বিনোদন ডেস্ক: ভাগ্যের খেলায় আজকের রাজা কালকে ফকির হয়ে যান। বলিউড তারকারাও কখনও কখনও ভাগ্যের সেই নির্মম পরিহাসের শিকার হয়েছেন। তেমনই এক বলিউড তারকা হলেন নায়িকা প্রীতি জিন্টা। ‘কাল হো না হো’, ‘কোই মিল গয়া’, কিংবা ‘দিল চাহতা হ্যায়’ মিলিয়ে প্রীতির হিট সিনেমার সংখ্যা নেহাত কম নয়। কিন্তু এক কালের এই জনপ্রিয় নায়িকাই এক সময় ভাগ্যের পরিহাসে সর্বস্বান্ত হতে বসেছিলেন।
২০০০-এর দশকের শুরুটা প্রীতির পক্ষে বেশ ভালই হয়েছিল। ২০০৬ পর্যন্ত তাঁর বলিউড জীবন যথেষ্ট সফল ভাবেই কেটেছিল। ২০০৬ সালেই রিলিজ করে ‘কভি অলবিদা না ক্যাহনা’, যা প্রীতির অভিনেত্রী জীবনের সবচেয়ে হিট ছবি। কিন্তু ২০০৭ সাল থেকেই ঘুরতে থাকে প্রীতির ভাগ্যের চাকা। ‘জান-এ-মন’ কিংবা ‘ঝুম বরাবর ঝুম’-এর মতো সিনেমা একেবারেই সাফল্য পায়নি। তারপর নিজেকে অন্য ধাঁচে গড়ে নেওয়ার চেষ্টা শুরু করেন প্রীতি।-এবেলা।
পরিকল্পনা করেন বাণিজ্যিক ছবি ছেড়ে অন্য ধারার ছবিতে অভিনয় করবেন। ঋতুপর্ণ ঘোষের ‘লাস্ট লিয়র’ ছবিতে অভিনয়ের সুযোগও পান। কিন্তু সেই ছবি বানিজ্যিক সাফল্য তো পেলই না, সমালোচকদের প্রশংসাও অর্জন করতে পারেনি। এরপর থেকেই অভিনয় ছাড়াও অন্যান্য কাজকর্মে নিজেকে লিপ্ত করার চেষ্টা শুরু করেন প্রীতি। কিছুদিন কলাম রাইটার হিসেবেও কাজ করেন। কিছুদিন কাজ করেন নানা স্টেজ শো-এ। তারপরে ২০০৮ সালে তিনি হন আইপিএল টিম কিংগস ইলেভেন পঞ্জাবের মালকিন। এরপর থেকে তাঁর আর্থিক অবনতি তরান্বিত হয়। পঞ্জাব-এর টিম থেকে যে পরিমাণ আয় করবেন ভেবেছিলেন প্রীতি, তার সিকি পরিমাণও উপার্জন করতে পারেননি তিনি।
এরপর ২০১২ সালে প্রীতি নিজের পায়ে কুড়ুলটি মারেন। নিজের সর্বস্ব একত্র করে ‘ইশক ইন প্যারিস’ নামের একটি ফিল্ম প্রযোজনা করেন তিনি। রেহান মালিক নামের এক টিভি অভিনেতা ছিলেন সেই ছবির নায়ক, আর ৩৭ বছর বয়সি প্রীতি ছিলেন নায়িকা। সেই ছবি বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়ে। আর তারপরেই একেবারে দেউলিয়া হওয়ার অবস্থা হয় প্রীতির। ‘ইশক ইন প্যারিস’-এর সংলাপ রচয়িতা আব্বাস টায়ারওয়ালা নিজের প্রাপ্য পারিশ্রমিক না পেয়ে থানায় অভিযোগ করেন প্রীতির নামে। এমনকী প্রীতির সই করা ১৯ লাখ টাকার একটি চেকও বাউন্স করে। সর্বনাশের একেবারে কিনারে এসে দাঁড়ান প্রীতি।
তখনই প্রীতির দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন সলমন খান। এর আগে ‘জান-এ-মন’ কিংবা ‘চোরি চোরি চুপকে চুপকে’-র মতো ছবিতে একসঙ্গে কাজ করেছিলেন দু’জনে। তখন থেকেই প্রীতির সঙ্গে ভাল সম্পর্ক ছিল সালমানের। সেই সালমানই বিপদের দিনে প্রীতির পাশে এসে দাঁড়ান। পরে প্রীতি নিজেই জানিয়েছেন সালমানের এই সুন্দর ব্যবহারের কথা। যদিও সলমন ঠিক কীভাবে সাহায্য করেছিলেন প্রীতিকে তা বলেননি প্রীতি, বলেননি যে সালমানের সাহায্য তিনি আদৌ নিয়েছিলেন কি না। তবে বলিউডের অন্দরমহলে কান পাতলে শোনা যায়, বেশ মোটা অঙ্কের আর্থিক সাহায্যই প্রীতিকে করেছিলেন সালমান।
এমনিতে বলিউডে সলমনের খ্যাতি রয়েছে পরোপকারী ও ভাল মনের মানুষ হিসেবে। প্রীতির দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা সালমানের সেই গুণকেই প্রমাণ করে।