নবীনগরে অর্থ লোভে বাবার দীর্ঘ দিনের তিন সন্তানের খুনের রহস্য আদালতে স্বীকারোক্তি
নিজস্ব প্রতিনিধি : ব্রাহ্মণবাড়িয়া নবীনগর উপজেলার নাটঘর গ্রামে টাকার লোভে একে একে নিজের তিন সন্তানকে হত্যা করেছেন এক পাষণ্ড বাবা। আদালতে দেয়াস্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এমনই লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছেন ঘাতক বাবা সাজু মিয়া।
সোমবার তিনি সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুলতান সোহাগ উদ্দিনের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
এর মধ্য দিয়ে প্রায় ২৫ বছর ধরে চলতে থাকা খুনের ঘটনার রহস্য উন্মোচিত হলো। সর্বশেষ নিজের ছেলে মোজাহিদকে (১০) নৃশংসভাবে হত্যা করেন সাজু।
এলাকাবাসী ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায় ২৪-২৫ বছর আগের সাজু মিয়ার তিন বছর বয়সী ছেলে উবায়দুলের মরদেহ পাওয়া যায় বাড়ির পাশের পাটখেতে। ৮-১০ বছর আগে তার ছোট ভাই তিন বছর বয়সী রাকিবের মরদেহ পাওয়া যায় বাড়ির পাশের পুকুর পাড়ে।
প্রথম ঘটনায় এলাকার সাজেদ আলী, কুদ্দুস আলীসহ অনেককে দায়ী করা হয়। এ ঘটনায় মামলাও হয়। পরে গ্রাম্য সালিসে অভিযুক্তদের জরিমানা করা হয়। রাকির মৃত্যুর পর সাজু মিয়া কাউকে দোষারোপ করেননি। তখন উল্টো সাজু মিয়ার বিরুদ্ধেই হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ উঠে। সপ্তাহ দুয়েক আগে সে তার একমাত্র মেয়েকেও গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যার চেষ্টা চালায় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সর্বশেষ গত রোববার (৮ জানুয়ারি) দুপুরে পুলিশ কুঁড়িঘর গ্রামের ঈদগাহ সংলগ্ন একটি কবরস্থানে পাশ থেকে গলায় রশি পেঁচানো অবস্থায় ১০ বছর বয়সী শিশু মোজাহিদের মরদেহ উদ্ধার করে। তার মুখে আঘাতের চিহ্ন ছিল। পরে সোমবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে মুজাহিদের মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। বিকেলে গ্রামের কবরস্থানে তার মরদেহ দাফন করা হয়।
নবীনগর থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মেজবাহ উদ্দিন ঘাতকের জবানবন্দি দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সাজু আদালতের মোজাদিকে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। আমরা ধারণা করছি- পূর্বের মতোই অন্যকে ফাঁসিয়ে টাকা আদায়ের জন্য সাজু তার ছেলে মোজাহিদকে হত্যা করেছে।