বিকেল ৫টায় বিজিএমইএ ভবন সিলগালা
অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : রাজধানীর হাতিরঝিলের বিষফোঁড়া নামে পরিচিত বহুতল বিজিএমইএ ভবন থেকে সব মালামাল সরিয়ে নিতে বিকেল ৫টা পর্যন্ত সময় বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এরপর সিলগালা করে দেওয়া হবে বিজিএমইএ ভবন।
মঙ্গলবার বেলা ৩টার দিকে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান রাজউকের প্রধান প্রকৌশলী এ এস এম রায়হানুল ফেরদৌস।
তিনি বলেন, যেহেতু এখানে ব্যাংক রয়েছে ও তাদের ব্যাংকের ভল্টে টাকা রয়েছে, তাই সেগুলো সরিয়ে নিতে ও ভবনে থেকে যাওয়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মালামাল সরিয়ে নিতে আমরা আজ বিকেল ৫টা পর্যন্ত সময় দিয়েছি। মালামাল সরিয়ে নেওয়ার পর সিলগালা করে দেওয়া হবে ভবনটি।
পরবর্তীতে ভবনটির গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানিসহ সব সেবার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হবে।
সেনাবাহিনী ও চিনের এক্সপার্টদের সাথে কথা বলা হচ্ছে, তাদের সহযোগিতায় ডিনামাইট কন্ট্রোল ডিমোলিশন বা নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণ পদ্ধতি ব্যবহার করে ভবনটি ভেঙে ফেলা হবে বলেও জানান তিনি।
এর আগে সকাল ৯টার দিকে ভবন ভাঙার আধুনিক যন্ত্রপাতিসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে ১৬ তলা ওই ভবনে যান রাজউকের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। তখন ভবন থেকে মালামাল সরাতে সংশ্লিষ্টদের দুঘন্টা সময় দেওয়া হয়। পরে তা আরো এক ঘণ্টা বাড়ানো হয়।
এ সময় রাজউকের পরিচালক (প্রশাসন) খন্দকার অলিউর রহমান সাংবাদিকদের জানান, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে বিজিএমইএ ভবনে এসেছেন তারা। ভবনে এখনো দু-একটি অফিস রয়েছে। তাদের মালামাল দ্রুত সরিয়ে নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। এরপর বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার জন্য লোক ডাকা হবে।
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল হাইকোর্ট এক রায়ে হাতিরঝিলে বিজিএমইএ’র ভবন ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেন। সে সময় আদালত এ ভবনকে ‘হাতিরঝিল প্রকল্পে একটি ক্যানসারের মতো’ উল্লেখ করে রায় প্রকাশের ৯০ দিনের মধ্যে তা ভেঙে ফেলতে নির্দেশ দেন।
এর বিরুদ্ধে বিজিএমইএ লিভ টু আপিল করে। কিন্তু ২০১৬ সালের ২ জুন আপিল বিভাগে তা খারিজ হয়ে যায়। তথন রায়ে বলা হয়, ভবনটি নিজ খরচে অবিলম্বে ভাঙতে আবেদনকারীকে (বিজিএমইএ) নির্দেশ দেওয়া যাচ্ছে। এতে ব্যর্থ হলে রায়ের কপি হাতে পাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে রাজউককে ভবনটি ভেঙে ফেলতে নির্দেশ দেওয়া হলো।
পরে ভবন ছাড়ার জন্য উচ্চ আদালতের কাছে সময় চায় বিজিএমইএ। প্রথমে ছয় মাস এবং পরে সাত মাস সময় দেন আদালত। সর্বশেষ গত বছর নতুন করে এক বছর সময় দেওয়া হয় তাদের। সে সময় তারা মুচলেকা দেয় যে, ভবিষ্যতে আর সময় চাওয়া হবে না।
সর্বশেষ ১২ এপ্রিলের মধ্যে ভবনটি সরিয়ে নিতে সময় দিয়েছিলেন আদালত। নির্দিষ্ট সময় পার হওয়ার পর আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়নে নেমেছে রাজউক।