তুরস্কে ‘ধার্মিক প্রজন্ম’ গঠনে এরদোগানের যত পরিকল্পনা!
অটোম্যান সাম্রাজ্যের পতনের পর ১৯২৩ সালে ক্ষমতায় আসীন হয়ে আধুনিক ও অসাম্প্রদায়িক তুরস্কের জন্ম দেন মোস্তোফা কামাল আতাতুর্ক। ১৯৩৮সালে মৃত্যুর আগপর্যন্ত তুরস্ককে একটি ধর্মনিরপেক্ষ ও পশ্চিমা সভ্যতা দ্বারা প্রভাবিত দেশ হিসেবে বিনির্মাণ করেন প্রথম সফল এ প্রেসিডেন্ট। তবে বর্তমানে, কালের পরিক্রমায় তুরস্কের সেই অবস্থার বেশকিছু বড় পরিবর্তন খোলা চোখেও দৃশ্যমান হচ্ছে। আধুনিক ও ধর্মনিরপেক্ষতা থেকে সরে এসে আজকের এরদোগানের তুরস্ক পরিণত হচ্ছে ধর্মীয়বর্মের আবরণে ঢাকা এক সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রে।
দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট রেসেপ তাইয়েপ এরদোগান তুরস্কে একটি ‘ধার্মিক প্রজন্ম’ গড়ে তুলতে চাইছেন। অন্তত সেখানকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর অবস্থা দেখে তাই মনে হচ্ছে। কেননা, দেশটিতে কোনরকম পূর্বসংকেত ছাড়াই একের পর এক সরকারি স্কুলগুলো বন্ধ হয়ে তা রুপান্তরিত হচ্ছে মাদ্রাসার মত ধর্মীয় স্কুলে। পরীক্ষাগুলোও বাতিল হচ্ছে প্রেসিডেন্টের মর্জিমাফিক। সরকারি স্কুলগুলোর হাজার হাজার শিক্ষক হচ্ছেন চাকরিচ্যুত। অপরদিকে, স্কুলের বাইরে অভিভাবকদের সঙ্গে কোনরকম আলোচনার তোয়াক্কা না করেই শিশুদের শিক্ষা দিচ্ছে ধর্মীয়গোষ্ঠীগুলো।
আরও : এবার সমকামী বিয়ে হচ্ছে ব্রিটিশ রাজপরিবারে
যদিও আগামী রোববার তুরস্কে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা রয়েছে। তবে, এরদোগানের পুনর্বিজয় দেশটির ওপর কী প্রভাব পড়বে তা নিয়ে চিন্তিত রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। বিশেষ করে দেশটির শিক্ষাখাত নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা গেছে। তারা এরদোগানের পরিবর্তনের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যেই প্রতিবাদ জানাতে শুরু করেছেন।
তবে, মজার বিষয় হল, এরদোগান তার সিদ্ধান্তের বিষয়ে কোনরকম রাখঢাকই রাখছেন না। সম্পূর্ণ নিজের মনের মত করেই ঢেলে সাজাচ্ছেন শিক্ষাখাতকে। যা পুরোপুরিভাবেই তার পূর্বসূরি কামাল আতাতুর্কের বিরুদ্ধাচরণ। অবশ্য, আজ থেকে ৬বছর আগেই প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে এরদোগান ঘোষণা দিয়ে জানিয়েছিলেন, তার স্বপ্ন হলো তুরস্কে ‘একটি ধার্মিক প্রজন্ম’ গড়ে তোলা। নিউইয়র্ক টাইমস