রবিবার, ২৩শে এপ্রিল, ২০১৭ ইং ১০ই বৈশাখ, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

কসবায় নিজ গৃহে গ্রাম্য কবিরাজকে গলা কেটে হত্যা

AmaderBrahmanbaria.COM
ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৭

কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) উপজেলা সংবাদদাতা : ব্রাহ্মণবড়িয়ার কসবা উপজেলার কায়েমপুর ইউনিয়নের জগন্নাথপুর গ্রামে গত শনিবার (১৮/০২/২০১৭) ভোর রাতে ফরিদ মিয়া (৪৭) নামের এক গ্রাম্য কবিরাজকে নিজ গৃহে গলা কেটে হত্যা করেছে দূর্বৃত্তরা। খবর পেয়ে কসবা থানা পুলিশ গতকাল শনিবার সকালে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।
নিহত ফরিদ মিয়া (৪৭) উপজেলার কায়েমপুর ইউনিয়নের জগন্নাথপুর গ্রামের মৃত আঃ রাজ্জাকের পুত্র। তিনি পেশায় একজন কবিরাজ। তিনি তিন কন্যা সন্তানের জনক।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে; কবিরাজ ফরিদ মিয়ার স্ত্রী বিউটি বেগম বাবার বাড়িতে যাওয়ার সুযোগে পুর্ব শত্রুতার জেরে গত শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টায় রোগী সেজে চিকিৎসা নেয়ার জন্য কবিরাজ ফরিদ মিয়াকে ডাক দেয় এক ব্যাক্তি। পাশের ঘরে থাকা ফরিদ মিয়ার স্কুল পড়–য়া দুই নাতনী রোগীকে তার নানা ঘরে নেই পার্শ্ববর্তী আবদুল মজিদের বিয়ে বাড়িতে আছে বলে জানায়। তখন রোগী সেজে আসা ব্যক্তি তার মোবাইল ফোনে ডেকে ফরিদ কবিরাজকে ঘরে নিয়ে আসে। এ সময় রোগী সেজে আসা ব্যক্তি সাথে করে বিস্কুট, আপেল ও এক বোতল প্যারাসুট নারিকেল তেল নিয়ে এসে ফরিদ মিয়ার ঘরে রাতযাপন করে।
গতকাল শনিবার সকালে কাজের লোক এসে দরজা খোলে ঘরে প্রবেশ করে ফরিদ মিয়াকে হাত ও পা বাঁধা অবস্থায় গলা কাটা দেখতে পেয়ে চিৎকার শুরু করে। খরব পেয়ে কসবা থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে।
বাড়িতে থাকা ফরিদ মিয়ার নাতনি সপ্তম শ্রেণীতে পড়–য়া বিলকিছ আক্তার বলেন; রাতের বেলায় এক ব্যক্তি চিকিৎসার জন্য বাড়িতে এসেছিলেন। তিনি রাতে ওই ঘরে ছিলেন। সকালে কাজের লোকজন কাজ করতে গিয়ে কবিরাজ দাদাকে হাত-পা বাধা গলাকাটা লাশ দেখতে পায়। এ সময় ওই লোকটিকেও পাওয়া যায়নি।
স্বামীর মৃত্যু খবর পেয়ে বাড়িতে আসেন স্ত্রী বিউটি আক্তার ও তিন কন্যা সন্তান। গতকাল শনিবার সকালে নিহতের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্য। স্বামীকে হারিয়ে স্ত্রী বিউটি আক্তার নির্বাক। তিনি বারবার মুর্ছা যাচ্ছেন। তাঁর মাথায় পানি ঢালা হচ্ছে। বড় মেয়ে জান্নাত (৬), মেঝে মেয়ে জেরিন (৩) এবং ছোট মেয়ে ছুরাইয়া আক্তারের বয়স ৪ মাস। কেউ বুঝে উঠতে পারেনি যে তাঁর বাবা চির বিদায় নিয়ে চলে গেলেন না ফেরার দেশে।
স্ত্রী বিউটি আক্তার বলেন; পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আমার স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে। আমি এ ঘটনায় জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের দাবী করছি।
কাইমপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. ইয়াকুব আলী ভূইয়া জানান, নিহত ফরিদ মিয়া গ্রাম-গঞ্জে কবিরাজী চিকিৎসা করতেন।
কসবা থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, পূর্ব শত্রুতার জের ধরেই পরিকল্পিত ভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে। লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে।