রবিবার, ২৩শে এপ্রিল, ২০১৭ ইং ১০ই বৈশাখ, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

বিশ্ব নেতৃত্বের আসনে বসছে চীন

AmaderBrahmanbaria.COM
জানুয়ারি ২৬, ২০১৭

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ক্ষমতায় আসার পরপরই নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে প্রথম ধাপ অগ্রসর হয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইতিমধ্যে আন্তঃপ্রশান্ত মহাসাগরীয় অংশীদারিত্ব চুক্তি (টিপিপি) থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে দক্ষিণ চীন সাগরে বেইজিংয়ের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণের বিরুদ্ধে হুমকি দিয়েছে তার প্রশাসন।

চীন তার পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ওয়াশিংটনকে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে হবে বলে সতর্ক করে দিয়েছে। চীন-মার্কিন এই যুদ্ধাবস্থায় এশিয়ার ভূ-রাজনীতিতে কেমন প্রভাব পড়তে পারে সেই প্রশ্ন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার এশিয়া নীতির আলোকে ১২ দেশের টিপিপি চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সরে যাওয়া চীনের জন্য লাভজনক। এতে এশিয়ায় আঞ্চলিকভাবে প্রতাপশালী নেতা হিসেবে আবির্ভূত হবেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।

ট্রাম্প সেই সুযোগ তৈরি করে দেয়ার পর দক্ষিণ চীন সাগরে বেইজিংকে থামাতে চাওয়া প্রায় অসম্ভব। এতে যুক্তরাষ্ট্রকে সত্যি সত্যিই চীনের সামরিক শক্তির মোকাবেলা করতে হবে।

চায়না ফরেন অ্যাফেয়ার্স ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ সুন হাও বলেন, ‘দক্ষিণ চীন সাগরে বেইজিংয়ের তৎপরতা যুক্তরাষ্ট্র থামাতে চাইলে মারাত্মক সামরিক সংঘাতের জন্ম দেবে। ট্রাম্প প্রশাসনের এ ধরনের হুমকি যুদ্ধ ঘোষণার মতোই এবং তা হাস্যকর বটে।’

দক্ষিণ চীন সাগরে প্রতিবেশী আরও অনেক দেশের মালিকানার দাবি রয়েছে। তবে বেইজিং সেসব স্বীকার করে না। এমনকি গত বছর আন্তর্জাতিক আদালতের একটি রায়কে থোড়াই কেয়ার করেছে চীন। সেখানে নির্মিত কৃত্রিম দ্বীপের সামরিকায়ন অব্যাহত রেখেছে। চীন সামরিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে অনেক পিছিয়ে রয়েছে। কিন্তু দেশটি এখন নৌ বাহিনীর শক্তি বাড়াতে জোর দিয়েছে। ইতিমধ্যে নানা ধরনের সাবমেরিন ও জাহাজবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করেছে, যাতে সামুদ্রিক যুদ্ধে ওয়াশিংটনকে ঠেকাতে পারে।

ফরাসি থিংকট্যাংক ফাউন্ডেশন অব স্ট্রাটেজিক রিসার্চের গবেষক ভ্যালেরি নিকুয়েট বলেন, চীন জানে তারা মুখোমুখি যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রকে পরাজিত করতে পারবে না। তাই নৌযুদ্ধের এমন প্রস্তুতি ও সক্ষমতা বাড়াচ্ছে যাতে এশিয়ায় হস্তক্ষেপ করার আগে ওয়াশিংটন দুবার চিন্তা করে। সেখানে সামরিক সংঘাতে জড়ালে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য তা চরম ব্যয়বহুল হয়ে দাঁড়াবে।

গত সপ্তাহে সুইজারল্যান্ডে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের সম্মেলনে শি জিনপিং মুক্ত বাণিজ্যের পক্ষে কথা বলেছেন এবং বাণিজ্য যুদ্ধের ব্যাপারে সতর্ক করেছেন।

আইএইচ মার্কিটের এশীয় অর্থনীতিবিষয়ক প্রধান রাজিব বিশ্বাস বলেন, ভবিষ্যতে এশিয়া বাণিজ্য নীতির রূপরেখা তৈরিতে প্রভাবশালী ভূমিকা রাখতে চায় চীন। এশিয়ার প্রতিবেশীদের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক বৃদ্ধি এবং ইউরোপের সঙ্গে বাজার অর্থনীতির উন্নয়নে ইতিমধ্যে ‘ওয়ান বেল্ট-ওয়ান রোড’ নীতি নিয়েছে। এরই মধ্যে চীনকে একঘরে করার মার্কিন অস্ত্র ছিল টিপিপি। যুক্তরাষ্ট্রের টিপিপি ছাড়ার ফলে এখন এশিয়ায় চীনের একক আধিপত্যের সুযোগ তৈরি হয়েছে।