সোমবার, ১০ই এপ্রিল, ২০১৭ ইং ২৭শে চৈত্র, ১৪২৩ বঙ্গাব্দ

ট্যানারি কারখানার জরিমানা মওকুফ

AmaderBrahmanbaria.COM
এপ্রিল ৯, ২০১৭

নিজস্ব প্রতিবেদক : পরিবেশের ক্ষতি হিসেবে হাজারীবাগের ১৫৪ ট্যানারি মালিককে বকেয়া বাবদ ৩০ কোটি ৮৫ লাখ জরিমানা মওকুফ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ।

তবে ট্যানারি মালিকদের আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ৫০ হাজার টাকা করে এককালীন জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শ্রম মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়ার পর এই টাকা হাজারীবাগের শ্রমিকদের পুনর্বাসন ও কল্যাণে ব্যয় করার জন্য শ্রম সচিবকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে সাভারে স্থানান্তরিত হওয়া ট্যানারিগুলোর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১৫ দিনের মধ্যে গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানি সংযোগ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

রোববার প্রধান বিচারপতির সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

আদালতে ট্যানারি কারখানাগুলোর পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। রিটের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ।

গত ১৯ মার্চ ১৫৪ ট্যানারি মালিককে বকেয়া বাবদ ৩০ কোটি ৮৫ লাখ জরিমানা পরিশোধের আদেশ স্থগিত করে শুনানির জন্য পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন চেম্বার আদালত।

গত ২ মার্চ ১৫৪ ট্যানারি কারখানাকে বকেয়া বাবদ ৩০ কোটি ৮৫ লাখ জরিমানা ২ সপ্তাহের মধ্যে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।

বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি আশীষ রঞ্জন দাসের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

পরে এই আদেশ স্থগিত চেয়ে বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন ও ফিনিশড লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন হাইকোর্টে আবেদন করেন।

হাজারীবাগ থেকে ট্যানারি সরিয়ে সাভারের হেমায়েতপুরে নিতে আদালতের নির্দেশ বাস্তবায়ন না করায় গত বছরের ১৮ জুলাই ক্ষতিপূরণ হিসেবে ১০ হাজার টাকা করে ধার্য করেছিলেন আপিল বিভাগ। শিল্পসচিবকে এই অর্থ আদায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করতে বলা হয়েছিল। সেই জরিমানা আদায়ে ব্যর্থতার কারণে শিল্প সচিবের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা হয়।

আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে হাজারীবাগে ট্যানারি প্রতিষ্ঠান চালু রাখায় ১৫৪ প্রতিষ্ঠানের মালিককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছিলেন হাইকোর্ট। গত বছরের ১৮ জুলাই প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

এর আগে গত বছরের ১৬ জুন বিচারপতি সৈয়দ মোহম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি এ কে এম সাহিদুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ ট্যানারি মালিকদের পরিবেশের ক্ষতিপূরণ হিসেবে প্রতিদিন ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে প্রদানের নির্দেশ দেন।

পরে বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার, লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করে। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৩ জুন হাইকোর্টের আদেশ ১৭ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত করে শুনানির জন্য আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন অবকাশকালীন চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।

সেই হিসেবে আবেদনটি শুনানির জন্য আসলে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের জরিমানার সিদ্ধান্ত ঠিক রেখে পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছিলেন।