লন্ডনের ব্যস্ত রাস্তায় স্বেচ্ছায় বিবস্ত্র হচ্ছে তরুণী!
---
লন্ডনের ব্যস্ত রাস্তায় একটা একটা করে নিজের জামাকাপড় খুলে ফেলছেন এক তরুণী। এই দৃশ্য তাজ্জব করেছিল পথচলা মানুষকে। ব্যাপারটা পরিস্কার হল কিছুক্ষণ পর। জনতার কাছে একটা আবেদন নিয়ে হাজির ওই তরুণী। তাঁর শরীরে ভালোবাসার প্রতীক এঁকে দিতে বলছেন। এই আবেদন তাঁদের প্রতিই, যাঁরা তাঁরই মত।
একটু খোলসা করে বলা যাক। অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস জে ওয়েস্ট নামে এই তরুণীর। শারীরের ওজনও খানিক কম। কিন্তু, তাই বলে কোনাে স্বপ্নের নায়িকার মত হওয়ার কোনাে মোহ কাজ করে না জে-র মধ্যে। তিনি খুশি নিজেতেই। যেমনই হোক, নিজের শরীরটাই তাঁর কাছে সবচেয়ে সুন্দর। তাঁর এই মতাদর্শে যাঁদের সমর্থন রয়েছে, তাঁদের প্রতি একটা আবেদন প্ল্যাকার্ডে লিখে বিবস্ত্র হয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়েছিলেন জে। 'যাঁরা আমায় সমর্থন করেন, তাঁরা আমার শরীরে ভালোবাসার প্রতীক এঁকে দিন', প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল এরকমটাই। জে-র এই সাহসী পদক্ষেপের ভিডিও ইতোমধ্যেই ভাইরাল হয়ে গেছে। নিজের শরীর, নিজের খুঁত, ত্রুটি নিজের যাবতীয় বিষয়কে সেলিব্রেট করা এবং অন্যদেরও এই কাজ করতে অনুপ্রাণিত করার ভাবনা এসেছিল জে-র মাথায়। এই ভাবনায় পুষ্টি জোগায় ২০১২ সালের সেন্টার ফর অ্যাপিয়ারেন্স রিসার্চের দেওয়া একটি পরিসংখ্যান। যেখানে বলা হয়েছিল, ৬০% প্রাপ্তবয়স্কই নিজের লুক নিয়ে লজ্জিত বোধ করেন।
এই পরিসংখ্যানের জন্য অবশ্যই দায়ী নিত্যদিন আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠা বিভিন্ন বিজ্ঞাপন। যেখানে সব সময় বলা হচ্ছে – এরকম চেহারা তৈরি করুন, এরকম ব্যক্তিত্ব তৈরি করুন, জিরো ফিগার করুন…ব্লা ব্লা ব্লা। এসবেরই চরম বিরোধী জে একটি সামাজিক গবেষণা চালাতে এই পদক্ষেপ করেছেন। জে তাঁর ব্লগে লিখেছেন, আমান্দা পালমেরের TED Talk দেখে এভাবে নিজের পরিকল্পনা রূপায়ণের বিষয়টি তাঁর মাথায় আসে। ওই অনুষ্ঠানে পালমের জামাকাপড় খুলে তাঁর ভক্তদের বলেছিলেন, তাঁর শরীরে লিখতে। জে লিখেছেন, 'শুয়ে শুয়ে আমি যখন ভাবছিলাম, আমার সারা শরীর ঢাকা পড়েছে অন্যের আঁকা ভালোবাসার হৃদয়ে, তখন আমার চোখে পানি এসে গিয়েছিল।' এই ভিডিও প্রত্যেকটা মানুষের আত্মবিশ্বাস কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেবে বলে মনে করেন জে ওয়েস্ট।