রমজানের দান-সদকায় জান্নাত লাভের সুযোগ
রমজানে দান-সদকার মাধ্যমে আমরা অনেক বেশি সওয়াব অর্জন করতে পারি। নবীজি (সা.), সাহাবায়ে কেরাম এবং পূর্ববর্তী বুজুর্গরা রমজানে বেশি বেশি দান করতেন। আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘মহানবী (সা.) ছিলেন মানুষের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দানশীল। আর রমজানে তাঁর বদান্যতা আরো বেড়ে যেত। (সহিহ মুসলিম)
গরীব-দুঃখীদের জন্য সাহায্যের হাত সম্প্রসারিত করে বেশি সওয়াব অর্জনের সর্বোত্তম সময় রমজান। বছরের অন্যান্য সময়ের তুলনায় রমজানের তাদের দুঃখ খানিকটা বেড়ে যায়। এ ধরণের মানুষের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া প্রতিটি মুসলমানের ঈমানী কর্তব্য। সদকা মানুষকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা করে। মহানবী (সা.) বলেন, পানি যেমন আগুনকে নিভিয়ে দেয় নিশ্চয় তেমনি সদকাও কবরের আজাবকে বন্ধ করে দেয়। (জামে তিরমিজি)
তাই তো রাসুলে কারীম (সা.) বলেন, তোমরা খেজুরের সামান্য অংশ সদকা করে হলেও নিজেদের জাহান্নাম থেকে রক্ষা করো। (সহিহ বুখারি ও মুসলিম) কেউ যদি অভাবীদের জন্য সামর্থ্য অনুযায়ী সাহায্যের হাত সম্প্রসারিত করে, তা যত কম অথবা ছোটই হোক না কেন আল্লাহ তায়ালার কাছে তা খুবই প্রিয়। অভাবী মানুষকে খাবার প্রদান করা একটি উত্তম সদকা।
আরও : জোড়া ব্রেনের রাবেয়া-রোকেয়া: দ্বিতীয় অপারেশনে ৩০-৫০ লাখ টাকার যন্ত্রপাতি লাগবে
অনেকে গরীব ও অসহায়দের জন্য দান-সদকা করলেও পিতামাতা বা পরিবারের সদস্যদের জন্য খরচ করতে উদাসীনতা প্রদর্শন করেন। তাদের ধারণা হলো পিতামাতা, স্ত্রী-সন্তানের জন্য খরচ করলে তো আর সওয়াব পাওয়া যাবে না। এ ধারণাটি সম্পূর্ণ ভুল। মুমিনের পারিবারিক খরচও সদকা হিসেবে গণ্য হবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘সওয়াবের আশায় কোনো মুসলিম যখন তার পরিবার-পরিজনের জন্য ব্যয় করে তা সদকা হিসেবে গণ্য হয়। (সহিহ মুসলিম)। অপর হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘একটি দিনার তুমি জিহাদের জন্য খরচ করেছ, একটি দিনার দাস মুক্তির জন্য ব্যয় করেছ, একটি দিনার একজন নিঃস্বকে দান করেছ এবং একটি দিনার নিজের পরিবার-পরিজনের জন্য ব্যয় করেছ। এগুলোর মধ্যে সওয়াবের দিক থেকে সর্বাধিক বড় হলো যা তুমি তোমার পরিবার-পরিজনের জন্য ব্যয় করেছ। (সহিহ মুসলিম)
অভাবী প্রতিবেশীর ঘরে সামান্য ইফতার সামগ্রী বা অন্যান্য খাদ্যদ্রব্য পাঠিয়ে আমরা লুফে নিতে পারি জান্নাতি খাবার গ্রহণের পরম সৌভাগ্যের পুরষ্কার। নিজের অপ্রয়োজনের খরচগুলো কমিয়ে, ধুমপানের মতো খারাপ অভ্যাসগুলো ছেড়ে দিয়ে তা দিয়ে জান্নাতের সদাইপাতি কিনতে পারি। তা দিয়ে একজন রোজাদারকে ইফতার করিয়ে লাভ করতে পারি পূর্ণ রোজার সওয়াব। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘কেউ কোনো রোজাদারকে ইফতার করালে রোজাদারের সমান সওয়াব পাবে। তবে এতে সে রোজাদারের সওয়াব একটুও কমবে না। (তিরমিজি)