রেমিট্যান্স পাঠাতে চার্জ লাগবে না : অর্থমন্ত্রী
---
দেশে রেমিটেন্স পাঠাতে এখন থেকে প্রবাসীদের আর কোনও খরচ দিতে হবে না বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি বলেন, ‘আগামী অর্থবছর থেকে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সের ওপর কোনও চার্জ কাটা হবে না। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে।’ শনিবার সচিবালয়ে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের সঙ্গে প্রাক বাজেট আলোচনাকালে তিনি এসব কথা বলেন।
দেশের অর্থনীতির সব সূচকই মোটামুটি ইতিবাচক ধারায় রয়েছে উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘সম্প্রতি রেমিট্যান্স প্রবাহে ভাটা পড়েছে। বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত সরকারও। সমস্যা সমাধানে প্রধানমন্ত্রী আগামী অর্থবছর থেকে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের ওপর কোনও চার্জ না কাটতে নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এখন থেকে রেমিটেন্সের ওপর চার্জ আর করবেন না। আই থিংক উই উইল ডু ইট। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনায় আমরা এটা করব। প্রবাসীদের আর টাকা পাঠানোর জন্য পয়সা দিতে হবে না।’
মধ্যপ্রাচ্যের মন্দাভাবকে রেমিট্যান্স ভাটার কারণ হিসেবে উল্লেখ করে আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যের প্রবাসীদের আয় কিছুটা কমবে। কারণটা হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যে কিছুটা মন্দাভাব চলছে। বেতনও কিছু কমানো হয়েছে। আরেকটা কারণ হচ্ছে, প্রবাসীরা আগের মতো তাদের সব টাকা পাঠিয়ে দিচ্ছেন না। তাদের হাতে কিছু টাকা রাখছেন।’
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বিনিয়োগ হয়তো কিছুটা স্থবির। হয়তো কিছুটা বিদেশে যাচ্ছে। আবার কিছুটা (বিনিয়োগ) আমাদের দেশে হবে। এখন বনিয়োগের অনেক সুযোগ। ডমেস্টিক মার্কেট ইজ এক্সপান্ডিং। সুতরাং এখানে বসেই যথেষ্ট পয়সা বানানোর সুযোগ পাবেন। এটা যখন দেখবেন বিনিয়োগকারীরা আসবেন।’
জমি কেনাবেচায় প্রকৃত বাজারমূল্য প্রতিফলিত হচ্ছে না মন্তব্য করে আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ‘রেজিস্ট্রেশনের সময় জমির মূল্যের একটি বড় অংশ গোপন করা হচ্ছে। ফলে অপ্রদর্শিত অর্থ পাচার করা হচ্ছে দেশের বাইরে।’ এ কারণে পাচার বন্ধে আগামী বাজেটে জমির সর্বনিম্ন নির্ধারিত মূল্য পদ্ধতি তুলে দেওয়ার ঈঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেন, ‘টাকা বিভিন্নভাবে পাচার হচ্ছে। পাচার রোধে আমরা কোনও ল্যান্ড প্রাইস রাখব না। এটি টাকা পাচার রোধে কাজ করবে।’
রাজধানীসহ দেশের বড় বড় শহরগুলোর অভিজাত এলাকায় জমি কেনাবেচার সময় প্রকৃত মূল্য গোপন করা হয় উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘জমির মূল্য পাঁচ কোটি টাকা হলেও রেজিস্ট্রেশনের সময় রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বা রাজউক নির্ধারিত প্রতি কাঠার মূল্য সর্বনিম্ন ৫০ লাখ টাকা উল্লেখ করা হয়। এভাবে সরকারকে বিপুল অঙ্কের রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি কালো টাকার মালিক হচ্ছেন বিক্রেতারা। কালো টাকা হওয়ায় এগুলো দেশে বিনিয়োগ হয় না। বিদেশে এ অর্থ পাচার হয়।’
অর্থ পাচার রোধে তাই জমির সর্বনিম্ন নির্ধারিত মূল্য তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘টাকা পাচার হচ্ছে জানি। টাকা পাচারের বিভিন্ন কারণ রয়েছে। আমরা একটা ল্যান্ড প্রাইস ফিক্সড করে দিই। কিন্তু একচুয়াল প্রাইস অনেক বেশি হয়। এ টাকা দেশে ব্যবহার করতে পারে না। কারণ কালো টাকা। তাই এটি বিদেশে পাচার করে দেওয়া হয়। আমরা এখন চিন্তা করছি, কোনও ল্যান্ড প্রাইস রাখব না। দেওয়ার শুড বি নো ল্যান্ড প্রাইস। দাম বাজারই নির্ধারণ করবে। এটা টাকা পাচার প্রতিরোধে কাজ করবে।’