সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : সাতক্ষীরার শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনামুল হককে প্রত্যাহার (ক্লোজ) করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে সরকারের এক আদেশে তাঁকে প্রত্যাহার করা হয়।
সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার আলতাফ হোসেন বলেন, সরকারের আদেশে তাঁকে ক্লোজ করা হয়েছে। এ ছাড়া ওসি হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে একই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) মো. মহসীন আলীর ওপর।
গত বছরের ১২ মার্চ এনামুল হক ওসি হিসেবে শ্যামনগর থানায় যোগদান করেন।
গত ১১ সেপ্টেম্বর রাতে শ্যামনগর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. শম্পা রানীকে তাঁর সহকর্মী ডা. আরিফুল ইসলাম পলাশের বাসা থেকে অসামাজিক কাজের অভিযোগে আটক করেন তিনি। এ সময় ডা. শম্পা ও ডা. পলাশকে আপত্তিকর অবস্থায় রেখে ছবিতে পোজ দিতে বাধ্য করেন ওসি বলে অভিযোগ ওঠে। পরে তা ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। রাতে তাঁদের থানায় নিয়ে যাওয়া হলেও মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। এসব ঘটনায় ওসি এনামুল হক তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন।
ডা. শম্পাকে নির্দোষ দাবি করে তাঁর বাবা নগেন্দ্রনাথ সরকার সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, তাঁর মেয়ে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের শিকার। গত ১৪ আগস্ট স্বাস্থ্য সমন্বয় কমিটির সভায় তিনি রাজনৈতিক হুমকির মুখে পড়েন। ওসি সে বিষয়টি কাজে লাগান বলে জানান তিনি। এরপর ২৮ আগস্ট শ্যামনগর হাসপাতালে এক শিশুর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ডা. শম্পাকে ছাত্রলীগের কয়েক সদস্য মারধর করেন। এ ঘটনার প্রতিবাদে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) আলটিমেটামে শ্যামনগর কলেজ ছাত্রলীগের নেতা আবদুস সবুর, জয় মণ্ডল ও রহমত গ্রেপ্তার হন।
এদিকে, চিকিৎসকদের হয়রানিমূলকভাবে আটক, ছবিতে পোজ দিতে বাধ্য করা এবং থানায় নিয়ে যাওয়ার প্রতিবাদ জানায় বিএমএ। এরপর বিএমএ খুলনা বিভাগীয় শাখা এবং সাতক্ষীরা জেলা বিএমএ ডা. শম্পাকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে আটকের নিন্দা জানায়। রোববার এ দুটি সংগঠন খুলনা ও সাতক্ষীরায় পৃথক প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন করে শ্যামনগর থানার ওসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানায়।