যুক্তরাষ্ট্রে চাকরি হারাতে পারেন ২ লাখ অভিবাসী দম্পতি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আমলে জারি করা ভিসা সংক্রান্ত একটি নির্দেশ বাতিলের বিষয়টি বিবেচনা করে দেখছেন নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর ফলে চাকরি হারাতে পারেন প্রায় দুই লাখ অভিবাসী দম্পতি। সোমবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, ১৫ বছর আগে ভারত থেকে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলেন সুদর্শনা সেনগুপ্ত। সেখানে কাজের অনুমতি পাওয়ার একটি ল্যাবরেটরিতে খন্ডকালীন কাজ করা শুরু করেন তিনি। ওই কাজের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে পরবর্তীতে মোটা বেতনের চাকরিও জুটে যায় তার। ২৮ বছরের সুদর্শনা কেন্টাকির লুইসভিলে সংসার পেতেছিলেন ভারত থেকে আসা সাধক সেনগুপ্তের সঙ্গে। সে সময় পোস্ট ডক্টোরাল ফেলোশিপ পেয়েছেন সাধক। গবেষণার কাজে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকেই সেরা জায়গা বলে মনে হয়েছিল তার। ২০০৫ সালে এইচ-১বি ভিসার আবেদন করেন সাধক। এর বছর পাঁচেক পরেই অভিবাসন ভিসা পেয়ে যান তিনি। ফলে গ্রিন কার্ড পেতেও যে আর দেরি হবে না সে আশা ছিল তাদের।
শিকাগোর ইন্ডিয়ানাপোলিসে কিছু দিন কাজের পর ২০১১ সালে বোস্টনে গিয়ে বসবাস করা শুরু করেন সেনগুপ্ত দম্পতি। ২০১৩ সালে এইচ-১বি ভিসার সময়সীমা শেষ হলে সে দেশে কাজ করার অধিকার হারান সুদর্শনা। কিন্তু ২০১৫ সালে বারাক ওবামা জারিকৃত এক নির্দেশে বলা হয়, এইচ-১বি ভিসাধারী ও গ্রিন কার্ডের জন্য আবেদন করেছেন এমন দম্পতিদের একজনের অনির্দিষ্টকালের জন্য আমেরিকায় কাজ করায় আর কোনো বাধা থাকবে না। তাই ফের কাজ করতে শুরু করেন সুদর্শনা।
ওই বছরই ভিসা সংক্রান্ত বিষয়টি ফের আইনি প্যাঁচে জড়িয়ে পড়ে। এইচ-১বি ভিসাধারী বিদেশি কর্মীদের কাছে কাজ হারিয়ে মামলা করেন ক্যালিফোর্নিয়ার এক দল তথ্যপ্রযিুক্ত বিষয়ক কর্মী। তাদের যুক্তি ছিল, ওই ভিসা আইনের চাপে পড়েই কাজ হারাচ্ছেন মার্কিনিরা। কিন্তু, ২০১৬ সালে নিম্ন আদালতে সেই যুক্তি খারিজ হয়ে যায়। এরপরেও ওই আইন বদলের আবেদন করেন ওই কর্মীরা। তাদের আশা ডোনাল্ড ট্রাম্প সরকার ওই ভিসা নিয়মে পরিবর্তন আনবেন।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যে এ নিয়ে ভাবনা-চিন্তা করছেন তা-ও প্রকাশ্যে এসে পড়ে গত জানুয়ারিতে। এ বিষয়ে প্রশাসনিক নির্দেশের একটি খসড়া ফাঁসও হয়ে যায়। সরকার গঠনের পর এ নিয়ে চিন্তা-ভাবনার জন্য ৬০ দিনের সময় চেয়ে নেন ট্রাম্প। আগামী সোমবার সেই সময়সীমা শেষ হচ্ছে। তবে জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট মার্কিন আদালতে আবেদন করেছে, বিষয়টি নিয়ে আরও পর্যালোচনার জন্য তা আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অর্থাৎ আরও ছ’মাস পিছিয়ে দেওয়া হোক।
জাস্টিস ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র সারাহ ইসগুর ফ্লোরেস এ ব্যাপারে বলেছেন, ‘ প্রশাসন আইন অনুযায়ী আমেরিকান কর্মীদের সুরক্ষা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’ তবে এ বিষয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের পরিকল্পনা নিয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করেন নি।