আই লুক গুড: ইসলামী ব্যাংকে পরিবর্তন নিয়ে অর্থমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক : ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে পরিবর্তনে ব্যাংকটির আর্থিক খাতে কোনো প্রভাব পড়বে না বলে মনে করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত। তিনি বলেন, ‘নতুন পরিচালনা পর্ষদে যারা এসেছেন তাদেরকে আমার কাছে ভালই মনে হয়। এদের দুইজন আমার পরিচিত। এরা কর্মকর্তা ছিলেন। আই লুক গুড।’
রবিবার অর্থ মন্ত্রণালয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) নেতাদের সঙ্গে মতবিনিয়কালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
সম্প্রতি ইসলামী ব্যাংকে নতুন চেয়ারম্যান এবং ভাইস চেয়ারম্যান নিয়োগ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি পরিবর্তন এসেছে ইসলামী ব্যাংক ফাউন্ডেশনেও।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘ইসলামি ব্যাংক তো এক নম্বর ব্যাংক। ব্যাংকটি অনেক প্রফিট করে। কিন্তু প্রফিটের টাকা কোথায় যায় সেটা নিয়ে প্রশ্ন ছিল। আর এর বিদেশি অংশীদারদের মধ্যেও পরিবর্তন হয়েছে কয়েক বছরে আগে। এদেরও দাবি ছিল ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আনার। সবকিছু বিবেচনায় মনে হয় এমডি এবং চেয়ারম্যান পরিবর্তন হয়েছে। আমার কাছে মনে হয়েছে ফেয়ার চেইঞ্জ।’
নতুন পরিবর্তনের মাধ্যমে একটি বিশেষ গোষ্ঠীর কাছে ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ চলে গেছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আই ক্যান নট সে। আমি এখনো বলতি পারি না। আমি সবাইকে চিনিও না। তবে কিছু সময় পরে আমি ব্যবস্থাপনা পর্ষদের সঙ্গে বসবো।’
মতবিনিময় সভায় মন্ত্রীর কাছে এমসিসিআই নেতারা বাংলাদেশের অর্থনীতির সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ এবং সুপারিশসহ ২২ দফা দাবি পেশ করেন। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ব্যবসাবান্ধব অবকাঠামো উন্নয়ন, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, গ্যাস-বিদ্যুতের সহজলভ্যতা, ভূমির প্রাপ্যতা সহজীকরণ, নকল কারখানা বন্ধে ব্যবস্থা, কৃষি পণ্য পরিবহনে রেলের ব্যবহার ও নতুন ভ্যাট আইন সম্পর্কে অবহিতকরণ।
এমসিসিআইয়ের সভাপতি নেহাত কবির জানান, ‘নতুন ভ্যাট আইন জুন থেকে কার্কর হবে। কিন্তু আমরা এ সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানি না। রুলসগুলো কি সেটিও জানি না। এটি যদি আমাদের না জানিয়েই কার্যকর করা হয় তাহলে আমরা কমপ্লাই করতে পারবো না। এটা কার্যকর করতে হলে আমাদেরকে ট্রানজিকশন পিরিয়ড দিতে হবে।’
জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের হাতে এখনো ৫/৬ মাস সময় আছে। আশা করছি এর মধ্যে এগুলো সমাধান হয়ে যাবে।’
এক ব্যবসায়ী নেতা বলেন, ‘কৃষি পণ্যের পরিবহন সমস্যার কারণে অনেক কৃষক তার ন্যায্য মূল্য পায় না। ট্রাকে এসব পণ্য পরিবহণে অনেক সময় লেড়ে যায়। এছাড়া শত শত ট্রাকের কারণে রাস্তায় যানজটের সৃষ্টি হয়। তাই পণ্য পরিবহনে বিকল্প হিসেবে ট্রেন ব্যবহার করা যায় কিনা সেটি বিবেচনার দাবি করছি। ’
এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘এটা অত্যন্ত সুন্দর প্রস্তাব। আমাদের মাথায়ই এই চিন্তা এতোদিন আসেনি। ট্রেনে আগে উন্নয়ন বাজেট বরাদ্দ হতো না। কিন্তু আমি এখন এতে বরাদ্দ দিচ্ছি। এটা হলে মন্দ না।’
ব্যবসায়ী তাবিথ আওয়াল বলেন, ‘অনেক ফেক ইন্ডাস্ট্রি নকল পণ্য উৎপাদন করে। এর ফলে ভোক্তারা প্রতারিত হয়। আইনশৃঙ্খরা বাহিনী যথেষ্ট পদক্ষেপ নিতে পারে না। এটি বন্ধ হওয়া খুবই জরুরি। এর ফলে অনেক মানুষ ভুল চিকিৎসায় মারাও যায়। একজন ডায়বেটিসের রোগীর রক্ত সংগ্রহ করার যন্ত্রও ফেক কোম্পানি তৈরি করে। ফলে ভুল রক্তের ভুল ডায়গোনেসিস হয়। একারণে রোগীকে অসময়ে ওষুধ খেতে হয়। ফলে রোগীর মৃত্যুর কারণও হয়।’
মন্ত্রী এসব শুনে বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘এসব তো অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত। কী করা যায়? আমি তো ফিজিক্যাললি স্লো হয়ে গেছি।’ এটা শুনে একজন ব্যবসায়ী নেতা বলেন, ‘স্যার আপনি কনফিডেন্স দিলেই হয়।’