রোহিঙ্গাদের দ্রুত নেওয়া হবে, দেওয়া হবে নাগরিকত্বও
প্রাণভয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের দ্রুত মিয়ানমারে ফিরিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি তাদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে বলে ঢাকায় জানিয়েছেন সফররত মিয়ানমারের সমাজকল্যাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক মন্ত্রী উইন মিয়াত আই।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে বৈঠক শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের এ কথা জানান মিয়ানমারের মন্ত্রী।
এদিকে রাখাইন সীমান্তের জিরো লাইন থেকে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার জন্য বাংলাদেশ মিয়ানমারকে অনুরোধ করেছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী জানান, আন্তরিক পরিবেশে অনুষ্ঠিত আলোচনার ফলে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় গতি আসবে।
বৈঠক শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মিয়ানমারের মন্ত্রী উইন মিয়াত আই বলেন, বাংলাদেশে আসা মিয়ানমারের নাগরিকদের দ্রুত ফিরিয়ে নেয়া হবে। মিয়ানমার সরকার এ লক্ষ্যে কাজ করছে। দ্রুতই তাদের ফিরিয়ে নেওয়া হবে বলে তিনি জোরালো আশাবাদের কথা জানান।
বাংলাদেশ থেকে ফিরে গিয়ে রোহিঙ্গারা নাগরিকত্ব পাবে কি-না জানতে চাইলে মিয়ানমারের মন্ত্রী বলেন, এখান থেকে ফিরে গিয়ে মিয়ানমারের আইন অনুযায়ী নাগরিকত্বের আবেদন করতে হবে। সেই আবেদন যাচাই বাছাইয়ের পরে তারা নাগরিকত্ব পাবেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার লক্ষ্যে খুব শিগগিরিই জাতিসংঘের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই করবে মিয়ানমার।
বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, খুবই আন্তরিক পরিবেশে বৈঠক হয়েছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনের জন্য মিয়ানমারের মন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানানো হয়েছে। বৈঠকে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। দুই দেশেই ভালোর জন্য এই প্রত্যাবাসন জরুরি বলে মত দেওয়া হয়েছে। মিয়ানমারের পক্ষ থেকে বৈঠকে প্রতিশ্রুতি এসেছে তারা বিভিন্ন দেশের সহযোগিতায় ইউএনএইচসিআর, ইউএনডিপিকে নিয়ে রোহিঙ্গাদের দ্রুত ফেরত নেবে।
এ সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যত দ্রুত সম্ভব রোহিঙ্গাদের ফেরত নিন। পালিয়ে এসে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের কারণে বাংলাদেশের অনেক সমস্যা হচ্ছে। সবার আগে জিরো লাইন থেকে রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে বলেও জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
মিয়ানমারের সমাজকল্যাণ ও পুনর্বসান মন্ত্রী উইন মিয়াত আই মঙ্গলবার মধ্যরাতে ঢাকায় আসেন। তিনি বুধবার রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেন। গত বছরের আগস্ট মাসে রোহিঙ্গা সংকট শুরু হওয়ার পর এবারই প্রথম মিয়ানমারের কোনো মন্ত্রী কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেন। কক্সবাজারের কুতুপালংয়ে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা পরিচালিত একটি কমিউনিটি সেন্টারে প্রায় ৫০ জন রোহিঙ্গার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তিনি।