বৃহস্পতিবার, ৯ই মার্চ, ২০১৭ ইং ২৫শে ফাল্গুন, ১৪২৩ বঙ্গাব্দ

ঐতিহ্যবাহী ইটের নৌকায় ভাসমান হাট

AmaderBrahmanbaria.COM
মার্চ ৭, ২০১৭

ফয়সল আহমেদ খান, বাঞ্ছারামপুর : সাংবাদিক ভাইজান “রঈদ,মেঘ আর বান-তুফানের মইধ্যেও আমরা নৌকায় কইরা ইট লইয়া বাঞ্ছারামপুর ও নবীনগরে বেঁচবার আহি।আমাগো বাপ-দাদারাও এহানে ব্যবসা কইরা আমগোরে বড় করছে। কিন্তুক,বাপ-দাদারা ইট কেনা-বেছা করছে নগদে।আর অহন এক শ্রেণীর বড় লোক,নেতারা জোর কইরা বাড়ীতে ইট বোঝা বইয়া ইট নিয়া দিয়া আসার পরেও মাসের পর মাস ট্যাহা বাকী রাহে। হের লাইগ্যা,আমগো মহাজনরা জামানত থাইক্ক্যা ট্যাহা কাইট্টা রাহে।পরিবার লইয়্যা দুই বেলা ভাত খাইতে কষ্ট হইতাছে।পত্রিকায় একটু লিখ্যা দিবেন আমগো বাকী টাকা বড়লোক লোকগুলান যেনো দিয়া দেয়,আর যেন বাকীতে ইট না কেনেন’’ আর এভাবে মনের মাঝে জমা থাকা  আক্ষেপ গুলো প্রকাশ করছেন  নারায়নগঞ্জ জেলার নিতাইগঞ্জ থেকে নৌকায় করে ইট বিক্রি করতে আসা সিদ্দিকুর রহমান এর মতো অর্ধ -শতাধিক ভ্রাম্যমান ইট বিক্রেতারা। তারা ইট নিয়ে নৌকায় করে নদী পথে আজ এই গ্রামে, কাল  অন্য এলাকায় ছুটে বেড়ায়।
সাপ্তাহিক  হাটের দিন আসলেই ভ্রাম্যমান অর্ধ-শতাধিক ইট বিক্রেতা নবীনগর ও বাঞ্ছারামপুরে তিতাস নদী দিয়ে আসে ইট বিক্রি করতে। বৃহ্য আকারে ৪০ ফুট লম্বা আর  ১৫ফিট  প্রস্তের বিশাল আকৃতির এই নৌকো গুলোর কোন-কোনটির ধারন ক্ষমতা প্রায় ১০ থেকে ২৫ হাজার আর  ১২ থেকে ১৫ জন মাঝি আর ইট নামানোর শ্রমিক থাকে। ইট বিক্রেতা ও স্হানীয় ক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ব্রিটিশ আমল থেকে বাঞ্ছারামপুর ও নবীনগর উপজেলায় নিয়মিতভাবে  নৌকায় ভরা ইট বিক্রি করতে আসে দেশের নানা এলাকা থেকে।এরমধ্যে রয়েছে নরসিংদী, না.গঞ্জ,নবীনগরের বাইশমৌজা,কুমিল্লার চান্দিনা,মুরাদনগর,টঙ্গী,মুন্সিগঞ্জ প্রভৃতি এলাকার বিক্রেতা। মাঝিদের থাকা, খাওয়া,  রান্না সবকিছুই ইট বোঝাই নৌকাগুলোতেই  হয়ে থাকে।ইটের হাটের ক্রেতারা আসেন বহু দূর-দূরান্ত থেকে।কেউ খালি নৌকা নিয়ে আসেন,আবার রাস্তার পাশে খালঁগুলোতে নৌকা ডুকাতে পারলে ট্রাকটর, নসিমন,পাওয়ার ট্রলি নিয়ে যার যতটুকু প্রয়োজন সাধ্যমত ইট কিনে নিচ্ছেন।