পার পেলেন এসপি, ব্যাখ্যা দিতে হবে আইজিপিকে
নিজস্ব প্রতিবেদক : মারা যাওয়ার পরও পলাতক দেখিয়ে ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ার রাজাকার ওয়াজ উদ্দিনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা চলায় নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে পার পেয়েছেন ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার (এসপি) সৈয়দ নূরুল ইসলাম।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে দুই সদস্যের ট্রাইব্যুনাল শুনানির পর এসপিকে সতর্ক করে দিয়ে তার ক্ষমার আবেদন মঞ্জুর করেন।
এর আগে সকালে আইনজীবী এ এম আমিনউদ্দিনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তলবে হাজির হয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করেন এসপি সৈয়দ নূরুল ইসলাম।
এদিকে এসপিকে ক্ষমা করলেও এ বিষয়ে এখন আইজিপি এ কে এম শহীদুল হকের নিজ স্বাক্ষরিত বক্তব্য চেয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। মৃত ওয়াজ উদ্দিনকে পলাতক দেখিয়ে ট্রাইব্যুনালে প্রতিবেদন দেয়ার বিষয়ে পুলিশের মহাপরিদর্শক যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন, সেখানে তার বদলে আইনজীবীর স্বাক্ষর থাকায় ওই ব্যাখ্যা গ্রহণ করেনি আদালত। বিচারক আইজিপিকে দশ দিনের মধ্যে নিজের স্বাক্ষরে এ বিষয়ে লিখিত ব্যাখ্যা আদালতে জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন
ট্রাইব্যুনাল বলেছেন, আইনজীবীর মাধ্যমে ব্যাখ্যা দিলে হবে না। আইজিপির নিজ স্বাক্ষরিত বক্তব্য লাগবে।
এর আগে গত ৩১ জানুয়ারি ময়মনসিংহের এসপিকে ১৬ ফেব্রুয়ারি হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।
ওয়াজ উদ্দিনের সঙ্গে একই মামলায় ফুলবাড়িয়ার আলবদর সদস্য রিয়াজ উদ্দিন ফকিরের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের সূচনা বক্তব্য (ওপেনিং স্টেটমেন্ট) উপস্থাপন ও সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর দিন ধার্য ছিল ওই দিন। প্রসিকিউশনের আবেদনে ওয়াজ উদ্দিনকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়ে সেটিও পিছিয়ে ১৬ ফেব্রুয়ারি পুনর্নির্ধারণ করেন ট্রাইব্যুনাল। রাষ্ট্রপক্ষে ট্রাইব্যুনালে শুনানি করছেন প্রসিকিউটর ঋষিকেশ সাহা।
গত বছরের ১১ ডিসেম্বর রিয়াজ উদ্দিন ফকির ও ওয়াজ উদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু করেন ট্রাইব্যুনাল। পরে একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল গত ১১ জানুয়ারি একটি প্রতিবেদন সম্প্রচার করে। যাতে বলা হয়, মৃত ব্যক্তিকে পলাতক ঘোষণা করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার চলছে যুদ্ধাপরাধী ওয়াজ উদ্দিনের।
এমনকি তার পক্ষে রাষ্ট্রীয় খরচে নিয়োগ দেয়া হয়েছে আইনজীবীও। পরদিন গত ১২ জানুয়ারি কিভাবে মামলাটি চলছে, সে বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ট্রাইব্যুনাল। ওই দিন মৌখিকভাবে প্রসিকিউটরদের কাছে এ বিষয়ে জানতে চান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে দুই সদস্যের ট্রাইব্যুনাল। ওই সময় আদালতে চিফ প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপু, প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আলী ও ঋষিকেষ সাহা উপস্থিত ছিলেন।