একাদশ জাতীয় নির্বাচন নিয়ে জুলাই থেকে ইসির সংলাপ
---
নিজস্ব প্রতিবেদক : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সাত দফা করণীয় নির্ধারণ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে মঙ্গলবার নির্বাচন ভবনে পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ নিয়ে বৈঠক হলেও তা চূড়ান্ত হয়নি।
বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জুলাইয়ের শেষ দিকে দেশের নিবন্ধিত সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ শুরু হবে। চলতি বছরের নভেম্বরের মধ্যেই এই সংলাপ শেষ হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে. এম. নুরুল হুদা।
সিইসির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে অন্য চার কমিশনারসহ ইসি কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতনরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে আগামী বছরের ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে ভোটের দিন ধার্য করে রোডম্যাপের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করা হয় বলে বৈঠক সূত্র জানিয়েছে।
বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিইসি নুরুল হুদা বলেন, সংবিধান অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে ভোট অনুষ্ঠিত হবে- এটা ধরে নিয়েই কমিশন পরিকল্পনা সাজাচ্ছে। রোডম্যাপ চূড়ান্ত করতে আরও ১৫-২০ দিন সময় লাগবে।
এক প্রশ্নর জবাবে তিনি বলেন, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম সংসদের ভোট হলেও সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু হয় ২৯ জানুয়ারি। সে হিসাবে ২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারির আগেই একাদশ সংসদ নির্বাচন করতে হবে। সুনির্দিষ্ট দিন বা মাস এখন বলা যাবে না। তবে আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। ডিসেম্বরের শেষ থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত যে কোনো দিন ভোটের জন্য উপযুক্ত সময়। তফসিল ঘোষণার আগে কমিশন সভায় দিনক্ষণ চূড়ান্ত করা হবে।
এক প্রশ্নে সিইসি বলেন, যে কোনো পরিস্থিতিতে তিন মাসের নোটিশে ইসি সংসদ নির্বাচন আয়োজন করতে পারবে।
আগামী সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক থাকলেও ইসির রোডম্যাপে তা রাখা হয়নি। সিইসি বলেন, রোডম্যাপে ইভিএম নেই, তবে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপে এ বিষয়টি রাখা হবে।
সংলাপের সময় দলগুলোর সামনে ইভিএম নিয়ে ইসির আয়োজন এবং প্রস্তুতি তুলে ধরা হবে। দলগুলো চাইলেই এ বিষয়ে ইসি ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেবে। তাদের আপত্তি থাকলে ইভিএম ব্যবহারের ঝুঁকি কোনোভাবেই নেবে না ইসি।
সংবাদ সম্মেলনে সিইসি জানান, অর্থ ও পেশিশক্তির অবৈধ ব্যবহারমুক্ত এবং সব রাজনৈতিক দলের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির জন্য নির্বাচনী আইনের পর্যালোচনা ও সংস্থার করা হবে। জুলাইয়ে এই কাজ শুরু করে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে তা শেষ করা হবে। এ লক্ষ্যে কমিশনার কবিতা খানমকে প্রধান করে একটি কমিটি করা হয়েছে।
তিনি জানান, সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণেও পৃথক কমিটি করা হয়েছে। যার প্রধান থাকবেন নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম। চলতি বছরের জুলাই থেকে এ কাজ শুরু হবে; শেষ হবে আগামী বছরের এপ্রিলের মধ্যে।
সিইসি বলেন, কয়েকটি রাজনৈতিক দল কমিশনের নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে। অক্টোবর থেকে আগামী বছরের মার্চের মধ্যে এসব আবেদন নিষ্পত্তি করা হবে।
এক প্রশ্নে নুরুল হুদা বলেন, সংলাপের জন্য নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি সুশীল সমাজ, গণমাধ্যম, পর্যবেক্ষকসহ বিভিন্ন পেশার প্রতিনিধিদের সঙ্গে ইসি বসতে আগ্রহী। এই সংলাপে ইসির পক্ষ থেশে সীমানা পুনর্নির্ধারণ, আইন সংস্কার, ভোটার তালিকা হালনাগাদ, নতুন দলের নিবন্ধন, ভোটকেন্দ্র স্থাপন, ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাদের সক্ষমতা বাড়ানোসহ সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির বিষয়ে মতামত নেওয়া হবে।