শুক্রবার, ১৭ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ইং ৫ই ফাল্গুন, ১৪২৩ বঙ্গাব্দ

ইভিএম দুরভিসন্ধিমূলক : বিএনপি

AmaderBrahmanbaria.COM
ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৭

নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ই-ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের বিষয়টি বিবেচনার যে কথা বলছেন, তা দুরভিসন্ধিমূলক বলে দাবি করেছে বিএনপি।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই দাবি করেন। তিনি বলেন, এই পদ্ধতি চালু হলে ভোট ‘ম্যানিপুলেট’ (কারসাজি) করা সরকারের জন্য সহজ হবে। এটি জনগণের ভোটকে নিজ উদ্দেশ্য সাধনে জালিয়াতি করার প্রচেষ্টামাত্র। এটি প্রধানমন্ত্রীর আরেকটি ভেল্কিবাজিরই বর্ধিত প্রকাশ।

গতকাল বুধবার জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য সব বিধিবিধানের সঙ্গে সংগতি রেখে মানুষের ভোটাধিকার অধিকতর সুনিশ্চিত করার স্বার্থে আগামী নির্বাচনে ই-ভোটিং প্রবর্তন করার পরিকল্পনা বিবেচনায় নেওয়া যেতে পারে।

প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের বিরোধিতা করে রিজভী বলেন, ১/ ১–এর সময় সাবেক সিইসি এ টি এম শামসুল হুদা ইভিএম চালুর প্রস্তাব করেছিলেন। তখন বুয়েটসহ কম্পিউটার বিশেষজ্ঞ এবং প্রায় সব রাজনৈতিক দল সেটির বিরোধিতা করেছিল। সিইসি কাজী রকিবউদ্দীন আহমেদও এই পদ্ধতিটি চালুর জোর প্রচেষ্টা চালান। পরীক্ষামূলকভাবে ২০১০ সালে প্রথম চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কয়েকটি কেন্দ্রে পরীক্ষামূলক এই পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ হয়। ওই সময়ে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এই পদ্ধতির বিরুদ্ধে আপত্তি তোলায় ইভিএম নিয়ে কাজী রকিবউদ্দীন ইভিএম চালু থেকে সরে আসেন।

রিজভী বলেন, ভারত, জার্মানি, সুইজারল্যান্ড, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশ ই-ভোটিং পদ্ধতি চালু করলেও এটির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয় এবং সেটি বন্ধ করে দেয়া হয়। এই পদ্ধতি দূর থেকে হ্যাক করা সম্ভব বলেই স্বচ্ছ নির্বাচনের স্বার্থে এই পদ্ধতি বাতিল করা হয়েছে সেসব দেশে। বাংলাদেশে এখনো অনেক মানুষ নিরক্ষর। এত টেকনিক্যাল বিষয় বোঝা তাদের জন্য কষ্টসাধ্য। এই পদ্ধতিতে ই-ভোটিংয়ের সার্ভার সরকার নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। সুতরাং, সরকারের জন্য ভোট ম্যানিপুলেট করা খুবই সহজ হবে।

রিজভী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী এখন জনগণের দৃষ্টিকে সিইসির দিক থেকে অন্যত্র সরানোর জন্য ই-ভোটিং ব্যবস্থার আরেকটি ম্যাজিক জনগণের সামনে প্রদর্শন করছেন। এটি প্রধানমন্ত্রীর ভোটারবিহীন নির্বাচন করার আরেকটি ডিজিটাল প্রতারণা কি না, তা নিয়ে জনমনে ব্যাপক সংশয় দেখা দিয়েছে।’ বিএনপির এই নেতা দাবি করেন, নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য ই-ভোটিং চালু করার ঘোষণা জনগণকে আরেকটি তামাশার বায়োস্কোপ দেখানো ছাড়া অন্য কিছু নয়। যদিও জনগণকে ধোঁকা দেওয়ার বিদ্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভালোভাবেই জানেন।