g দরপত্র জমা দিতে ছাত্রলীগ-যুবলীগের বাধা ! | AmaderBrahmanbaria.Com – আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া

বুধবার, ১৮ই অক্টোবর, ২০১৭ ইং ৩রা কার্তিক, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

দরপত্র জমা দিতে ছাত্রলীগ-যুবলীগের বাধা !

AmaderBrahmanbaria.COM
আগস্ট ১৫, ২০১৭

---

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালের ৬টি কাজের দরপত্র জমাদানে ঠিকাদারদের বাধা দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে জেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।

২২৫টি দরপত্র বিক্রি হলেও রোববার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত মাত্র ১৮টি দরপত্র জমা পড়ে। এদিন দরপত্র জমা দেয়ার শেষ দিন ছিল।
নিজেদের পছন্দের লোককে কাজ পাইয়ে দিতে জেলা আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীদের বাধার কারণে রোববার জেলা সদর হাসপাতালে দরপত্র জমা দিতে পারেননি বলে কয়েকজন ঠিকাদার অভিযোগ করেন।

গত শনিবার রাতে সমঝোতার কথা বলে অধিকাংশ ঠিকাদারের কাছ থেকে দরপত্র সংগ্রহ করেন ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ওষুধপত্র, সার্জিক্যাল যন্ত্রপাতি, লিলেন সামগ্রী, গজ-ব্যান্ডেজ, পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও রাসায়নিক সামগ্রী, এমএসআর আসবাব সামগ্রী এবং এমএসআর যন্ত্রপাতি মেরামতের জন্য স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২৫০ শয্যার ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতাল গত ২০ জুলাই একটি জাতীয় দৈনিকে এই দরপত্র আহ্বানের বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। প্রায় অর্ধশতাধিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ৬টি কাজের বিপরীতে ২২৫টি দরপত্র কেনে। এর মধ্যে ৬টি কাজের জন্য ৬টি গ্রুপের ৩টি করে দরপত্র জমা পড়েছে।

রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সরেজমিনে সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতাল চত্বরে এবং হাসপাতাল এলাকার ভেতরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া নার্সিং ইনস্টিটিউটের প্রধান ফটকে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাসেল মিয়াসহ ১৫/২০ জন নেতা-কর্মী দাঁড়িয়ে আছেন। হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় তত্ত্বাবধায়কের কার্যালয়ের বাইরে রাখা দরপত্র জমা দেয়ার বাক্সটিকেও যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ঘিরে থাকতে দেখা যায়। তবে হাসপাতাল এলাকার কোথাও কোনো পুলিশ সদস্য লক্ষ্য করা যায়নি।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্বে থাকা সহকারী পরিচালক শফিকুল ইসলামের সঙ্গে এসব বিষয়ে কথা বলার সময় জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মাসুম বিল্লাহ এসে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে বলেন, আমাদের এক কর্মীর মরদেহ দেখতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হাসপাতালে অবস্থান করছেন। দরপত্র সম্পর্কে আমরা কিছু জানি না। দরপত্র জমা দেয়ার বাক্সের ওপর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বসে ছিলেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সাংবাদিকরা তো অনেক কিছুই দেখেন।

ঢাকার ঠিকাদার মো. মহসিন উদ্দিন বলেন, আমি ও আমার ঢাকার বন্ধু সাজ্জাদ মুন্সি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ট্রপিক্যাল এন্টারপ্রাইজ ও আহমেদ এন্টারপ্রাইজের নামে ১২টি দরপত্র কিনি। গত শুক্রবার জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মাসুম বিল্লাহসহ বেশ কয়েকজন এসব কাজের বিষয়টি সমঝোতা হবে জানিয়ে ঠিকাদারদের শনিবার রাতে শহরের আলাউদ্দিন সংগীতাঙ্গনে গিয়ে দরপত্র জমা দিতে বলেন। পরে আমি সেখানে পাঠালে তারা দরপত্রগুলো জমা নিয়ে নেয়। সেখানে রাতভর ছাত্রলীগের সভাপতি মাসুম বিল্লাহ, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হেলাল উদ্দিন, দফতর সম্পাদক তানজিল আহমেদ, প্রচার সম্পাদক সৈয়দ নজরুল ইসলাম, যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সালাউদ্দিন, শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলামসহ অনেক নেতাকর্মীরা ঠিকাদারদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন।

মহসিন উদ্দিন আরও বলেন, কয়েকটি ওষুধ কোম্পানির কাছ থেকে ৫৬ লাখ টাকা নেয়া হয়েছে। দরপত্র কেনার পর যেসব ঠিকাদাররা কাজ পাবেন না তাদের মাঝে ৪০ লাখ টাকা ভাগ ভাটোয়রা করে দেয়া হবে। ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের বাধার কারণে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দিতে পারেনি বলেও জানান তিনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক ঠিকাদার বলেন, ছয়টি কাজের বিপরীতে তিনটি করে দরপত্র জমা প্রক্রিয়া বাতিল হয়ে যাবে। তাই সমঝোতার মাধ্যমে প্রত্যেকটি কাজের জন্য তিনটি করে দরপত্র জমা দেয়া হয়েছে।

জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেন, আমি সবসময় আলাউদ্দিন সংগীতাঙ্গনে রাত ৯টা/১০টা পর্যন্ত থাকি। তবে শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে আমি বাসায় চলে আসি। এসব বিষয়ে আমি কিছু জানি না।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্বে থাকা সহকারী পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, ছয়টি কাজের বিপরীতে ১৮টি দরপত্র জমা পড়েছে। পরে এগুলো যাচাই-বাছাই করা হবে। দরপত্র জমা না দিতে পারা প্রসঙ্গে কেউ আমার কাছে অভিযোগ করেনি।

 

www.jagonews24.com

এ জাতীয় আরও খবর