আজ বঙ্গভবনে যাচ্ছে খালেদা জিয়ার প্রস্তাব
---
নিজস্ব প্রতিবেদক : নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দেওয়া প্রস্তাব রাষ্ট্রপতির সরকারি বাসভবন বঙ্গভবনে যাচ্ছে আজ মঙ্গলবার।
এদিন সকাল ১১টায় বিএনপির ভাইস চেয়ারপারসন মেজর জেনারেল (অব.) রুহুল আলম চৌধুরী ও সিনিয়র যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবির রিজভী খালেদা জিয়ার প্রস্তাবের লিখিত কপি বঙ্গভবনে পৌঁছে দেবেন।
সোমবার (০৫ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১০টায় রুহুল আলম বলেন, ‘খালেদা জিয়ার প্রস্তাব রাষ্ট্রপতির কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য আমরা সময় চেয়েছিলাম। মঙ্গলবার সকাল ১১টায় আমাদের সময় দেওয়া হয়েছে। আমরা মঙ্গলবার সকালে বঙ্গভবনে যাবো।’
নির্বাচন কমিশন (ইসি) পুনর্গঠন ও শক্তিশালী করার জন্য গত ১৮ নভেম্বর সংবাদ সম্মেলনে ১৩ দফা প্রস্তাব তুলে ধরেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। পরের দিন তার একান্ত সচিব এ বি এম সাত্তার রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিবকে ফোন দিয়ে খালেদা জিয়ার প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার জন্য রাষ্ট্রপতির সাক্ষাতের সুযোগ চান।
এই ফোনের কোনো সাড়া না পেয়ে ২৩ নভেম্বর দলের সহদফতর সম্পাদক বেলাল আহমেদ, মুনির হোসেন ও সহপ্রচার সম্পাদক আসাদুল করিম শাহীনকে দিয়ে বঙ্গভবনে একটি চিঠি পাঠায় বিএনপি। ওই চিঠিতেও রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বিএনপির প্রতিনিধি দলের সাক্ষাতের সুযোগ চাওয়া হয়। গত ১২ দিনে ওই চিঠির কোনো উত্তর পায়নি বিএনপি। এমন পরিস্থিতিতে খালেদা জিয়ার প্রস্তাবের লিখিত কপি রাষ্টপতির কাছে পৌঁছে দেওয়ার সুযোগ চায় বিএনপি।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার সকাল ১১টায় বঙ্গভবনে চিঠি নিয়ে যাওয়ার অনুমিত পায় তারা। এরইমধ্যে গুঞ্জন ওঠে বিএনপির প্রতিনিধি দল রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ পেয়েছে। সোমবার রাতে নয়াপল্টন কার্যালয় থেকে একটি মেসেজের মাধ্যমে বিএনপির ভাইস চেয়ারপারসন মেজর জেনারেল (অব.) রুহুল আলম চৌধুরী ও সিনিয়র যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবির রিজভ’র বঙ্গভবনে যাওয়ার খবরে ওই গুঞ্জন আরও ডাল-পালা মেলে। অথচ স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় সিঙ্গাপুর যাচ্ছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। সুতরাং রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বিএনপি নেতাদের দেখা হওয়ার কোনো সম্ভবনা নেই।
উল্লেক্ষ্য, নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন ও কাঠামো সম্পর্কে গত ১৮ নভেম্বর শুক্রবার আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব উপস্থাপন করেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।
খালেদা জিয়া তাঁর প্রস্তাবে বলেন, সব দলের সাথে আলোচনা করে দল নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। ” সব দলের ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন গঠন হবে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্য কমিশনারদের যোগ্যতা ও মনোনয়ন প্রশ্নে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল কিংবা স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত সব সংসদে প্রতিনিধিত্ব করেছে এমন দলগুলো নিয়ে আলোচনা অব্যাহত রাখতে হবে।” আর সব দলের মতামতের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন গঠনের যে বাছাই কমিটি গঠন করা হবে সেটিও ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে গঠন করার প্রস্তাব দেন তিনি।
“রাষ্ট্রপতি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল কিংবা স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত সব সংসদে প্রতিনিধিত্ব করেছে এমন দলের ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে একটি বাছাই কমিটি গঠন করবেন। রাষ্ট্রপতি সর্বজনশ্রদ্ধেয়, প্রাজ্ঞ, অভিজ্ঞ ও নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের নিয়ে পাঁচ সদস্যের একটি বাছাই কমিটি গঠন করবেন।”
খালেদা জিয়া তাঁর প্রস্তাবনায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্য কমিশনারদের যোগ্যতা, নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করতে গণ প্রতিনিধিত্ব আদেশ বা আরপিওসহ নির্বাচনী বিধি বিধান সংস্কারসহ নানা প্রস্তাবের মধ্যে পাশাপাশি, নির্বাচনের সময় কমিশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের এবং প্রতিরক্ষাবাহিনীকে বিচারিক ক্ষমতা দেয়ারও দাবি জানিয়েছেন।
“নির্বাচন-কালীন সময়ে প্রতিরক্ষাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে। তাদের ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার দিয়ে ভোটকেন্দ্র ও বিশেষ স্থানগুলোতে মোতায়েনের ব্যবস্থা করবে। এটা ভোটের সাত দিন আগে থেকে ফলপ্রকাশের গেজেট প্রকাশনা পর্যন্ত স্থায়ী হবে। “তবে খালেদা জিয়া এসব প্রস্তাবনা তুলে ধরার পর পরই এক সংবাদ সম্মেলনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন খালেদা জিয়ার প্রস্তাবগুলো হাস্যকর ও অন্তঃসারশূন্য।