পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় স্মার্টকার্ড নিতে গিয়ে মা-ছেলে নিখোঁজ, অসুস্থ ৫০
বাউফল প্রতিনিধি : পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় স্মার্টকার্র্ড নিতে গিয়ে কমপক্ষে অর্ধশত নারী-পুরুষ অসুস্থ্ হয়ে পড়েছেন। নিখোঁজ রয়েছেন আরও দুজন। এ ছাড়া না খেয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে কার্ড প্রত্যাশীদের।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা ও সংশ্লিষ্টদের উদাসিনতার কারণেই এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে।
অসুস্থদের মধ্যে রাবেয়া বেগম (১৮) ও ফেরদৌসী বেগম (২৭) নামের দুই নারীকে উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। অপরদিকে নিখোঁজ রয়েছেন নুপুর বেগম (৩৫) ও তার তিন বছরের ছেলে ওমর ফারুক।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বাউফল উপজেলার ১৫ ইউনিয়ন ও এক পৌরসভায় বাদ পরা ভোটারদের মধ্যে স্মার্টকার্ড বিতরণের জন্য উপজেলা নির্বাচন অফিস শুক্র ও শনিবার নির্ধারণ করেন। কার্ড বিতরণের ভেন্যু ছিল বাউফল মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়। তাই এ দুদিন স্মার্টকার্ড নিতে বাউফলের লোকজন যারা ঢাকা, চট্রগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বসবাস করছেন তারা এলাকায় যান। গতকাল শুক্রবার প্রথম দিন পৌরসভাসহ আট ইউনিয়ন ও আজ আট ইউনিয়নের বাদ পরা ভোটারদের মধ্যে স্মার্টকার্ড বিতরণ করা হয়।
এই দুদিনে বাদ পরা প্রায় ১০ হাজার মানুষ ভিড় জমায় বাউফল মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে। গতকাল সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত অপেক্ষা করে অধিকাংশ ভোটার স্মার্টকার্ড হাতে না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরে গেছেন। এ ছাড়া স্থানীয় রেস্তোরাঁগুলোতে পর্যাপ্ত খাবার না থাকায় ও প্রচণ্ড গরমে অসুস্থ হয়ে পড়েন কমপক্ষে অর্ধশত নারী-পুরুষ।
উপজেলার দাশপাড়া গ্রামের আবুল কালাম (৫০) নামের এক ব্যক্তি চট্রগ্রাম থেকে উপজেলায় গিয়ে গতকাল সকাল সাড়ে ৭টার দিকে লাইনে দাঁড়িয়ে রাত ১২টা পর্যন্ত অপেক্ষা করে কার্ড না পেয়ে বাড়ি চলে যান। আজ সকাল ৭টায় আবার লাইনে দাঁড়িয়ে দুপুর ১২টার দিকে স্মার্টকার্ড হাতে পান।
অভিযোগ রয়েছে, কার্ড সংগ্রহের জন্য ইউনিয়ন ওয়ারি কোনো বুথ ছিল না। মাত্র একটি বুথ থেকে টোকেন দেওয়া হয়েছে। একটি সূত্রে জানা যায়, কার্ড বিতরণে একটি চক্র হাতিয়ে নিয়েছে হাজার হাজার টাকা। কার্ড প্রতি ২০০ টাকা করে নির্দিষ্ট লোকের কাছে দিলেই পাওয়া গেছে টোকেন। ওই টোকেনের মাধমেই কোনো রকম ভোগান্তি ছাড়া স্মার্টকার্ড মিলেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকা থেকে আসা এক ব্যক্তি জানান, তিনি ২০০ টাকা দিয়ে কার্ডটি নিয়েছেন।
চট্রগ্রাম থেকে আসা অপর এক ব্যক্তি জানান, তিনি কার্ড প্রতি ২০০ করে টাকা দিয়েছেন।
এ ছাড়া কাঙ্ক্ষিত স্মার্টকার্ড হাতে পাওয়ার পর দেখা গেছে নামের বানান ভুল, বাবার নাম ভুল। বয়স সঠিক নেই।
আদাবাড়িয়া ইউনিয়নের আতশখালী গ্রামের আবদুর রব মৃধার স্ত্রী নুপুর বেগম (৩৫) তার তিন বছরের ছেলে ওমর ফারুককে নিয়ে গতকাল সকালে স্মার্টকার্ড নিতে বাড়ি থেকে বাউফল মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে যান। কিন্তু আজ বিকেল পর্যন্ত তিনি বাড়ি ফিরে যাননি বলে তার স্বজনরা জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।