নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী : ‘আনসার রাজশাহী’ নামে রাজশাহীতে নতুন একটি জঙ্গি সংগঠনের সন্ধান পেয়েছে পুলিশ।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় রাজশাহীর পুলিশ সুপারের (এসপি) কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি জানিয়েছেন এসপি মোয়াজ্জেম হোসেন।
তিনি বলেন, ‘রাজশাহী জেলা সদর ও বাগমারার কিছু যুবক আনসার রাজশাহী নামে একটি জঙ্গি সংগঠন তৈরি করেছে। তারা টার্গেটকৃত মানুষকে হত্যা করে বাংলাদেশকে ইসলামী শরীয়াহ ভিত্তিক রাষ্ট্রে পরিণত করার মিশন নিয়ে কাজ করছে।’
এসপি মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ঐ সংগঠনের কর্মীরা একজন ব্যক্তিকে হত্যার পরিকল্পনা করে। এমন খবর পেয়ে আমিনুল ইসলাম ওরফে রুমি (২৩) ও এনামুল হক ওরফে সবুজ (২২) দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের বাড়ি রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার শ্রীপুর খামারপাড়া গ্রামে। রুমির বাবার নাম সাইফুল ইসলাম ওরফে টিপু। সবুজের বাবার নাম আবদুর রাজ্জাক। তারা দুজনই এইচএসসি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে। রুমি বাগমারা ডিগ্রি কলেজ থেকে আর সবুজ রাজশাহী কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেছে।’
সোমবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে রুমিকে তার বাড়ি থেকে এবং রাত সাড়ে তিনটার দিকে সবুজকে বাগমারার রামগুইয়া গ্রামের একটি কলাবাগান থেকে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি দল গ্রেপ্তার করে।এসপি মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করে সংগঠনকে শক্তিশালী করতে গ্রেপ্তারকৃতরা প্রযুক্তির ব্যবহার করতো। এ জন্য তারা ফেসবুকের পাশাপাশি ‘থ্রিমা’ নামে একটি সফটওয়্যার ব্যবহার করতো। গ্রেপ্তারের পর তাদের দুজনের স্মার্টফোনেই থ্রিমা সফটওয়্যারটি ইন্সটল পাওয়া যায়।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আনসার রাজশাহীর আরো তিন সদস্যর নাম জানা গেছে। তারা হলো- বাগমারার খামারপাড়া গ্রামের আবদুল হাকিম মাস্টারের ছেলে শরিফুল ইসলাম ওরফে খালিদ ওরফে রাহাত ওরফে তালহা(২৪), পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার পাড়ভাঙ্গুড়া গ্রামের রবিউল করিমের ছেলে রওশন আলী ওরফে আকাশ (২৪) এবং বুলবুল ওরফে আলামিন ওরফে বিল্লাল (২৬)। বিল্লাল সম্পর্কে বিস্তারিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
এসপি জানান, বাগমারা থানায় রুমি ও সবুজের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলা করা হয়েছে। মামলায় আনসার রাজশাহীর সদস্য হিসেবে শনাক্ত হওয়া মোট ছয় জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
এ ছাড়া অজ্ঞাত আরো ৩০-৩৫ জনকে এ মামলায় আসামি করা হয়েছে। রুমি ও সবুজকে মঙ্গলবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তারা তাদের সব অপরাধ ও পরিকল্পনার কথা স্বীকার করেছে বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেছেন এসপি মোয়াজ্জেম হোসেন।
সংবাদ সম্মেলনে এসপি ছাড়াও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর হোসেনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।