ব্রাজিল দক্ষ ফুটবলার তৈরি করবে বাংলাদেশে
স্পোর্টস ডেস্ক।। বাংলাদেশের ফুটবলের উন্নয়নে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূত জোয়াও তাবাজারা ডি অলিভেইরা জুনিয়র। তিনি জানিয়েছেন, স্যোশাল প্রোগ্রামের আওতায় বাংলাদেশে ফুটবল স্কুল খুলতে চায় ব্রাজিল।
বৃহস্পতিবার (২১ জুন) যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদারের সঙ্গে তার সচিবালয়স্থ কার্যালয়ে এক সৌজন্য সাক্ষাতে রাষ্ট্রদূত এ আশ্বাস দেন। জোয়াও তাবাজারা ডি অলিভেইরা জুনিয়র দক্ষ ফুটবলার তৈরিতে স্কুল পর্যায়ে নিবিড় সহযোগিতার কথা বলেন। তিনি বাংলাদেশে ফুটবল একাডেমি প্রতিষ্ঠা, ব্রাজিলের স্বনামধন্য কোচ ও খেলোয়াড়দের বাংলাদেশের ফুটবলের উন্নয়নে কাজে লাগানোর বিষয়েও আন্তরিকতা প্রকাশ করেন।
প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার সাংবাদিকদের বলেন, যুব ও ক্রীড়া সচিবসহ একটি প্রতিনিধি দল কিছুদিন আগেই ব্রাজিল সফর করেছেন। সেখানে এ নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা হয়। তারা আমাদের এ প্রস্তাব দিয়েছিলো। আমাদের ফুটবলের উন্নয়নে কাজ করতে চায় ব্রাজিল। এ দেশের ফুটবলকে টেনে তুলতে চায়। তারা স্কুল প্রোগ্রাম ও কোচদের প্রশিক্ষণ দিয়ে এ প্রক্রিয়া শুরু করতে চায়। এরপর ধীরে ধীরে এর পরিসর বাড়বে।
তিনি বলেন, কাজটা আসলে কিভাবে শুরু হবে, তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। পুরোটাই প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। তারা চীনের পর বাংলাদেশকেই টার্গেট করেছে। তাদের বিকেএসপি’তে (বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান) আমন্ত্রণ জানিয়েছি। আমাদের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ প্রোগ্রামের কথা বলেছি। তারা খুশি হয়েছেন।
আরও : এবার সমকামী বিয়ে হচ্ছে ব্রিটিশ রাজপরিবারে
মন্ত্রী বলেন, তারা আমাদের কোচ দেবে, প্রযুক্তি দেবে এবং মানসম্পন্ন স্থানীয় কোচ তৈরিতে সহায়তা করবে। এটা নিয়ে আমরা আবারও বসবো। সব ধরনের সহায়তা দিতে নীতিগতভাবে রাজি হয়েছে। আশা করি বাংলাদেশের ফুটবল এতে লাভবান হবে।
তিনি বলেন, ফুটবলের উন্নয়নে আমরা ভালো একটা উদ্যোগ এরইমধ্যে নিয়েছি। সেটা হলো বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা ফুটবল। সেখানে প্রাইমারি স্কুলের ছেলে-মেয়েরা খেলে। কিন্তু এরপর আর কোনো ধারাবাহিকতা থাকেনা। আমরা সেটাকে ফুটবলের অগ্রগতিতে বড় ধরনের বাধা হিসেবে দেখছি। এজন্য আমরা অনূর্ধ্ব-১৭ ফুটবল আয়োজন করছি। এটাও বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ। নতুন বাজেটে এজন্য বরাদ্দও রাখা হয়েছে। এখানে কেবল স্কুল নয়, ১৭ বছরের কম, যে কেউ খেলতে পারবে। উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার প্রধান হিসেবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এই টুর্নামেন্টের প্রধান থাকবেন। প্রথমে ছেলেদের টুর্নামেন্ট হচ্ছে। পরে মেয়েদেরটাও শুরু হবে।
প্রতিমন্ত্রী জানান, এ টুর্নামেন্টে এক লাখ ২২ হাজার ফুটবলার অংশ নিচ্ছে। সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে এ টুর্নামেন্ট হবে। প্রথমে ইউনিয়ন-ইউনিয়ন খেলা হবে। এখান থেকে উপজেলার সেরা ১১ নির্বাচন হবে। উপজেলা-উপজেলা খেলার পর সেরা জেলা ১১ নির্ধারণ হবে। জেলা-জেলা খেলে বিভাগীয় ১১ নির্বাচন হবে। এভাবে চূড়ান্ত টুর্নামেন্ট শেষ হবে একটি বিভাগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মাধ্যমে। এ টুর্নামেন্ট থেকে আমরা দেশসেরা ৬৬ অনূর্ধ্ব ফুটবলার বাছাই করে দীর্ঘমেয়াদী প্রশিক্ষণে পাঠাবো। এরাই এক সময় জাতীয় দল এবং ক্লাব ফুটবলের উৎস হবে।
মূলত, বিশ্বকাপ ফুটবলে ব্রাজিল এবং আর্জেন্টিনাকে ঘিরে বাংলাদেশিদের উন্মাদনাই এদেশের ফুটবল নিয়ে আগ্রহী করে তুলেছে লাতিন আমেরিকার এ দেশকে।
সাক্ষাৎকালে তারা ক্রীড়ার উন্নয়নে বিভিন্ন বিষয়াদি নিয়ে মতবিনিময় করেন। এ সময় যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম, অতিরিক্ত সচিব এ বি এম রুহুল আজাদ, যুগ্মসচিব মো. ওমর ফারুক এবং বাংলাদেশে ফিফা বিশ্বকাপ ২০১৮ এর উম্মাদনা অবলোকন করতে ব্রাজিল থেকে আগত চারজন টিভি সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন।