জঙ্গি রিপনের জন্য প্রস্তুত ফাঁসিমঞ্চ
নিজস্ব প্রতিবেদক : সাবেক ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জঙ্গি নেতা দেলোয়ার হোসেন রিপনের দণ্ড কার্যকর করতে প্রস্তুত সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের ফাঁসির মঞ্চ।
রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো রিপনের প্রাণভিক্ষার আবেদন খারিজ হয়ে গেছে। এখন কারাগার কর্তৃপক্ষ অপেক্ষায় রয়েছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের জন্য। তা হাতে পেলেই জেলকোড অনুযায়ী ফাঁসি কার্যকরের উদ্যোগ নেবে তারা।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার ছগির মিয়া। তিনি জানান, প্রাণভিক্ষার আবেদন খারিজ সংক্রান্ত কোনো কাগজপত্র রোববার বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে এসে পৌঁছেনি।
এদিকে, কারা সূত্রে জানা গেছে, রোববার দুপুরে রিপনের সঙ্গে পরিবারের ১২ সদস্য দেখা করেছেন। তারা প্রায় ২৫ মিনিট কথা বলেন। এসময় প্রাণ ভিক্ষার আবেদন খারিজ হওয়ার বিষয়টি তাকে জানানো হয়।
রিপনকে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের কনডেম সেলে রাখা হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে ফাঁসির মঞ্চ ও কারাগারের ৮-১০ জন জল্লাদকে।
প্রসঙ্গত, ২০০৪ সালের ২১ মে সিলেটে হযরত শাহজালালের মাজার প্রাঙ্গণে ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীকে লক্ষ্য করে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন পুলিশের এএসআই কামাল উদ্দিন। হাসপাতালে নেয়ার পর মারা যান পুলিশ কনস্টেবল রুবেল আহমেদ ও হাবিল মিয়া নামে এক ব্যক্তি। এ ঘটনায় আহত হন আনোয়ার চৌধুরী ও সিলেটের জেলা প্রশাসকসহ অন্তত ৪০ জন।
এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় ২০০৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর হরকাতুল জিহাদের (হুজি) নেতা মুফতি আবদুল হান্নান, শরীফ শাহেদুল বিপুল ও রিপনকে মৃত্যুদণ্ড এবং মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান ও আবু জান্দালকে যাবজ্জীবন দণ্ড দেন সিলেট দ্রুত বিচার আদালত। রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে আসামিরা।
গত বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি বিচারিক আদালতের রায় বহাল রাখেন হাই কোর্ট। পরে আসামিদের আপিল গত ৭ ডিসেম্বর খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ। চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। গত ২৩ ফেব্রুয়ারিতে আসামিরা রিভিউ আবেদন করেন। ১৯ মার্চ সে আবেদনও খারিজ হয়। পরে গত মঙ্গলবার ২১ মার্চ রিভিউ খারিজের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়।
এ মামলায় অপর দুই ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মুফতি হান্নান ও বিপুল বর্তমানে ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন। তাদের প্রাণভিক্ষার আবেদনও খারিজ করে দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি।