নিউজ ডেস্ক : নিজের এবং সন্তানদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত আলোচিত পুলিশ কর্মকর্তা এসপি বাবুল আক্তার। তার পদত্যাগ করার বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মন্তব্যের পর নিজের ও সন্তানদের নিরাপত্তা নিয়ে ঘনিষ্ঠজনদের সঙ্গে আলাপ করেছেন তিনি। কারণ চট্টগ্রামে দায়িত্ব পালনকালে জঙ্গি, মাদক ব্যবসায়ী এবং অপরাধ দমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন বাবুল আক্তার। তাই শত্রুর তালিকাও হয়েছে বেশ দীর্ঘ। বাবুল আক্তার ও তার নিকটাত্মীয়দের দাবি, ওই শত্রুরাই বাবুল আক্তার ও তার সন্ত্রানদের বড় ধরনের ক্ষতি করতে পারে। বাবুল আক্তারের শাশুড়ি সাহিদা মোশাররফ বলেন, ‘বাবুল আক্তার দায়িত্ব পালনকালে জঙ্গি দমন ও অন্যান্য অপরাধ দমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
এখন তার যদি চাকরি না থাকে তাহলে অতীতে বাবুল যাদের বিরুদ্ধে অ্যাকশনে গিয়েছেন তারাই বাবুলের ক্ষতি করবে। আমরা বাবুল আক্তার ও তার দুই সন্তানের নিরাপত্তা নিয়ে খুবই শঙ্কিত। নিরাপত্তার বিষয়ে বাবুল আক্তার খুবই চিন্তিত।’ জানা যায়, স্ত্রী খুনের পর থেকেই সন্তানদের নিয়ে ঢাকার রামপুরা শ্বশুরের বাসায় অবস্থান করছেন এসপি বাবুল আক্তার। গত ২৪ জুন রাতে ঢাকার শ্বশুরবাড়ি থেকে বাবুল আক্তারকে ডিবি অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। ১৫ ঘণ্টা পর ফের তাকে বাসায় পৌঁছে দেওয়া হয়।
এরপর থেকে স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু ‘হত্যা’র পেছনে বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততা থাকার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের মধ্য থেকে। যদিও এ বিষয়ে কেউ আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ না তুললেও এর পরই তার শ্বশুরের বাসা থেকে নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকা পুলিশ সদস্যদের প্রত্যাহার করা হয়। ৩ আগস্ট বাবুল আক্তার পুলিশ হেডকোয়ার্টারে গিয়ে যোগদান প্রতিবেদন দাখিল করে বিলম্বের কারণ ব্যাখ্যা করেন। যদিও এ প্রতিবেদনের বিষয়ে পুলিশ সদর দফতরের কেউ মতামত দেননি বলে জানা যায়। ফলে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও চাকরিতে যোগ দিতে পারেনি বাবুল আক্তার। গত ১৩ আগস্ট স্ত্রীকে নিয়ে বিভিন্ন স্মৃতিচারণ করে এবং দুই সন্তান নিয়ে বেদনাদায়ক একটি স্ট্যাটাস দেন বাবুল আক্তার।
ওই স্ট্যাটাস নিয়ে তোলপাড় শুরু হয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে। স্ট্যাটাস দেওয়ার পরই বাবুল আক্তার পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, বাবুল আক্তারের চাকরিতে যোগদানের আর কোনো সুযোগ নেই। কারণ তিনি পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করেছেন। তিনি এই স্বাক্ষর দেন ২৪ জুন শুক্রবার। এরই মধ্যে তার পদত্যাগপত্র কার্যকরের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
এদিকে বাবুল আক্তারের চাকরিতে ফেরা না ফেরা নিয়ে পুলিশের মধ্যেই পক্ষ-বিপক্ষ তৈরি হয়েছে। পুলিশের একটি অংশ চাইছে দ্রুত সময়ের মধ্যে বাবুল আক্তারের দেওয়া পদত্যাগপত্র কার্যকর হোক। অপর অংশ চাইছে বাবুল আক্তারকে পুনরায় স্বপদে ফিরিয়ে অপরাধ দমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখুক। প্রসঙ্গত, গত ৫ জুন নগরীর জিইসির মোড় এলাকায় ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তদের হাতে খুন হন এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু। এ ঘটনার পর বাবুল আক্তার বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা করেন।
পুলিশ এ পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে গ্রেফতার করে। এ ছাড়া গত ৫ জুলাই পুলিশের কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন রাশেদ ও নবী। কিলিং মিশনে অংশ নেওয়া মুছা ও কালু এখনো পুলিশি খাতায় ‘পলাতক’ রয়েছে। তবে মুছার পরিবারের দাবি, প্রশাসনের লোকজন তাকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে গেছে। সূত্র: বিডি-প্রতিদিন