দুই বছরেই উৎপাদনে যাবে রিফাইনারির ২য় ইউনিট
---
নিজস্ব প্রতিবেদক : বন্দর নগরী চট্টগ্রামেরকর্ণফুলী নদীর মোহনায় ইস্টার্ন রিফাইনারির দ্বিতীয় ইউনিট স্থাপনের প্রক্রিয়া জোরেশোরে শুরু হয়েছে। সাড়ে ষোল হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়নাধীন এ ইউনিটটি নির্মাণে ভূমি উন্নয়নের কাজ চলছে। দুই বছরের মধ্যে এ ইউনিটে উৎপাদন শুরু করার লক্ষ্য নিয়ে সবকিছু গোছানো হচ্ছে। জ্বালানি সচিব সম্প্রতি ইস্টার্ন রিফাইনারি পরিদর্শনকালে দ্রুততম সময়ের মধ্যে দ্বিতীয় ইউনিট চালুর উপর গুরুত্বারোপ করেন।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন সূত্রে জানা গেছে, দেশে বর্তমানে গড়ে ৫৫ লাখ টন জ্বালানি তেলের চাহিদা রয়েছে। এই বিপুল পরিমাণ তেলের প্রায় পুরোটাই বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়। এরমধ্যে ১২/১৩ লাখ টন ক্রুড অয়েল হিসেবে আমদানি করা হলেও বাকি তেল চড়া দামে রিফাইনড অবস্থায় আনতে হয়। দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত একমাত্র জ্বালানি তেল শোধনাগার ইস্টার্ন রিফাইনারি বছরে ১২/১৩ লাখ টন ক্রুড অয়েল পরিশোধন করতে পারে। বাকি তেলের পুরোটাই পরিশোধিত অবস্থায় আমদানি করতে হয়।
ইস্টার্ন রিফাইনারির উৎপাদন ক্ষমতা বার্ষিক ১৫ লাখ টন। পতেঙ্গায় ১৯৬৩ সালে ইস্টার্ন রিফাইনারি স্থাপনের কার্যক্রম শুরু হলেও উৎপাদন শুরু হয়েছিল ১৯৬৮ সালে। সেই তখন থেকে বিদেশ থেকে আমদানিকৃত ক্রুড অয়েল পরিশোধন করে ইস্টার্ন রিফাইনারিতে পেট্রোল, অকটেন, ডিজেল, জেট ফুয়েলসহ ১৭ ধরনের পেট্রোলিয়াম সামগ্রী উৎপাদিত হচ্ছে।
কিন্তু একটি ইউনিট দিয়ে দেশের চাহিদা মেটানো সম্ভব না হওয়ায় এবং দিনে দিনে জ্বালানি তেল আমদানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সরকার দ্বিতীয় ইউনিট স্থাপনের প্রক্রিয়া শুরু করে। প্রথম ইউনিটের দ্বিগুণ উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন দ্বিতীয় ইউনিট স্থাপনে ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে সাড়ে ষোল হাজার কোটি টাকা। বার্ষিক ৩০ লাখ টন ক্রুড অয়েল পরিশোধনের ক্ষমতা সম্পন্ন এই ইউনিট স্থাপনের জন্য ইস্টার্ন রিফাইনারির পাশেই জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছে। ইতিমধ্যে জায়গার উন্নয়ন কাজও শুরু হয়েছে।
ইস্টার্ন রিফাইনারির দ্বিতীয় ইউনিটের ডিজাইন বা নকশা তৈরির জন্য ফ্রান্সের টেকনিপ নামের একটি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করেছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি)। প্রথম ইউনিটেরও ডিজাইন করেছিল টেকনিপ। দ্বিতীয় ইউনিটের নকশা তৈরিতে ৩২২ কোটি টাকা দিতে হচ্ছে ফ্রান্সের কোম্পানিটিকে। ইতিমধ্যে নকশা তৈরির কাজ বেশ অগ্রসর হয়েছে বলে উল্লেখ করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেছেন, আগামী দুচার মাসের মধ্যেই নকশা পাওয়া যাবে। আর নকশা পাওয়ার পরই মূল অবকাঠামোগত নির্মাণ কাজ শুরু হবে।