প্রতিদিন ৩০০ রোহিঙ্গা ফেরত নেবে মিয়ানমার
নিজস্ব প্রতিবেদক : দুই বছরের মধ্যে সব রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের শর্ত রেখে ‘ফিজিক্যাল অ্যারেঞ্জমেন্ট’ নামের মাঠপর্যায়ের চুক্তি সই করেছে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার। চুক্তি অনুযায়ী, প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৫০০ জন করে রোহিঙ্গা ফেরত নেবে মিয়ানমার। তিনমাস পর এই সংখ্যা পুনরায় পর্যালোচনা করে বাড়ানো হবে।
যেদিন থেকে যাওয়া শুরু হবে, তার পরবর্তী দুই বছরের মধ্যে প্রক্রিয়াটি শেষ হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের কর্মকর্তারা।
আজ মঙ্গলবার সকালে মিয়ানমারের রাজধানী নেপিডোতে পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ে যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠক শেষে এ চুক্তি সই হয়।
বাংলাদেশের পক্ষে পররাষ্ট্রসচিব মো. শহীদুল হক এবং মিয়ানমারের পররাষ্ট্রসচিব মিন্ট থোয়ে নিজ নিজ দেশের পক্ষে চুক্তিতে সই করেন।
এর আগে গতকাল সোমবার সারাদিন যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের প্রথম সভায় ফিজিক্যাল অ্যারেঞ্জমেন্ট নিয়ে আলোচনা হয়।
মিয়ানমারের রাজধানী নেপিডোতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের (জেডব্লিউজি) বৈঠকে চুক্তিটি চূড়ান্ত রূপ পায়। চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার ফলে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন শুরুর জন্য সরকারি পর্যায়ের কাজটি সম্পন্ন হলো।
বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রসচিব মো. শহীদুল হক বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য আমরা সফলভাবে ফিজিক্যাল অ্যারেঞ্জমেন্ট চূড়ান্ত করে ফেলেছি। সেই সঙ্গে যেসব রোহিঙ্গা ফেরত যাবেন, তাঁদের জন্য একটি ফরমের রূপও চূড়ান্ত করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘ওই চুক্তিতে প্রত্যাবাসনের সংখ্যাসহ অন্য যেসব বিষয় আছে, সেগুলোর উল্লেখ আছে। বিশেষ করে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার ভূমিকার বিষয়টি এখানে যুক্ত করা হয়েছে। এখানে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, প্রত্যাবাসনের পর রাখাইনে রোহিঙ্গাদের জীবন-জীবিকার বিষয় নিশ্চিত করার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত আছে।’
শহীদুল হক বলেন, ‘সামগ্রিকভাবে দুই পক্ষের আলোচনার পর একটি ভারসাম্যপূর্ণ চুক্তি হয়েছে। এখন দুই পক্ষ যদি আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে, তবে টেকসই উপায়ে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের কাজ শুরু করা যাবে বলে আশা করা যায়।’
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের অক্টোবর থেকে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট পর্যন্ত ৮৭ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। আর ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত সাড়ে ছয় লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে এসেছে। এ ছাড়া আরও প্রায় তিন লাখ রোহিঙ্গা ২০১৬ সালের অক্টোবরের আগে থেকে বাংলাদেশে অবস্থান করছিল।