ভারতকে অজুহাত খুঁজতে না করলেন জর্জ বেইলি
---
স্পোর্টস ডেস্ক : অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ ১৪৯ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেছেন, সঙ্গে সেঞ্চুরি করেছেন পার্শ্ব নায়ক জর্জ বেইলিও। এই দুজনের কাছেই কাল ম্লান হয়ে গেছে ভারত। সেটি মেনে নিয়েও ভারতের একটা ‘ইশ, এমন হলে কী হতো…’ আফসোস রয়ে গেছে। ১১২ রানের ইনিংস খেলা বেইলি যে প্রথম বলে শূন্য রানেই আউট হতে পারতেন!
বারিন্দর স্রানের বলটা উইকেটের পেছনে মহেন্দ্র সিং ধোনির হাতে যাওয়ার আগে মাত্রই ক্রিজে আসা বেইলির গ্লাভস ছুঁয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ধোনিও ঠিকমতো আবেদন করেননি, আর আম্পায়ারও সম্ভবত আউট হয়েছে কিনা পরিষ্কার বুঝতে পারেননি। আর ডিসিশন রিভিউ সিস্টেমও (ডিআরএস) ছিল না যে আরেকবার পরীক্ষা করে দেখবে ধোনিরা। অবশ্য একেবারে ‘নিখুঁত’ না হওয়ার আগে ভারতের কোনো সিরিজে ডিআরএস থাকবে না—এটা তো ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) পুরোনো সিদ্ধান্তই।
শুনতে হয়তো একটু অন্যরকম লাগবে, এত দিন ধরে উপেক্ষা করে আসা ডিআরএসের অভাবটাই কাল বেশি বোধ করেছে ভারত। তবে ধোনিদের একটা পরামর্শ দিয়েছেন বেইলি, ডিআরএস না-থাকাটাকেই যেন এখন অজুহাত হিসেবে না দেখা হয়। তা দেখছে না ভারত। বরং এই ম্যাচে হারের পরও এখনো ডিআরএসের ব্যাপারে নিজেদের অবস্থানে অনড় ধোনিরা।
ভারত অজুহাত হিসেবে দেখুক আর না দেখুক, ডিআরএসের গুরুত্ব মেনে নিক আর না নিক, এটা ঠিক, বেইলি ওই সময়ে আউট হয়ে গেলে ম্যাচের গল্পটা অন্যরকম হতেও পারত। ৩১০ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে পাঁচ ওভারের মধ্যেই দুই ওপেনারকে হারিয়ে ফেলেছিল অস্ট্রেলিয়া, ২১ রানের মধ্যে। সেটি ৩ উইকেটে ২১ হয়ে গেলে রান তাড়া করা ও দ্রুত উইকেট হারানোর দ্বিমুখী মানসিক চাপে পড়ে যেত অস্ট্রেলিয়া।
তবে কী হতে পারত, না হতে পারত—এসব ভাবা বাতুলতা। মূল ব্যাপার হচ্ছে, ম্যাচ শেষ, আর তাতে জয়ী দলটির নাম অস্ট্রেলিয়া। আর যেহেতু বিসিসিআইয়েরই কারণে সিরিজে ডিআরএস নেই, সেটি মনে করিয়ে দিয়ে বেইলি একটু খোঁচাই দিলেন ভারতকে, ‘ডিআরএসে আমার আউটের ব্যাপারটি আরেকবার দেখতে পারলে ভালো হতো সন্দেহ নেই। তবে এই সিরিজে যে ডিআরএস থাকছে না, তার দোষ তো আর আমাদের নয়।’
ম্যাচ শেষ হওয়ার পর কাল ধোনিকেও কথা বলতে হলো এই ডিআরএস থাকা-না থাকা নিয়ে। বেইলির কথার সূত্র ধরেই ভারত অধিনায়ককে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল ডিআরএস না থাকা নিয়ে কোনো আক্ষেপ আছে কি না। এমন প্রশ্নের উত্তরে সাংবাদিকদের পাল্টা প্রশ্ন ছুড়লেন ধোনি, ‘আপনারা কি ঘুরিয়ে ফিরিয়ে এটাই বলতে চাচ্ছেন যে ডিআরএস না থাকার কারণে আমরা এসব সিদ্ধান্ত নিজেদের পক্ষে পাচ্ছি না?’
জবাবে সাংবাদিকদের কাছ থেকে ‘না’ শোনার পর নিজেই আবার বললেন, ডিআরএসে ‘আম্পায়ারস কল’ থাকার কারণে আসলে সেটি অনেক সময় আম্পায়ারের মাঠের সিদ্ধান্তই হয়ে দাঁড়ায়। আর বেইলির সিদ্ধান্তটা ম্যাচের ফলে প্রভাব রাখত কি না এই প্রশ্নে ভারত অধিনায়ক বললেন, ‘হয়তো রাখত, তবে একই সঙ্গে আমাদেরও উচিত ছিল আম্পায়ারকে সঠিক সিদ্ধান্তটি দিতে আরও একটু জোরে আবেদন করা। অনেকগুলো ৫০-৫০ সিদ্ধান্তই তো আমাদের পক্ষে আসেনি। অনেক সময়ই এমন হয়, এটিকে তাই মেনে নিতেই হবে। কিন্তু এখনো ডিআরএসের বিষয়ে আমি নিশ্চিত নই।’
তবে ডিআরএস ব্যবহার না করার কারণে বারবার ভারত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কি না—এমন প্রশ্নে কিছুটা যেন থমকে গেলেন ধোনি। ‘আপনাদের সঙ্গে একমত হতেও পারি, না-ও হতে পারি। ব্যাপারটা…’ – বাক্যটা শেষ করেননি ধোনি। তথ্যসূত্র: এএফপি।