আশুগঞ্জের চাতালকল : নষ্ট হচ্ছে কোটি টাকার ধান
---
সন্তোষ সূত্রধর, আশুগঞ্জ থেকে : দেশের পূর্বাঞ্চলীয় বৃহত্তর ধান ও চাউলের মোকাম ব্রাহ্মনবাড়িয়ার আশুগঞ্জে টানা ভারী বর্ষনের কবলে পড়ে বন্ধ রয়েছে সবগুলো চাতালকল। এ কারণে রৌদ্র না থাকায় উপজেলার চাতালকলের মধ্যে প্রায় আড়াইশতাধীক চাতাল কলে নষ্ট হচ্ছে কোটি কোটি টাকা মূল্যের সিদ্ধ ধান। ইতি মধ্যে প্রায় ৭কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে দাবী করেছেন ব্যবসায়ীকরা। বৃষ্টি আরো কয়েকদিন থাকলে আরো ক্ষতির সম্মূখীন হবে বলে জানান তারা। আর এসব চাতালকলে কর্মরত প্রায় ২০ হাজার শ্রমিকের কাজ না থাকায় বেকার হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে।
জানা গেছে, গত কয়েকদিনের অব্যাহত ভারী ও হালকা বর্ষণের কারণে পানিতে ভিজিয়ে হাউজের ধান সিদ্ধ ও খোলা মাঠে টুপরি দিয়ে রাখতে হচ্ছে। এতে করে অধিকাংশ চাতালকলের হাজার হাজার মণ সিদ্ধ ধানের মধ্যে চারা জেগে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ব্যবসায়ীদের কোটি কোটি টাকার ধান। আর এসব ধান নষ্ট হয়ে অধিকাংশ ধানেই দুগন্ধ ছুটে গেছে। নষ্ট হয়ে যাওয়া ধান কিছু দিন পর ধান মারাই করে চাউল হয়ে বাজারে আসলেও এসব চাউলে দুগন্ধ থেকেই যাবে। সঠিক দাম পাওয়া যাবে না। এতে করে মোটা অঙ্কের টাকা ক্ষতির সম্মূখীন হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন চাতাল মালিকরা। এছাড়া বাজারের কমে গেছে চাউলের সরবরাহ।
চাতাল শ্রমিকরা জানান, বৃষ্টির কারণে ধান শুকানো না যাওয়ায় তাদের কাজ বন্ধ থাকায় গত ৪দিন ধরে বেকার বসে থাকতে হচ্ছে চাতাল শ্রমিকদের। আর এসব চাতালকলে কর্মরত প্রায় ২০ হাজার শ্রমিক কাজ না থাকায় বেকার হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে বলে জানান চাতালকলে কর্মরত শ্রমিকরা। তারা জানান, কাজ না থাকায় মিল মালিকদের কাছ থেকে ধার করে টাকা এনে চলতে। এতে করে শ্রমিকদের ঋণের বুঝা আরো বাড়বে।
আশুগঞ্জ অটো মেজর এন্ড হাসকিং মালিক সমিতির সাধারন সম্পাদক হাজী মোঃ শাহজাহান সিরাজ জানান, অব্যাহত বৃষ্টির কারণে আশুগঞ্জের ৩শতাধীক চাতালকল ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছে। এতে প্রতিটি চাতালকল মালিকের দেড় লক্ষ থেকে ২লক্ষ টাকার ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছে। চাতাল মালিক ও শ্রমিকরা আশা করছেন দ্রুত বৈরী আবহাওয়া স্বাভাবিক হয়ে রৌদ্র উঠলে কর্মচঞ্চলতা ফিরে পাবে আশুগঞ্জের চাতালকল গুলো।
উল্লে¬খ্য, বৃহত্তর হাওরঅঞ্চল কিশোরগঞ্জ, সিলেট, ব্রাহ্মনবাড়িয়া, হবিগঞ্জ, নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ, সহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আশুগঞ্জ মোকামে প্রতিদিনই আসছে হাজার হাজার মণ ধান। আর এসব ধান স্থানীয় রাইছ মিলে পক্রিয়াজাত করে চাউলে রূপান্তর করে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, কুমিল্লা, নোয়াখালী, চাঁদপুর ও ফেনীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক ও নৌ পথে সরবরাহ করে এসব এলাকার চাউলের চাহিদা পুরণ করে।