শুক্রবার, ৮ই জুন, ২০১৮ ইং ২৫শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

তাকওয়া অর্জনের শ্রেষ্ঠ সময় যায় বহিয়া

তাকওয়া অর্জনের মাধ্যমে মহান আল্লাহ তায়ালার নৈকট্য অর্জনের শ্রেষ্ঠ সময় হলো মাহে রমজান। মানব জাতিকে সার্বিক উন্নতি ও কল্যাণের বার্তা দিয়ে আগমন করে মাহে রমজান। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, “তোমরা যদি রোযা রাখো, তবে তাতে রয়েছে তোমাদের জন্য কল্যাণ, যদি তোমরা তা উপলব্ধি করতে পারো।” (সূরা বাকারা:১৮৪)

মাহে রমজানের মর্যাদা এত বেশি যে, প্রত্যেক ঈমানদার নারী-পুরুষ যাতে এ মাসের পূর্ণ কল্যাণ অর্জন করতে পারে, সে জন্য মহান আল্লাহ তায়ালা শয়তানকে তালাবদ্ধ করে রাখেন। হাদীস শরীফে রাসূল সা. বলেন, যখন বছর ঘুরে রমজান মাস আগমন করে, তখন আসমানের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়। জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এবং শয়তান ও অবাধ্য জিনসমূহকে বন্দি করে দেওয়া হয়”। (বুখারী : ১৭৭৮, মুসলিম: ২৩৬৬)। হাদীস শরীফে রাসূল সা. বলেন, “যে ব্যক্তি এ মাসে কোন নফল আদায় করল, সে যেন রমজানের বাহিরে একটি ফরজ আদায় করল। আর যে এই মাসে একটি ফরজ আদায় করল, সে যেন অন্য মাসে ৭০টি ফরজ আদায় করল”। (বায়হাকী, সহীহ ইবনে খুযাইমা)। অপর এক বর্ণনায় রাসূল সা. বলেন, যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ও সওয়াবের আশায় রমজান মাসের রোজা রাখবে আল্লাহ তাআলা তার পূর্বের সকল গুনাহ মাফ করে দিবেন। (বুখারী: ১৭৮০, ইবনে মাজা:১৬৪১)

যে ব্যক্তি কষ্ট করে রমজান মাসের রোজাগুলো আদায় করবে, কঠিন হাশরের ময়দানে ওই ব্যক্তির জন্য রোজা সুপারিশ করবে। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর রা. হতে বর্ণিত, রাসূল সা. বলেন, “রোজা এবং কুরআন কিয়ামতের দিন বান্দার জন্য সুপারিশ করবে, রোজা বলবে, হে আমার প্রতিপালক! আমি তাকে খাদ্য ও কাম প্রবৃত্তি হতে দিনের বেলায় বাধা প্রদান করেছি। সুতরাং তার ব্যাপারে তুমি আমার সুপারিশ কবুল কর। কুরআন বলবে, হে আমার প্রতিপালক! আমি তাকে রাতের বেলায় ঘুম হতে বাধা প্রদান করেছি। সুতরাং তার ব্যাপারে তুমি আমার সুপারিশ কবুল কর।

রোজাদার ব্যক্তির সবচেয়ে বড় আনন্দ ও প্রাপ্তি হলো আল্লাহ তা’আলা তাকে নিজ হাতে পুরস্কৃত করবেন। হযরত আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত, রাসূল সা বলেন, ‘(রমজান মাসে) আদম সন্তানের প্রতিটি নেক কাজের সওয়াব দশগুণ হতে সাতশ গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, রোজা এর ব্যতিক্রম। কেননা রোজা শুধু আমার জন্য আর আমিই এর প্রতিদান (যত ইচ্ছা) প্রদান করবো।’ (বুখারী: ১৮০৫, ইবনে মাজা: ১৬৩৮)

সকল ইবাদত আল্লাহর জন্যই হয়ে থাকে। তা সত্ত্বেও আল্লাহ তায়ালা রোজাকে বিশেষভাবে নিজের জন্য খাস করেছেন। এর কারণ সম্পর্কে কাজী আয়ায র. বলেন, প্রত্যেক ইবাদতের মধ্যেই রিয়া বা লোক দেখানোর সম্ভাবনা আছে। কিন্তু রোজার মধ্যে কোনো রিয়ার সম্ভাবনা নেই। কল্যাণের এ মোবারক মাসে আল্লাহ তা’আলা আমাদের সকলকেই তাকওয়া অর্জন এবং রমজানের পূর্ণ হক আদায় করার তাওফিক দান করুক। আমিন।

Print Friendly, PDF & Email