প্রণবের জন্য নিজ হাতে ‘ভাপা ইলিশ’ রাঁধলেন হাসিনা
অনলাইন ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফর নিয়ে দুই দেশের মানুষের আগ্রহের শেষ নেই। বিশেষ করে প্রণব দাদার জন্য শেখ হাসিনার ইলিশ নিয়ে যাওয়ার ঘটনাটি তো মানুষের মুখে মুখে। কিন্তু এখানেই শেষ নয়। প্রণব মুখার্জির জন্য আরো কিছু অপেক্ষায় ছিল। তা হলো- শেখ হাসিনার নিজের হাতে রান্না ভাপা ইলিশ!
প্রণব মুখার্জিকে তিনি বরাবরই বড় ভাইয়ের মতো শ্রদ্ধা করেন। প্রণবের স্ত্রীর সঙ্গেও হাসিনার মধুর সম্পর্ক ছিল। এখন রাষ্ট্রপতি ভবনেই তিনি অতিথি হিসেবে রয়েছেন। সেখানেই নৈশভোজের আয়োজন করেছিলেন প্রণব। হাসিনার সঙ্গে ঢাকা থেকে এসেছেন ছয়জন রাঁধুনি। তারাই ইলিশের তিন রকমের পদ রেঁধেছেন। কিন্তু ভাপা ইলিশ রান্নায় নিজেই হাত লাগান হাসিনা। প্রণবদা যে এই ভাপা ইলিশ খেতে ভালোবাসেন তা জানেন বোন হাসিনা।
পদ্মার ইলিশ ছাড়াও সঙ্গে ছিল মমতার জন্য জামদানি শাড়ি ও প্রণবের জন্য ঢাকাই মসলিনের পাঞ্জাবি। দুজনের হাতেই উপহার তুলে দিয়েছেন হাসিনা। মমতাও হাসিনার হাতে তুলে দিয়েছেন রাধারমণ মল্লিকের মিষ্টি ও শাল।
প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে দেওয়া মধ্যাহ্নভোজেও ছিল হরেক পদ। লুচি, ছোলার ডাল, পোলাও, পাবদা, ভেটকি, গলদা চিংড়ির মালাইকারি, মুরগির মাংস, মিষ্টি দই এবং রসগোল্লা। আর ছিল বাংলার প্রসিদ্ধ গন্ধরাজ লেবু। গন্ধরাজ লেবু হাসিনার খুব প্রিয়, তা প্রধানমন্ত্রী মোদিও জানেন। লাঞ্চে একই টেবিলে প্রধানমন্ত্রী মোদি, হাসিনা, মমতা। সঙ্গে সুষমা স্বরাজ। একটু দূরে অন্য একটি টেবিলে বসেছেন তৃণমূল সাংসদ সুগত বসু, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় এবং বিজেপি সাংসদ রূপা গঙ্গোপাধ্যায়।
মোদি নিজেই সাদরে মমতাকে হাসিনার সঙ্গে একই টেবিলে বসান। হাসিনার বাবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে সুগত বসুর বাবা শিশির বসুর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। সেই সূ্ত্রে ধরে সুগতবাবুর মা প্রাক্তন সাংসদ কৃষ্ণা বসুর শারীরিক অবস্থার কথা জানতে চান হাসিনা। পদ্মানদীর মাঝির ‘কপিলা’ রূপার সঙ্গেও কুশল বিনিময় করেন হাসিনা।
মধ্যাহ্নভোজের আগে কলকাতা-বাংলাদেশ বাস এবং ট্রেন পরিষেবার উদ্বোধন করেন মোদি ও হাসিনা। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মমতাও। হায়দরাবাদ হাউসে দুই দেশের জাতীয় সংগীত বাজানোর সময়ে হাসিনার প্রটোকলের দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়র কাছে হাসিনা তার গলায় গান শোনার অনুরোধ জানান। বাবুল বলেন, ‘যখন বলবেন, তখনই গান শোনাব। ‘
ঘটনাস্থলে উপস্থিত মোদিকে গোটা বিষয়টা হিন্দিতে তরজমা করে বলেন বাবুল। প্রধানমন্ত্রী তৎক্ষণাৎ সবাইকে চমকে দিয়ে বলে ওঠেন, শুধু ভারত এবং বাংলাদেশ নয়, শ্রীলঙ্কার জাতীয় সংগীত রচয়িতা আনন্দ সমরাকুনাকেও উদ্বুদ্ধ করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। আনন্দ বিশ্বভারতীতে থেকে রবীন্দ্রনাথের আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশে ফিরে রচনা করেছিলেন সেই দেশের জাতীয় সংগীত।