সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে শেখ হাসিনাকে সরতে হবে : মির্জা ফখরুল
---
নিজস্ব প্রতিবেদক : বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী যত ক্ষমতাশালী, তাঁর পক্ষে নির্বাচনকালে চুপ করে থাকা বা কোনো কিছু নিয়ন্ত্রণ না করা অসম্ভব ব্যাপার। তাই যদি নির্বাচন সুষ্ঠু করতে হয়, তাঁকে (শেখ হাসিনা) অবশ্যই সরে যেতে হবে।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর উত্তরায় নিজের বাসায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মির্জা ফখরুল এ কথা বলেন। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন এবং বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।
এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নির্বাচনের আগে সংসদ ভাঙতেই হবে। এর তো বিকল্প নেই। এটা তো একটা হাস্যকর ঘটনা যে ৩০০ জনের সংসদ নির্বাচনের সময়ে ৬০০ জনের সংসদ থাকবে। ৩০০-র সংসদ ভেঙে দিতেই হবে।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘এই সরকারের প্রতি জনগণের আস্থা নেই। আমিই সব—এই দাম্ভিকতা পরিহার করতে হবে। আমি সবকিছু চাপিয়ে দেব, সেই ধারণা বদলাতে হবে।’
বিএনপির এই নেতা আবারও সরকারকে সংলাপের আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আমরা সংঘাতে যেতে চাই না, আমরা সংঘাত এড়িয়ে যেতে চাই। আমরা সত্যিকার অর্থেই একটা শান্তিপূর্ণ পরিবেশের মধ্যে আগামী নির্বাচন হোক, সেটা চাই, সিরিয়াসলি চাই। আমরা কখনোই চাই না, অতীতের পুনরাবৃত্তি হোক। আমরা নির্বাচনকালীন সময়ে সত্যিকার অর্থে একটা নিরপেক্ষ সহায়ক সরকার চাই। এ নিয়ে আলোচনা করতে চাই, সমঝোতা করতে চাই। আমরা আশা করছি, সরকারের শুভবুদ্ধির উদয় হবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গণতন্ত্রে যদি আলোচনা না থাকে, সংলাপ না থাকে, তাহলে তো পথ পাওয়া যাবে না। আপনি চতুর্দিক বন্ধ করে দেবেন, পথ খোলা রাখবেন না, হাওয়া আসবে হাওয়া যাবে না, তাহলে কেমন করে হবে?’
সংলাপের ব্যাপারে সরকারের নেতিবাচক মনোভাবের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসবে, তত দিনে আমাদের এই আহ্বানের প্রভাব কতটুকু পড়ছে দেশে-বিদেশে, আন্তর্জাতিক বিশ্বে, গণতান্ত্রিক বিশ্বে, তার ওপরে নির্ভর করবে ওনারা কীভাবে চিন্তা করছেন। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, ওনারা (সরকার) যদি সত্যিকার অর্থে দেশের ভালো চান, কল্যাণ চান, গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেন, তাহলে তাঁদের কথা বলা, সংলাপ করা খুব জরুরি।’
আলাপকালে বিএনপির মহাসচিব অসংখ্য দলীয় নেতা-কর্মী ও সম্প্রতি বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির মহাসচিব আমিনুর রহমানের ‘নিখোঁজ’ হওয়ার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘এই যদি হয় দেশের অবস্থা, আমরা কোন দেশে বাস করছি। এটা তো আমরা আওয়ামী লীগের কাছ থেকে আশা করিনি। নিখোঁজদের খুঁজে বের করে দেওয়া কি সরকারের দায়িত্ব নয়? রাষ্ট্রের দায়িত্ব নয়?’
‘জঙ্গি রাষ্ট্র বানানোর ষড়যন্ত্র চলছে কি না, প্রশ্ন’
জঙ্গি নির্মূলে বিভিন্ন সময়ে সরকারের ঘোষণার পরও কিছুদিন পরপর জঙ্গি আস্তানার সন্ধান ‘জঙ্গি রাষ্ট্র বানানোর চক্রান্ত কি না’, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘এটা (জঙ্গি) খুবই সেনসেটিভ একটা ইস্যু। আমরা বারবার বলেছি, ট্রান্সপারেন্ট হোন, স্বচ্ছ হোন। যাঁকে ধরছেন, তাকে মেরে না ফেলে তাঁকে তদন্ত করুন এবং এর পেছনে কারা আছে, কারা অর্থ জোগান দিচ্ছে, কারা সংগঠক, তা বের করে নিয়ে এসে জনগণের সামনে তুলে ধরুন। কিন্তু তা না করে মেরে ফেলছেন।’
এই নিয়ে জনমনে সন্দেহের কথা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘…এ বিষয়গুলোর তদন্ত দরকার, যাতে মানুষ পরিষ্কার ধারণা নিতে পারে, বিশ্বাসযোগ্যতা আসতে পারে।’