নিজস্ব প্রতিবেদক : যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক তেল-গ্যাস কোম্পানি শেভরন কর্পোরেশন বাংলাদেশে থাকা তাদের সকল সম্পদ বিক্রি করতে চাইছে। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দরপতনে বিশ্বব্যাপী লোকসানে পড়েছে কোম্পানিটি। লোকসান কাটিয়ে উঠতে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে থাকা তাদের সম্পদ বিক্রির চেষ্টা করছে শেভরন।
অবশ্য বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই তেল-গ্যাস কোম্পানি জানিয়েছে, বাংলাদেশে তাদের সম্পদ বিক্রির বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘যদি সম্পদের ভালো দাম পাই, তবেই কেবল আমরা অগ্রসর হতে পারি।’
তবে এর আগে মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক কোম্পানি সান র্যামন শেভরনের গ্যাসসম্পদ বিক্রিতে সহযোগিতা করছে। ২০১৭ সালের মধ্যে তারা বিভিন্ন দেশে থাকা শেভরনের এক হাজার কোটি ডলার মূল্যের সম্পদ বিক্রির লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে।
ব্লুমবার্গ-এর দাবি অনুযায়ী, ওই বিভিন্ন দেশের মধ্যে বাংলাদেশও রয়েছে।
প্রতিবেদনে ওই সংবাদমাধ্যম জানায়,গত এক দশকের মধ্যে জ্বালানি তেলের দরপতনের ফলে তেল-গ্যাস কম্পানিগুলো এ বছর তাদের ৫০ বিলিয়ন ডলারের সম্পদ বিক্রির ঘোষণা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের তেল-গ্যাস কম্পানিগুলোর মধ্যে ইক্সন মবিল করপোরেশনের পর সবচেয়ে বড় কোম্পানি শেভরন।
শেভরন এশিয়ায় থাকা তাদের সম্পদ বিক্রি করে তিন বিলিয়ন ডলার পাওয়ার চেষ্টা করছে। এর মধ্যে বাংলাদেশে থাকা গ্যাসসম্পদ ছাড়াও ইন্দোনেশিয়া ও থাইল্যান্ডে থাকা সম্পদও বিক্রি করতে আগ্রহী কোম্পানিটি।
তেলের দরপতনের ফলে চলতি বছরের জুলাইয়ে সবচেয়ে বড় আর্থিক সংকটে পড়ে শেভরন। ২০০১ সালের পর এর আগে এমন লোকসানের মুখে পড়তে হয়নি কোম্পানিটিকে।
শেভরন-এর ওয়েবসাইটের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, বাংলাদেশের তিনটি গ্যাসক্ষেত্রে বিনিয়োগ রয়েছে শেভরনের। ক্ষেত্রগুলো থেকে উত্তোলিত গ্যাসের একটি অংশের মালিক তারা, যা সরকার নির্ধারিত মূল্যে কিনে নেয়।
আর্থিক সংকট কাটাতে শেভরন বাংলাদেশে থাকা তাদের প্রায় ২০০ কোটি (দুই বিলিয়ন) ডলার মূল্যের গ্যাসসম্পদ বিক্রি করতে চাইছে। ভারত ও চীনের কিছু তেল উত্পাদনকারী প্রতিষ্ঠান তা কেনার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশে শেভরন-এর এক কর্মকর্তা রয়টার্স-কে বলেছেন, ‘বাংলাদেশে শেভরনের সম্পদ বিক্রির বিষয়ে আমাদের সদর দফতরে উচ্চপর্যায়ের আলোচনা হচ্ছে। আমাদের কাছে এ বিষয়ক তেমন কোনও তথ্য নেই।’