রোহিঙ্গাদের দ্রুতই ফিরিয়ে নেওয়া হবে : মিয়ানমারের মন্ত্রী
মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের যত দ্রুত সম্ভব ফিরিয়ে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন দেশটির সমাজকল্যাণ এবং ত্রাণ ও পুনর্বাসনমন্ত্রী উইন মিয়াত আয়ে। বুধবার সকালে কক্সবাজারের কুতুপালংয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে একথা জানান তিনি।
পরিদর্শন শেষে আলোচনা সফল হয়েছে উল্লেখ করে উইন মিয়াত আয়ে সাংবাদিকদের বলেন, রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার ঝুঁকিগুলো সম্পর্কে জানা আছে। সব প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে যত দ্রুত সম্ভব তাদের ফিরিয়ে নেওয়া হবে।
মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের মুখে গত বছরের অগাস্টে বাংলাদেশ সীমান্তে রোহিঙ্গাদের ঢল নামে। কয়েক মাসেই এই সংখ্যা ছয় লাখ ছাড়িয়ে যায়। বাংলাদেশে আগে থেকে আশ্রয় নিয়ে ছিল আরও চার লাখ রোহিঙ্গা।
রেহিঙ্গাদের নাগরিক হিসেবে মানতে নারাজ হলেও সর্বশেষ ঘটনার পর আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে মিয়ানমার তার দেশের এই মুসলিম বাসিন্দাদের ফেরত নিতে রাজি হয়। চার মাস আগে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে একটি সম্মতিপত্র সই হলেও এরপর তার অগ্রগতি নেই।
ওই সম্মতিপত্রের ভিত্তিতে দুই দেশ গত ১৯ ডিসেম্বর যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করে। রোহিঙ্গাদের পরিচয় যাচাইয়ের জন্য একটি ফর্মও চূড়ান্ত করা হয় জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে প্রথম যে ৮ হাজারের তালিকা দেওয়া হয়েছিল, তার মধ্যে মাত্র ৫০০ জনের পরিচয় যাচাই করে নিশ্চিত হওয়ার কথা জানিয়েছে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ।
এই প্রক্রিয়ায় দেরি দেখে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে টেলি আলাপে মিয়ানমারের সঙ্গে চুক্তি বাস্তবায়নে সহযোগিতা চেয়েছেন।
এরআগে বেলা ১১টায় কুতুপালং নিবন্ধিত ক্যাম্পে পৌঁছেন উইন মিয়াত আয়ে। সেখানকার ইনচার্জ কার্যালয়ে সরকারি কর্মকর্তা, ইউএনএইচসিআর এবং আইওএমসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
পরে তিনি কুতুপালং ক্যাম্পে ইউএনএইচসিআরের কার্যালয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলেন। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে ৩০ জন রোহিঙ্গা নারী ও পুরুষ উপস্থিত ছিলেন।
মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন শুরু করা এবং ফিরিয়ে নেওয়ার পর নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করা নিয়ে রোহিঙ্গাদের উদ্দেশ্যে কথা বলেন তিনি।এরপর সেখানে থাকা রোহিঙ্গারা মন্ত্রীর কাছে নির্যাতন-নিপীড়নের বর্ণনা তুলে ধরে তাদের দাবির কথা জানান।
এ সময় তার সঙ্গে ত্রাণ ও শরণার্থী প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. আবুল কালাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. মাহিদুর রহমান ও পুলিশ সুপার এ কে এম ইকবাল হোসেনসহ ইউএনএইচসিআর ও আইওএম এর প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
পরে দুপুর দেড়টার দিকে মিয়ানমার মন্ত্রী ঢাকায় ফিরতে কক্সবাজার বিমানবন্দরের উদ্দেশে রওনা দেন।
সকালে ঢাকা থেকে বিশেষ বিমান কক্সবাজার পৌঁছেন। এরপর সেখান থেকে কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যান।