পাঁচ বছর আগের এক রিট আবেদনের নিষ্পত্তি করে বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ও বিচারপতি একেএম সহিদুল হক বৃহস্পতিবার এই রায় দেয়।
ওই পরীক্ষা বন্ধের দাবি জানিয়ে অধিকারকর্মীরা বলে আসছিলেন, দুই আঙ্গুলের ‘অযৌক্তিক’ ওই পরীক্ষা ভিকটিমকে আবার ধর্ষণ করার শামিল।
রায়ে আদালত বলেছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার স্বাস্থ্য বিধি অনুযায়ী গতবছর বাংলাদেশ সরকার যে হেলথ প্রটোকল করেছে, রেপ ভিকটিমদের পরীক্ষা ও ভার্জিনিট টেস্ট করতে হবে সেই বিধি মেনে।
২০১৫ সালের ৮ অক্টোবর আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক), বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, ব্র্যাক, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন, নারীপক্ষ নামে ছয়টি পৃথক সংগঠন এবং দুজন ব্যক্তি ধর্ষণের শিকার নারীর ‘টু ফিঙ্গার টেস্ট’ পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে কিনা এই বিষয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন দায়ের করেন।
আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরের ১০ অক্টোবর হাইকোর্ট ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের শিকার নারীদের ডাক্তারি পরীক্ষা-সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়নে কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন। এরপর দীর্ঘ সময় ধরে বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে এবং আইনি প্রক্রিয়া শেষে আদালত টেস্টটি নিষিদ্ধ করে রায় দিলেন।
দটু ফিঙ্গার টেস্ট’ কী
ধর্ষণের অভিযোগের ক্ষেত্রে ভিকটিমের যোনিমুখে আঙুল ঢুকিয়ে দেখা হয়, তার হাইমেন (যোনিমুখের পর্দা) অটুট রয়েছে কি না তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য। আগে ধারণা করা হতো এই পরীক্ষার মাধ্যমে নারীর শারিরীক সম্পর্ক হয়েছে কিনা প্রমাণ পাওয়া সম্ভব। ধর্ষণ সংক্রান্ত মামলার ডাক্তারি প্রমাণ হিসেবে অবিবাহিত নারীর ক্ষেত্রে এই পরীক্ষা গুরুত্বপূর্ণ বলেও মনে করা হতো। কিন্তু চিকিৎসাবিজ্ঞানীদের মতে, এই পরীক্ষার কোনো কার্যকারিতা নেই। কারণ শারীরিক সম্পর্ক ছাড়া আরও বিভিন্ন কারণে কারণে হাইমেন (যোনি পর্দা) ছিন্ন হতে পারে।