আল আকসা মসজিদে আগুন
মুসলমানদের তৃতীয় পবিত্রতম স্থান জেরুসালেমে আল-আকসা মসজিদে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের ঐতিহাসিক নটরডেম গির্জায় যে সময় আগুন লাগে প্রায় একই সময়ে আল-আকসা মসজিদে আগুন লাগে। তবে এতে উল্লেখযোগ্য তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলে জানা গেছে।
আল-আকসা মসজিদের গার্ড আন্তার আল-হামাউরির বরাত দিয়ে ওয়াফা নিউজ এজেন্সি জানায়, সোমবার রাতে মারওয়ানি নামাজ কক্ষের বাইরে গার্ডদের রুমে অগ্নিকাণ্ডের ওই ঘটনা ঘটে। জায়গাটি সলোমন’স স্টেবলস নামেও পরিচিত।জেরুসালেমের ইসলামিক ওয়াকফ বিভাগের ফায়ার সার্ভিস বাহিনী দ্রুতই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।কী কারণে ওই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে তা এখনো জানা যায়নি। তবে জেরুসালেম ওয়াকফ এবং আল আকসা মসজিদ বিষয়কবিভাগের মহাব্যবস্থাপক শেখ আজ্জাম আল খতিব বলেন, ওই এলাকায় খেলতে থাকা শিশুদের মাধ্যমে এ আগুনের সূত্রপাত হতে পারে।
খবরে বলা হয়, এ আগুনের কারণে সেখানে অভ্যন্তরীণ কোনো ক্ষতি হয়নি। এতে কোনো হতাহতের ঘটনাও ঘটেনি।এ ঘটনার পর ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস এ ধরনের পরিস্থিতি থেকে এ স্থানটিকে বিশেষভাবে সংরক্ষণের দাবি করে বলেন, এ স্থাপনার ধর্মীয় ও মানবিক মূল্য অনেক বেশি। তাই এ ধরনের ঘটনা থেকে একে রক্ষা করতে হবে।ইসরাইলের আদেশ প্রত্যাখ্যান করে প্রাচীন জেরুসালেমের আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণ খোলার ঘোষণা দিয়েছে ওয়াক্ফ কাউন্সিল। এই মসজিদ মুসলমানদের কাছে অন্যতম প্রধান ধর্মীয় স্থান; কিন্তু গত সোমবার মসজিদ প্রাঙ্গণ বন্ধের আদেশ দেয় ইসরাইলের একটি আদালত।
সাম্প্রতিক সময়ে এই মসজিদ প্রাঙ্গণ ঘিরে পুলিশের সাথে সেখানে নামাজ আদায় করতে আসা ফিলিস্তিনিদের সংঘর্ষ বাধে। কয়েক সপ্তাহ ধরেই এই সংঘর্ষ চলছে। মঙ্গলবার এক জরুরি বৈঠকে ওয়াক্ফ কাউন্সিলের প্রধান শেখ আবদুল আজিম সালহাব ঘোষণা দেন, ‘রহমতের দরজা’ নামে পরিচিত আল-আকসা মসজিদের বাব আল-রাহমা গেটটি মুসলমানদের জন্য খোলা থাকবে। কাউন্সিলের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, বাব আল-রাহমা এবং আল-আকসা মসজিদ-সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ইসরাইলের আদালতের দেয়া কোনো আদেশ মানবে না তারা।
সালহাব বলেন, ওকায়ক্ফ কাউন্সিলকে ভবন সংস্কারের অনুমতি দিতে হবে ইসরাইলকে। একই সাথে পবিত্র প্রাঙ্গণ থেকে ওয়াক্ফ কর্মকর্তা, প্রহরী এবং এখানে নামাজ আদায় করতে আসা লোকজনের প্রবেশে যে নিষেধাজ্ঞা আনা হয়েছে সেই আদেশও প্রত্যাহার করে নিতে হবে। জেরুসালেম-ভিত্তিক ওয়াদি হিলওয়ে ইনফরমেশন সেন্টারের এক রিপোর্ট অনুযায়ী, গত ফেব্রুয়ারিতে আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে ১৩৩ ফিলিস্তিনির প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এদের মধ্যে কাউন্সিল প্রধান সালহাবও ছিলেন। তার ওপর ৪০ দিনের জন্য আল-আকসা মসজিদে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আনা হয়।
এ ছাড়া কাউন্সিলের সহকারী পরিচালক শেখ নাজেহের ওপরও মসজিদ প্রাঙ্গণে প্রবেশে চার মাসের নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারিতে ২২৯ জনকে আটক করে ইসরাইলি পুলিশ। গত মাসে ফিলিস্তিনিরা বাব আল-রাহমা খুলে দেয়ার পর থেকেই জেরুসালেমে উত্তেজনা শুরু হয়। তখন থেকেই ফিলিস্তিনি মুসলিমরা সেখানে অবস্থান নেয়। একটি নিষিদ্ধ সংগঠন ভবনটিকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে ব্যবহার করছে এমন অভিযোগ এনে, ২০০৩ সালে আল-আকসা মসজিদ বন্ধ করে দেয় ইসরাইল।