আইএসমুক্ত নিরাপদ এলাকা প্রতিষ্ঠায় সিরিয়ার বিদ্রোহী গ্রুপের সমর্থন
---
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশারবিরোধী শক্তিশালী ইসলামপন্থী গ্রুপ আহরার আল শাম ইসলামিক স্টেট (আইএস) মুক্ত একটি নিরাপদ সীমান্ত এলাকা প্রতিষ্ঠার মাকির্ন-তুর্কি যৌথ পরিকল্পনাকে সমর্থন করেছে। তারা বলেছে, সিরিয়ার জনগণের স্বার্থে উত্তরাঞ্চলীয় আলেপ্পোর সাথে তুরস্ক সীমান্ত বরাবর এ ধরনের এলাকা প্রতিষ্ঠা করা হবে। খবর এএফপি। গ্রুপের এক অনলাইন বিবৃতিতে বলা হয়, মানবিক, সামরিক ও রাজনৈতিক দিক দিয়ে পরিকল্পিত নিরাপদ এলাকার ইতিবাচক প্রভাব পরিলক্ষিত হবে।আহরার আল শাম সিরিয়ার বাশারবিরোধী উপদলগুলোর এক প্রধান সমর্থক তুরস্ককে তাদের বিপ্লবের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মিত্র হিসেবে আখ্যায়িত করে। গ্রুপটি বলে, চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা ও সিরিয়ার ভবিষ্যৎ গঠনে যুক্তরাষ্ট্র ও তুরস্কের মধ্যে কৌশলগত সম্পর্ক প্রয়োজন। সিরিয়ার বাশারবিরোধী জোটে আহরার আল শাম ও আল নুসরা ফ্রন্ট দু’টিই শক্তিশালী গ্রুপ। সরকারি বাহিনীর কাছ থেকে তারা ইদলিব প্রদেশের বিরাট এলাকা দখল করেছে। তুরস্কে সীমান্তে নিরাপদ এলাকা প্রতিষ্ঠার প্রতি আহরার আল শামের সমর্থনের ফলে আল নুসরার সাথে সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে। আল নুসরা এ পরিকল্পনার বিরোধিতা করেছে। তারা বলেছে, মার্কিন-তুর্কি পরিকল্পনায় সহায়তা পরিহার করতে তারা আইএসের বিরুদ্ধে রণাঙ্গন থেকে তার যোদ্ধাদের প্রত্যাহার করবে। তা ছাড়া যে সব বিদ্রোহী গ্রুপ নিরাপদ এলাকা বাস্তবায়ন করবে তাদের সাথে তারা সহযোগিতা করবে না। আঙ্কারা আশা করছে যে, নিরাপদ এলাকা বাস্তবায়ন হলে তুরস্কে আশ্রয় গ্রহণকারী ১৮ লাখ সিরীয় উদ্বাস্তুকে সেখানে পুনর্বাসন করতে পারবে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে কোন বিদ্রোহী গ্রুপগুলো নিরাপদ এলাকা বাস্তবায়নের দায়িত্ব নেবে। সিরিয়া বিশেষজ্ঞ এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক টমাস পিয়েরেট বলেন, তুরস্কের জন্য আহরার আল শাম যোগ্য, অনুগত ও দায়িত্বশীল সহযোগী। তাদের মধ্যে সবসময়ই সম্পর্ক ভালো ছিল। তুরস্কের মিত্র সকল গ্রুপের মধ্যে আহরার এখন সবচেয়ে শক্তিশালী। তবে তাদের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে জটিলতা দেখা দিতে পারে, কারণ যুক্তরাষ্ট্র যাদের উদার বলে মনে করে তাদেরই শুধু সমর্থন করে।উল্লেখ্য, আইএসের বিরুদ্ধে মার্কিন বিমান হামলার প্রথম দিকে আহরার আল শামের উপরও হামলা হয়। তবে পরে আর হয়নি।২৫ বিদ্রোহী নিহতসিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস মঙ্গলবার জানায়, আলেপ্পো প্রদেশে আইএস যোদ্ধাদের হামলায় সোমবার দিবাগত রাতে ২৫ জন সিরীয় বিদ্রোহী নিহত হয়েছে। বিদ্রোহীদের গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি মারিয়াতে এ ঘটনা ঘটে। আলেপ্পোগামী একটি সড়কের পাশে ও তুরস্ক সীমান্তে শহরটি অবস্থিত। এ সময় ৪ জন আত্মঘাতী হামলাকারীসহ ৮ আইএস যোদ্ধা নিহত হয়।আইএস যোদ্ধারা রোববার আলেপ্পো প্রদেশে তুরস্ক থেকে বাশারবিরোধী বিদ্রোহীদের একটি সরবরাহ পথের উপর অবস্থিত ৪টি গ্রামের একটি উম্ম হুঁশ সম্পূর্ণ দখল করে নিয়েছে। কুর্দিদের ওপর বিমান হামলারয়টার্স জানায়, কুর্দি বিদ্রোহীরা ইস্তাম্বুলে সোমবার একটি থানায় বোমা হামলা চালানোর দায়িত্ব স্বীকারের পর তুর্কি জঙ্গি বিমানগুলো সোম ও মঙ্গলবার দেশের দক্ষিণ-পূর্বে হাক্কারি প্রদেশে কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির (পিকেকে) অবস্থানগুলোতে বিমান হামলা চালিয়েছে। এ হামলায় ৩ জন আক্রমণকারীসহ ৪ জন নিহত হয়। পি কে কে তাদের ৩ যোদ্ধা নিহত হওয়ার কথা স্বীকার করেছে। প্রেসিডেন্ট এরদোগান মঙ্গলবার বলেন, আমাদের সীমান্তের মধ্যে একজন সন্ত্রাসী থাকা পর্যন্ত এবং তাদের ওপর পূর্ণ আঘাত না করা পর্যন্ত আমাদের লড়াই চলতে থাকবে।তুর্কি নিরাপত্তা বাহিনী জানায়, পি কে কে সিরনাক প্রদেশে একটি সামরিক স্টেশনে হামলা চালায়। ২০ মিনিট লড়াই চলে এবং ১ জন সৈন্য নিহত হয়। পি কে কে’র দু’টি মেশিনগান স্তব্ধ করার জন্য তুর্কি জঙ্গি বিমানগুলো হামলা চালায়। বিঙ্গল প্রদেশে সংঘর্ষে একজন পি কে কে যোদ্ধা নিহত হয়।