এমপির এপিএসের অফিসে গুলি : মূল হোতা আটক
নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর পল্টনে সংসদ সদস্য গাজী গোলাম দস্তগীরের এপিএস- এর কার্যালয়ে গুলিবর্ষণের ঘটনায় মূল হোতাকে আটককরেছে র্যাব। গ্রেফতারকৃত মো. মাসুদ রানা আশিক (২৪) নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ উপজেলার মাছিমপুর গ্রামের শহিদুল্লাহ ভূঁইয়ার ছেলে। তিনি স্থানীয় ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত।
বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৫টায় রাজধানীর কাওরানবাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন এ তথ্য জানানো হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন, র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল খন্দকার গোলাম সারোয়ার।
তিনি জানান, গত ১২ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জের সংসদ সদস্য গাজী গোলাম দস্তগীরে এপিএস কামরুজ্জামান হিরার পল্টনস্থ অফিসে গুলিবর্ষণের ঘটনায় মোশারফ হোসেন নামে এক ছাত্রলীগ কর্মী গুলিবিদ্ধ হন। এ ঘটনায় মোশারফের বাবা একটি মামলা দায়ের করেন। পরে র্যাব সদস্যরা ছায়া তদন্তে নামেন এবং মূল হোতা মো. মাসুদ রানা আশিককে নজরদারিতে রাখা হয়। বৃহস্পতিবার ভোরে কুমিল্লা জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার গোলিয়ার ইউনিয়ন থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি আরো জানান, গ্রেফতারকৃত আশিক প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সাথে জড়িত বলে স্বীকার করেছেন। নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ উপজেলায় আধিপত্য বিস্তার, ক্ষমতার দ্বন্দ্ব ও পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ওই ঘটনা ঘটে।
আশিক আগেও একবার র্যাবের হাতে আটক হয়েছিলেন জানিয়ে খন্দকার গোলাম সারোয়ার বলেন, ২০১৫ সালের ৩১ জানুয়ারি আশিক ও তার সহযোগী আশরাফুল, মোহাম্মদ আলী ওরফে মাহাকে একটি পিস্তল, আটটি রামদাসহ গ্রেফতার করা হয়েছিল। ওই ঘটনায় তিনি অনেক দিন কারাভোগও করেছেন। কারাগারে থাকাকালে বাদশা নামের এক হত্যা মামলার আসামির সাথে তার পরিচয় হয়। পরে সেই বাদশার মাধ্যমে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের রাইফেল আলমগীর নামের মাদক ব্যবসায়ীর সাথে আশিকের সম্পর্ক হয়। রাইফেল আলমগীর অবৈধ অস্ত্র ব্যবসায়ী।
র্যাব জানায়, পল্টনের ঘটনার ৩ থেকে ৪ দিন আগে ভুলতার কয়েতপাড়া এলাকায় ভূমিদস্যুবিরোধী একটি মিটিংয়ে মাসুদ রানা আশিক তার ঘনিষ্ঠ মাদক ও অস্ত্র ব্যবসায়ী আলমগীর, আল আমিনসহ আরো কয়েকজন উপস্থিত হন। ওই মিটিংয়ে মোশাররফ হোসেনের সাথে মাসুদ রানা আশিকের তর্ক-বিতর্ক ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
ওই ঘটনার পর নিজের আধিপত্য বিস্তার ধরে রাখতে মরিয়া হয়ে ওঠেও আশিক। পরে রায়ফেল আলমগীরের সাথে যোগাযোগ করে ৭ দশমিক ৬৫ মি.মি দুটি পিস্তল ও গুলি ভর্তি ম্যাগাজিন সংগ্রহ করেন তিনি।
১২ ফেব্রুয়ারি আলমগীরের গাড়িতে করে মাসুদ রানা ও তার দুই সহযোগী সংসদ সদস্য গাজী গোলাম দস্তগীরের এপিএস এর কার্যালয়ে গিয়ে ছাত্রলীগকর্মী মোশারফকে গুলি করে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
এক প্রশ্নের জবাবে সারোয়ার বলেন, গুলিবিদ্ধ মোশারফও মাদক সেব করতেন। তবে তিনি মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত কি না এখনো জানা সম্ভব হয়নি। আশিকের দুই সহযোগীকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।