সোমবার, ৯ই জানুয়ারি, ২০১৭ ইং ২৬শে পৌষ, ১৪২৩ বঙ্গাব্দ

এলএনজি টার্মিনাল: ভাসমান স্টেশনের কাজ চলছে

AmaderBrahmanbaria.COM
জানুয়ারি ৮, ২০১৭

নিজস্ব প্রতিবেদক : চট্টগ্রামে দৈনিক ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহের লক্ষ্যে উপকূল থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে সাগরবক্ষে চলছে ভাসমান স্টেশন এফএসআরইউ (ফ্লটিং স্টোরেজ অ্যান্ড রিগ্যাসটিফিকেশন ইউনিট) স্থাপনের কাজ। ইতিমধ্যে মহেশখালী থেকে আনোয়ারা পর্যন্ত পাইপলাইন স্থাপনের কাজও শেষ। আর আনোয়ারা থেকে কর্ণফুলী গ্যাসের পাইপলাইনে গ্যাস সরবরাহের জন্য প্রায় ১৫০ কোটি টাকার আপগ্রেডেশন প্রকল্পও নিয়েছে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড।

 

সাগরে অবস্থান করা জাহাজ থেকে তরল গ্যাসকে গ্যাসীয় অবস্থায় রূপান্তর করে তা পাইপলাইনের মাধ্যমে উপকূলে পাঠানো হবে জানিয়ে পেট্রোবাংলার একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, প্রকল্পের অধীনে ৩০ ইঞ্চি ব্যাসের পাইপলাইনের কাজ শেষ হয়ে গেছে। এখন শুধু এফএসআরইউ স্থাপন নিয়ে কিছু গবেষণার কাজ চলছে।

তিনি জানান, দেরির কোনো সুযোগ নেই। এটি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের অগ্রাধিকার প্রকল্প। শুধুমাত্র সাগরের কোন পয়েন্টে এফএসআরইউ স্থাপন করা হবে তা নিয়ে জরিপ চলছে। আর সেখানে এসে দুটি জাহাজ ভিড়বে। একটি থেকে এলএনজি গ্যাস দেয়া হবে এবং অপর জাহাজে তরল গ্যাসকে গ্যাসীয় অবস্থায় রূপান্তর করে পাইপলাইনে ট্রান্সফার দেয়া হবে। সাগরের নিচ দিয়ে সেই পাইপে করে মহেশখালী, বাঁশখালী হয়ে আনোয়ারায় পৌঁছাবে এই গ্যাস। ইতিমধ্যে স্থল অংশে পাইপলাইনের কাজ শেষ। এর মাধ্যমে দৈনিক ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়া যাবে। চলতি বছরের শেষ নাগাদ হয়তো তা চালু করা যেতে পারে।

এদিকে এলএনজি টার্মিনাল থেকে প্রাপ্ত গ্যাস গ্রহণ করবে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (কেজিডিসিএল)। কর্ণফুলী গ্যাস কোম্পানি এই গ্যাস গ্রহণ করার জন্য প্রস্তত কি-না জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির উপমহাব্যবস্থাপক খায়েজ আহমেদ মজুমদার বলেন, ‘এলএনজি পাইপলাইনে হাই প্রেসারে গ্যাস থাকবে। সেই গ্যাস আমাদের পাইপলাইনে নেয়ার জন্য অনেক সাবস্টেশন ও স্থানে স্থানে পাইপলাইন সংস্কার করতে হবে।’

তিনি জানান, কেজিডিসিএল প্রায় ১৫০ কোটি টাকার একটি আপগ্রেডেশন প্রকল্প নিয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় আনোয়ারা থেকে এলএনজির গ্যাস রিসিভ করা হবে এবং নগরীর অভ্যন্তরে বিভিন্ন স্থানে ৪০ থেকে ৫০ বছরের পাইপলাইন পরিবর্তনের মাধ্যমে সরবরাহ করা হবে। আর এই গ্যাস পেলে নগরীতে কোনো গ্যাস সঙ্কট থাকবে না।

কেজিডিসিএল কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, নগরীতে দৈনিক ৪৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের প্রয়োজন হলেও প্রতিদিন সরবরাহ করা হচ্ছে ২৩০ থেকে ২৪০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। আর এতেই নগরীতে গ্যাসের চাপ কমে যায় এবং মানুষ দুর্ভোগে পড়ে।

এলএনজি ছাড়া নগরীর গ্যাস সমস্যার কোনো সম্ভাবনা নেই জানিয়ে চিটাগাং চেম্বারের প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলম বলেন, ‘চট্টগ্রামের আনোয়ারা ও মিরসরাইয়ে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল হচ্ছে, গ্যাসের অভাবে অনেক শিল্পকারখানা ঠিকমতো চালু রাখা যাচ্ছে না। চলতি বছরের শেষে বা আগামী বছরের শুরুতে এলএনজি এলে সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে, গতি আসবে শিল্পায়নে।’

উল্লেখ্য, এলএনজি টার্মিনালের জন্য পেট্রোবাংলা এবং এক্সিলারেট এনার্জি লিমিটেডের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। সিঙ্গাপুরভিত্তিক এক্সিলারেট এনার্জি লিমিটেড প্রতিষ্ঠানটি এফএসআরইউ স্থাপনের কার্যক্রম ২০১৭ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করার কথা। সোনাদিয়ার প্রবেশমুখে স্থাপন করা হচ্ছে এই এফএসআরইউ ইউনিট। ২১ ডিগ্রি ৩৪ মিনিট ২৫ সেকেন্ড (উত্তর) ও ৯১ ডিগ্রি ৪৯ মিনিট শূন্য ৮ সেকেন্ড (পূর্ব) কিংবা ২১ ডিগ্রি ৩২ মিনিট শূন্য ১ সেকেন্ড ও ৯১ ডিগ্রি ৪৮ মিনিট শূন্য ৭ সেকেন্ড (পূর্ব) এই দুটি স্থানের যেকোনো একটিতে এফএসআরইউ স্থাপন করতে পারে এলএনজি টার্মিনাল বাস্তবায়নকারী সংস্থা পেট্রোবাংলা।

এ জাতীয় আরও খবর