মঙ্গলবার, ১৩ই জুন, ২০১৭ ইং ৩০শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

ঢোলভাঙ্গা নদী : একটি মড়াঁ নদীর কথা

AmaderBrahmanbaria.COM
এপ্রিল ১৮, ২০১৭
news-image

---

ফয়সল আহমেদ খান, বাঞ্ছারামপুর : বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের ১২১টি গ্রামের পুরোটাই চারদিক থেকে মেঘনা অববাহিকায় তিতাস নদী ঘিরে রেখেছে।
উপজেলাটির দৈনন্দিন সমস্ত কৃষি এবং অর্থনৈতিক কার্যক্রম পরিচালিত হয় এই তিতাস নদীর উপশাখা ঢোলভাঙ্গা নদীর উপর ভর করে। ৪/৫ বছর আগেও শুষ্ক মৌসুমে রোপন হতো ইরি-ব্যুরো জমিতে নদীর পানি থেকে বিনা খরচে কেবল কায়িক পরিশ্রমের মাধ্যমে সেঁচকাজ সম্পন্ন করতেন স্থানীয় শত-শত কৃষক। কিন্তু এখন নদী ভরাট ও নাব্যতা না থাকায় পয়সা খরচ করে পানি কিনতে হচ্ছে। এ ছাড়া, এই নদীকে ঘিরেই গড়ে উঠেছে উপজেলার নদী তীরবর্তী যে ইরি-ব্যুরো ধান চাষ ছাড়াও-সমস্ত ব্যবসা-বাণিজ্য, মালামাল পরিবহন অর্থ্যাৎ উপজেলার সমস্ত অর্থনৈতিক কর্মকান্ড। ব্যবসায়িরা জানায়, ইরি-ব্যুরো ক্ষেতে টোঙ্গার দিয়া পানি দিতে হতো। ফসল করতে খরচ পরতো অনেক কম। অহন গাঙ্গেই পানি নাই, গাঙ্গ মইরা শুকাইয়া গেছে, তাই একর প্রতি ১৮ শত টাকা খরচ কইরা জমিতে ডিজেল মেশিন দিয়া পানি দেই’’। বিগত প্রায় ২২ থেকে ২৫ বছর আগে সর্বশেষ মেঘনা নদীর উপনদী তিতাস নদী আর এর শাখা নদী উপজেলাবাসীর অতিপ্রয়োজনীয় তিতাস তথা ঢোঁলভাঙ্গা নদীটি ড্রেজিং-এর মাধ্যমে খনন করা হয়েছিল। এরপর থেকে এর প্রতি কোন সরকারই নজর দেয়নি। ফলে পলিমাটি, উপজেলা চকবাজারের সমস্ত বর্জ্য,পলি মাটি ভরাট, নদীর তীরবর্তী বিভিন্ন জায়গা দখল করে স্থাপনা নির্মাণ ইত্যাদি কারণে প্রতিবছর অক্টোবর থেকে শুরু করে মে মাস পর্যন্ত নদী এক রকম শুকিয়ে যায়, নদীতে নাব্যতা থাকে না। নদীতে যথেষ্ঠ পরিমান পানির অভাবে নৌ চলাচল বন্ধ থাকার কারণে ট্রলার,পণ্য পরিবহনের বিশেষ আকৃতির ষ্টীল বোঁট,লঞ্চ, নৌকা প্রায় বন্ধের সম্মুখীন হয়ে পড়ে। এর প্রভাব পড়ে অর্থনীতিতে। ফলে উপজেলায় ব্যবসায়িদের আমদানীকৃত নিত্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন সামগ্রী আনতে হয় সড়কপথে বিভিন্ন জায়গা ঘুরিয়ে বেশী মূল্য খরচ ও ২গুন পথ বেশী পাড়ি দিয়ে আনতে যেয়ে খরচ বেড়ে দাঁড়ায় ২গুন থেকে ৩ গুন বেশী। এ প্রসঙ্গে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি)মো.এবিএম খোরশেদ আলম তথ্য দিয়ে জানান,-‘‘তিতাস অববাহিকায় ঢোলভাঙা নদী শুস্ক মৌসুমে শুকিয়ে যায় কেবল ড্রেজিং করার অভাবে, এটা অনিস্বাকার্য। শাখা নদীটির বহুবিধ ব্যবহার ও এর উপর অর্থনৈতিক ও কৃষি জড়িত আছে বিধায়ই ,-ড্রেজিং এর জন্য আমরা বিগত ২/৩ বছর যাবত এর সাথে সংশ্লিষ্ট বি,এ,ডি,সি এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের ড্রেজিং বিভাগকে বহুবার চিঠির মারফত অবগত করিয়েছি। এ বছর নিরুপায় হয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের ১১টি ভিন্ন-ভিন্ন প্রকল্পে ঢোলভাঙ্গা নদীতে ড্রেজিং এর বিষয়টি বিশেষায়িতভাবে উল্লেখ করা আছে।আশা করছি খুব শীঘ্রই নদী খনন করতে পারবো’’

এ জাতীয় আরও খবর