শাহবাগ থেকে ইমরান এইচ সরকারকে তুলে নিয়ে গেছে র্যাব
রাজধানীর শাহবাগ থেকে গণজাগরণ মঞ্চের একাংশের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকারকে তুলে নিয়ে গেছে র্যাব। পূর্বঘোষিত কর্মসূচিতে আসার পর সাদা পোশাকের কয়েকজন তার সঙ্গে কথা বলেন। এরপর সেখান থেকে তাকে তুলে নিয়ে যায় র্যাব।
র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের সিনিয়র সহকারী পরিচালক এএসপি মিজানুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বুধবার বিকেলে মাদকবিরোধী অভিযানে ‘বিনা বিচারে হত্যা’র প্রতিবাদে শাহবাগে পূর্বঘোষিত সমাবেশ করতে জড়ো হয় গণজাগরণ মঞ্চ। এ সময় ‘নির্বিচারে মানুষ খুনের বিরুদ্ধে জাগো বাংলাদেশ’ স্লোগান দেয় তারা। ফেসবুকে একটি ইভেন্ট ক্রিয়েট করে ডাকা এই সমাবেশে সরকারকে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড থেকে সরে আসার আহ্বান জানানো হয়।
পূর্বঘোষিত কর্মসূচিতে যোগ দিতে ইমরান বিকেল ৪টার সময় আসেন। এ সময় জাতীয় জাদুঘরের সামনে ছাত্র ইউনিয়নের প্রোগ্রাম চলছিল। তিনি ছাত্র ইউনিয়নের নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতামত বিনিময়ের সময় ঘটনাস্থলে একটি মাইক্রোবাস উপস্থিত হয়। মাইক্রোবাস থেকে সাদা পোশাকধারী ৭-৮ র্যাব সদস্য ‘একটু যেতে হবে’ বলে তাকে মাইক্রোতে তুলে নেন। এসময় র্যাবের ৪টি গাড়িও সেখানে উপস্থিত হয়। গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীরা বাধা দিতে গেলে র্যাব সদস্যরা তাদের লাঠিপেটা করেন। আহত হন একজন, তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
আরও : ফ্রান্স বনাম পেরুর খেলাটি দেখুন ….(সরাসরি)
এ ব্যাপারে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান বলেন, ‘ইমরান এইচ সরকারের কর্মসূচির কোনো অনুমতি ছিল না। শুধু ছাত্র ইউনিয়নের কর্মসূচির মৌখিক অনুমতি ছিল। তাই আমরা সেখানে উপস্থিত ছিলাম। ইমরানের বিরুদ্ধে আমার থানায় কোনো মামলা নেই। তাঁর আটকের ব্যাপারে র্যাবই ভালো বলতে পারবে।’
জানতে চাইলে র্যাব-৩–এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. এমরানুল হাসান বলেন, ‘ইমরান এইচ সরকারকে আটক করা হয়েছে শাহবাগে তাঁর কর্মসূচির অনুমতি ছিল না বলে। এরপরও তিনি সেখানে কর্মসূচিতে পালন করছিলেন। এর আগেও তিনি একই কাজ করেছিলেন। তখন তাঁকে সতর্ক করা হয়েছিল। এ ব্যাপারে পরে গণমাধ্যমকে জানানো হবে।’
এদিকে ইমরান এইচ সরকারকে তুলে নিয়ে যাওয়ায় দুঃখ প্রকাশ করে সাংস্কৃতিক কর্মী সঙ্গীতা ইমাম বলেন, আমরা এখানে কথা বলতে এসেছিলাম। কিন্তু ইমরান এইচ সরকারকে এভাবে তুলে নিয়ে যাবে এটা ঠিক নয়।
সম্প্রতি র্যাবের মাদকবিরোধী অভিযানে টেকনাফ উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি ও পৌর কাউন্সিলর একরামুল হকের নিহত হওয়ার পর পরিবারের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে একটি অডিও ক্লিপ দেয়া হয়। একরামকে ‘ঠান্ডা মাথায় খুন করা হয়েছে’ বলে দাবি করেছে পরিবার। শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ক্লিপটি ছড়িয়ে পড়লে দেশব্যাপী এই অভিযান নিয়ে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।
ক্লিপটি প্রচারের পর রোববার শাহবাগে প্রতিবাদ ও অবস্থান কর্মসূচি দেয় গণজাগরণ মঞ্চ। তবে পূর্বানুমতি না নেয়ায় সেদিনে পুলিশের বাধার মুখে তাদের সরে যেতে হয়।