কন্যা সন্তান জন্ম দেওয়ায় জাতীয় চ্যাম্পিয়নকে ডিভোর্স!
একবার কিংবা দুইবার নয়, ৭ বারের ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়ন তিনি। গলায় উঠেছে অসংখ্য মেডেল। কিন্তু তাকে এখনও মানুষের মর্যাদা দিতে পারেনি তার পরিবার। তাই ভারতের জাতীয় পর্যায়ের নেটবল খেলোয়াড় শুমায়ালা জাভেদ মুক্তি পাননি তিন তালাকের অভিশাপ থেকে! কন্যা সন্তান জন্ম দেওয়ার ‘অপরাধে’ শুমায়ালা জাভেদকে তালাক দিয়েছেন তার ‘স্বামী’ আজম আব্বাসি! একজন ক্রীড়াবিদের সঙ্গে এমন ঘটনা স্তব্ধ করে দিয়েছে সচেতন মানুষদের।
শুমায়ালার সঙ্গে ২০১৪ সালে বিয়ে হয় লখনউয়ের আজম আব্বাসির। বিয়ের পর থেকেই শ্বশুরবাড়ির লোকজন তার ওপর অত্যাচার করত বলে অভিযোগ করেছেন এই ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়ন। বিয়ের পর আজমকে ৩ লক্ষ টাকা যৌতুক দেওয়া হয়েছিল। এতেও মন ভরেনি তাদের। আরও টাকা চেয়ে মাঝেমধ্যেই অত্যাচার করত। এমনকি তাকে একবার আগুনে পুড়িয়ে মারাও চেষ্টা হয়! কিন্তু একজন স্বনির্ভর এবং জাতীয় পর্যায়ের তারকা হয়েও এত নির্যাতন সহ্য করছিলেন কেন?
কারণটি হতে পারে শুমায়ালার গর্ভের সন্তান। শুমায়ালা গর্ভবতী হয়ে পড়লে পুত্রসন্তান না জন্মালে কপালে দুঃখ আছে বলে হুমকি দিতে থাকে তার শ্বশুর-শাশুড়ি। গোপনে আলট্রাসাউন্ড পরীক্ষা করানোর পর যখন তারা জানতে পারে যে শুমায়ালার গর্ভের সন্তানটি মেয়ে, তখন ৮ মাসের গর্ভবতী শুমায়ালাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয় তারা। অশিক্ষিত তো বটেই, অনেক লেখাপড়া জানা মানুষও জানে না কিংবা বিশ্বাস করতে চায় না যে, সন্তানের লিঙ্গ কী হবে তা নির্ভর করে পুরুষের ওপর; নারীর ওপর নয়।
মেয়ের সংসার বাঁচাতে শুমায়ালার বাবা আবারও তাকে তার শ্বশুরবাড়িতে রেখে আসলে চলতে থাকে অত্যাচার। কন্যা জন্মানোর পর শুমায়ালাকে তিন তালাক দেন তার স্বামী। এই অত্যাচারের প্রতিকার চেয়ে এখন প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিঠি দিয়েছেন এই ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়ন। এই খবর মিডিয়ায় আসার পর সমালোচনা আর নিন্দার ঝড় উঠেছে সর্বত্র। এই একুশ শতকেও মধ্যযুগীয় চিন্তাধারার নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে অনেকেই। -এই সময়