সোমবার, ৯ই জানুয়ারি, ২০১৭ ইং ২৬শে পৌষ, ১৪২৩ বঙ্গাব্দ

বিশ্বে চলতি বছর প্রযুক্তি ব্যয় কমবে

AmaderBrahmanbaria.COM
জানুয়ারি ৮, ২০১৭

 

নিজস্ব প্রতিবেদক : চলতি বছর বিশ্বজুড়ে প্রযুক্তি ব্যয় কমবে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এবার প্রযুক্তি ব্যয় কসার পেছনে কয়েকটি বৈশ্বিক কারণ সক্রিয় রয়েছে। বিশেষত বিশ্বব্যাপী এক ধরনের রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ইতিমধ্যে তৈরি হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের অপ্রত্যাশিত জয়, ব্রেক্সিট বা ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে ব্রিটেনের না থাকার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এবং ডলারের শক্তিশালী মানের কারণে চলতি বছর বৈশ্বিক প্রযুক্তি ব্যয় কমতে পারে। সম্প্রতি কনজিউমার টেকনোলজি অ্যাসোসিয়েশন (সিটিএ) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমনটাই পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে।

 

সিটিএর বাজার গবেষণা বিভাগের জ্যেষ্ঠ পরিচালক স্টিভ কোনিগ বলেন, ২০১৬ সালে বিশ্বব্যাপী স্মার্টফোন ও অন্যান্য গ্যাজেটে ব্যয় ৯৫ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়েছে। কিন্তু চলতি বছর এ ব্যয় কমে ৯২ হাজার ৯০০ কোটি ডলারে ঠেকবে বলে মনে করা হচ্ছে। মার্কিন ট্রেড গ্রুপগুলোর জন্য এ পূর্বাভাসকে অশনিসংকেত বলে বিবেচনা করা হচ্ছে।

স্টিভ কোনিগ বলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা সত্ত্বেও গত বছর বিশ্বব্যাপী তথ্যপ্রযুক্তি ব্যয় বেড়েছে। কিন্তু মার্কিন নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয় ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন থেকে ব্রিটেনের বের হয়ে যাওয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত চলতি বছর বৈশ্বিক তথ্যপ্রযুক্তি খাতের ব্যয়ের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

সিটিএর এ জ্যেষ্ঠ পরিচালক বলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতার পাশাপাশি গত বছরের কিছু ঘটনা বিশ্বব্যাপী তথ্যপ্রযুক্তি ব্যয়ের ক্ষেত্রে এক ধরনের বৈষম্য তৈরি করতে পারে। এর ফলে প্রভাবিত হবে ব্যক্তি ও সরকারি খাতের বিনিয়োগ।

সিটিএর পূর্বাভাস অনুযায়ী, চলতি বছর কনজিউমার প্রযুক্তিখাতে ব্যয়ের প্রায় অর্ধেকই হবে স্মার্টফোন ডিভাইসে। অর্থাৎ এ বছর মোট প্রযুক্তি ব্যয়ের ৪৭ শতাংশই হবে বহু ব্যবহৃত স্মার্টফোনের মতো মোবাইল ডিভাইসের মাধ্যমে।

কনজিউমার ইলেকট্রনিকস শো উপলক্ষে আয়োজিত এক উপস্থাপনা অনুষ্ঠানে কোনিগ বলেন, মোবিলিটি বা যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে মোবাইল ডিভাইস সত্যিই বিশ্বকে এক অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। মোবাইল ডিভাইস খাতে কনজিউমার প্রযুক্তি বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে স্মার্টফোন।

বলা হচ্ছে, চলতি বছর কনজিউমার ইলেকট্রনিকস ইন্ডাস্ট্রির রাজস্ব ৭৫ হাজার ৪০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাবে। বৈশ্বিক কনজিউমার ইলেকট্রনিকস ইন্ডাস্ট্রির মোট রাজস্বের ৮১ শতাংশই স্মার্টফোন, ট্যাবলেট, ডেস্কটপ কম্পিউটার, ল্যাপটপ, টেলিভিশন, ক্যামেরা এবং স্মার্টঘড়ির মতো ভোক্তাপণ্য থেকে আসবে বলে মনে করা হচ্ছে। সিটিএর প্রতিবেদনে চলতি বছর প্রযুক্তিখাতের জন্য এই সাতটি পণ্যকে ‘ম্যাগনিফিসেন্ট সেভেন’ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে।

বিশ্বব্যাপী প্রযুক্তিবাজারে স্মার্টফোন প্রবৃদ্ধিতে এক ধরনের শ্লথগতি বিরাজ করছে। তবে স্মার্টঘড়ির মতো ভোক্তাপণ্যের চাহিদা বাড়ছে। এবারই প্রথম প্রযুক্তিখাতের রাজস্ব সরবরাহকারী পণ্য হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ‘শীর্ষ সাতে’ জায়গা পেয়েছে স্মার্টঘড়ি। বর্তমানে অ্যাপল, স্যামসাং, সনি, এলজি ও শাওমির মতো প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো স্মার্টঘড়ি খাতে ব্যবসা সমপ্রসারণে কাজ করছে।

জনপ্রিয় পরিধেয় প্রযুক্তিপণ্য স্মার্টঘড়ি বিষয়ে সিটিএর জ্যেষ্ঠ পরিচালক স্টিভ কোনিগ বলেন, বিশ্বব্যাপী আমরা স্মার্টঘড়ি ব্যবহারের প্রবণতা লক্ষ করেছি। বর্তমানে পরিধেয় প্রযুক্তিখাতে আকর্ষণীয় সব উদ্ভাবন পরিলক্ষিত হচ্ছে; যা নির্মাতা কোম্পানিগুলোর রাজস্ব প্রবৃদ্ধিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে।

সিটিএর পূর্বাভাসে নতুন বছর সামনে রেখে প্রযুক্তিখাতে ব্যয় কমার কথা বলা হলেও নতুন অনেক মৌলিক প্রযুক্তি এ বছর দেখা যাবে বলে জানানো হয়েছে। পাশাপাশি গত বছরের অনেক প্রযুক্তি এ বছর প্রযুক্তিবাজারের প্রবৃদ্ধির নিয়ামক হিসেবে কাজ করবে।

এ জাতীয় আরও খবর