এবার পুরুষ যৌনকর্মীদের নিয়ে তৈরি হল বাংলা ছবি!
---
বিনোদন ডেস্ক :বলা হয়ে থাকে, কলকাতার পুরুষ যৌনকর্মীরা রয়েছেন বহু দশক ধরে। একটা সময় বলা হতো, ফ্রি স্কুল স্ট্রিটে যদি কোন সুবেশ পুরুষকে দেখা যায় হাতে রুমাল বেঁধে দাঁড়িয়ে রয়েছেন, তবে বুঝতে হবে তিনি আসলে যৌনকর্মী। ঠিক কবে থেকে কলকাতায় ‘জিগোলো’ পেশাটির উদ্ভব হয়, সে সম্পর্কে কোন প্রামাণ্য তথ্য সেভাবে পাওয়া যায় না। এই পুরুষতান্ত্রিক সমাজে মহিলা যৌনকর্মী, এসকর্ট সার্ভিস বা সোনাগাছির অন্দরমহল নিয়ে তাড়া তাড়া রিসার্চ পেপার প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু পুরুষ যৌনকর্ম নিয়ে কলকাতা দূরে থাকে, এদেশেই খুব বেশি গবেষণা-তথ্যানুসন্ধান ঘটেনি। তার একটি বড় কারণ হল, পুরুষ যৌনকর্মীরা সম্পূর্ণতই স্বেচ্ছায় এই পেশায় আসেন। এখানে কোন ট্র্যাফিকিং ঘটে না। মফস্বলের বা গ্রামের মেয়েদের যেমন তথাকথিত ‘চরিত্র’ নষ্ট করে এই পেশার দিকে ঠেলে দেওয়া হয়, পুরুষদের ক্ষেত্রে তেমনটা হওয়ার অবকাশ নেই। কিন্তু তা বলে এই নয় যে সব পুরুষ যৌনকর্মীই কোন প্রতিকূল পরিস্থিতি ছাড়াই, নেহাত শখে এই পেশা বেছে নেন।
জানা যায়, চরম দারিদ্র, প্রিয়জনদের চিকিৎসার বিপুল খরচ, অনেক সময় সন্তানের মুখ চেয়েও বহু পুরুষ অল্প সময়ে অনেক বেশি অর্থ উপার্জনের পথ হিসেবে বেছে নেন এই পেশা। বছর কয়েক আগে মুক্তিপ্রাপ্ত বলিউড ছবি ‘দেশি বয়েজ’ এই বিষয়ের উপর ভিত্তি করে নির্মিত হলেও, সেখানে উপস্থাপন ছিল একেবারেই বাণিজ্যিক এবং অনেকটাই কমিক্যাল। কিন্তু হিন্দি মশালা ছবির রেসিপি অনুসারে উচ্চবিত্ত পার্টিতে মেয়েদের মনোরঞ্জন করা আর বাস্তবের মাটিতে যৌনক্ষুধাতাড়িত কোন প্রৌঢ়াকে শারীরিক তৃপ্তি দেওয়া এক জিনিস নয়। সেখানে হাস্যরসের কোন অবকাশ নেই। দীর্ঘদিন এই পেশায় থাকতে থাকতে তাই অনেক যুবকই মানসিক রোগগ্রস্ত হয়ে পড়েন। তাঁদের জীবনযাপন আর স্বাভাবিক থাকে না।
অনেকটা এমনই এক গল্প নিয়ে নির্মিত হয়েছে রাজীব চৌধুরীর প্রথম ছবি ‘রোম্যান্টিক নয়’। মফস্বল থেকে শহরে আসা এক যুবকের কীভাবে স্বপ্নভঙ্গ হয়, কীভাবে অনেক অর্থ উপার্জনের আশায় সে ক্রমশই জড়িয়ে পড়ে ‘জিগোলো’ সার্ভিসের সঙ্গে, সেই নিয়েই গল্প। সে একটি সুস্থ স্বাভাবিক রোম্যান্টিক সম্পর্ক চায়, পরিবর্তে পরিস্থিতি তাকে বাধ্য করে প্রেমহীন শারীরিক মিলনে। ছবিতে প্রধান ভূমিকায় রয়েছেন সাহেব ভট্টাচার্য ও প্রিয়াঙ্কা সরকার। এছাড়া অন্যান্য চরিত্রে রয়েছেন জুন মালিয়া, পার্থসারথি, রাজেশ শর্মা, সায়নী দত্ত এবং প্রদীপ মুখোপাধ্যায়। ছবির প্রযোজক ওমপ্রকাশ সারাওগি।