীতিমালায় আসছে বড় পরিবর্তন।এ পরিবর্তনের ফলে স্কুল শিক্ষিকারা স্বামীর কর্মস্থল এলাকা বা এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় বদলি (পদ শূন্য থাকা সাপেক্ষে) হতে পারবেন অনায়াশেই। আগে স্বামীর নিজ জেলায় শিক্ষিকারা বদলি হতে পারলেও স্বামীর কর্মস্থল এলাকায় বদলিতে অনেক জলিটতা পোহাতে হতো, যা ছিল অনেকটা দুঃসাধ্য সাধনের কাজ।এই পরিবর্তন হলে মানবিক কারণসহ কয়েকটি ক্যাটাগরিতে সারাবছর বদলির আবেদন করা যাবে। ফলে স্বামীর সঙ্গেই থাকতে পারবেন প্রাথমিক স্কুল শিক্ষিকারা।

এ বিষয়ে ইতোমধ্যে সংশোধিত বদলির নীতিমালার খসড়া তৈরি করা হয়েছে। ডিসেম্বরের মধ্যেই এটি চূড়ান্ত করা হবে বলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।

এক বছর পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত বদলির আবেদন করা যাবে না। তবে বিশেষ কারণে যে কোনো সময়ে মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতরের (ডিপিই) মহাপরিচালক, প্রাথমিক জেলা শিক্ষা অফিসার ও বিভাগীয় উপ-পরিচালকের সুপারিশে সুবিধামতো স্থানে বদলি হওয়া যাবে।

সূত্র জানায়, সরকারি প্রাক-প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক বদলি নীতিমালা নিয়ে নানা জটিলতা দেখা দিয়েছে। ফলে স্কুল শিক্ষকদের যৌক্তিক কারণে বা প্রয়োজনে বদলি করা সম্ভব হয় না। চাকরি পাওয়ার পর বিয়ে হলে স্বামী-স্ত্রীকে আলাদা থাকতে হচ্ছে। শুধু তাই নয়, বিধবা বা তালাকপ্রাপ্ত বা বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে সুবিধামতো স্থানে বদলি হওয়া যায় না। প্রতিবন্ধী শিক্ষকরা নিজ বাড়ি থেকে অনেক দূরের স্কুলে যোগদান করতে হচ্ছে। এসব বিষয় আমলে নিয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় বদলি নীতিমালা সংশোধনের কাজ শুরু করে।

খসড়া নীতিমালায় বলা হয়েছে, চাকরি পাওয়ার পর নারী শিক্ষকদের বিয়ে হলে স্বামীর কর্মস্থলের পার্শ্ববর্তী স্কুলে বদলি হতে পারবেন, প্রতিবন্ধী শিক্ষকদের স্থায়ী ঠিকানার পার্শ্ববর্তী এলাকার স্কুলে বদলি করা যাবে, স্বামী মারা গেলে বা বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে সুবিধামতো স্থানেসহ বিশেষ কোনো কারণে বছরের যেকোনো সময় বদলি হওয়া যাবে, দুর্গম এলাকায় নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকরা চাকরির মেয়াদ ১০ বছরের পরিবর্তে ৫ বছর পর নিজ এলাকায় বদলি হতে পারবেন, জাতীয়করণ অনেক শিক্ষককে ভিন্ন জেলায় নিয়োগ দেয়া হয়েছে, তারা প্রেষণে নিজ জেলায় বদলি হতে পারবেন। তবে, সাধারণ বদলির ক্ষেত্রে বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত আবেদনের সময় নির্ধারিত রয়েছে।

জানা গেছে, আগেরমতো শিক্ষকদের চাকরির মেয়াদ দুই বছর পূর্ণ হলে বদলি আবেদন করতে পারবেন। আর দুই বছরের মধ্যেই নিজ জেলায় বদলি আবেদন করতে পারবেন। এক বছর পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত বদলির আবেদন করা যাবে না। তবে বিশেষ কারণে যেকোনো সময়ে মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতরের (ডিপিই) মহাপরিচালক, প্রাথমিক জেলা শিক্ষা অফিসার ও বিভাগীয় উপ-পরিচালকের সুপারিশে সুবিধামতো স্থানে বদলি হওয়া যাবে। ইতোমধ্যে বদলি সংশোধিত নীতিমালার খসড়া তৈরি করা হয়েছে।

গত ১৫ নভেম্বর এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সুপারিশ চাওয়া হয়েছে। সুপারিশ প্রদানে ১৫ দিনের সময় দেয়া হয়েছে। এ সময়ের পর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আরেকটি সভা করে সংশোধিত বদলি নীতিমালা চূড়ান্ত ঘোষণা করা হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এ এফ এম মনজুর কাদির বলেন, শিক্ষক বদলি নীতিমালায় কিছু জটিলতা থাকার কারণে অনেক শিক্ষক নানা ধরনের সমস্যার মধ্যে পড়ে যান। এসব কারণে বদলি নীতিমালায় সেসব বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না থাকায় অনেকে বিপদগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন। অনেক আবার চাকরি ছেড়ে দেন বা ঝুঁকি নিয়েই চাকরিতে থাকছেন। এমন অনেক অভিযোগ আমাদের কাছে এসেছে। সেই আলোকে আমরা গত এক মাস আগে বদলি নীতিমালা পরিবর্তনের কাজ শুরু করি। এখন থেকে বিশেষ কারণে বছরের যেকোনো সময় শিক্ষকরা বদলির আবেদন করতে পারবেন। বিষয়টি যাচাই-বাছাই করে তাকে বদলি করা হবে। খসড়া তৈরি হয়েছে। সবার মতামত চাওয়া হয়েছে। ডিসেম্বরের মধ্যে এটি কার্যকর করা হবে।জাগো নিউজ